ঢাকা, সোমবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৫

ব্যাংকারদের বিড়ম্বনা

আব্দুল হামিদ সোহাগ

প্রকাশিত : ২০:২৮, ২ এপ্রিল ২০২০ | আপডেট: ২০:৩২, ২ এপ্রিল ২০২০

আব্দুল হামিদ সোহাগ

আব্দুল হামিদ সোহাগ

Ekushey Television Ltd.

গোটা বিশ্বে চলছে করোনা মহামারী। আমাদের দেশেও এর বাইরে নয়। স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে সব কিছুই বন্ধ। কিন্তু ব্যাংক খোলা। মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাংক এখন অপরিবহার্য এক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ভয় আতঙ্ক থাকলেও আমাদেরকে অফিস করতে হচ্ছে। কিন্তু অফিসে এসে প্রতিদিনই সহকর্মীদের মুখে নানা রকম সমস্যার কথা শুনছি।

অর্থাৎ রাস্তায় পুলিশের বাধা কিংবা যানবাহন সংকটের কথা। অনেক পুলিশ কর্মকর্তা শুনতেই রাজী নন ব্যাংক খোলা। তাদের দাবি, গোটা দেশে সব রকমের প্রতিষ্ঠান বন্ধ, শুধু মাত্র ব্যাংক খোলা থাকে কী করে? বিশেষ করে আজ বৃহস্পতিবার রাস্তার পরিস্থিতি একটু বেশি কঠোর ছিল।

গত ৫ কর্ম দিবসে আজই প্রথম পুলিশ সদস্যরা গাড়ি আটকে জানতে চাইলেন, কেন বের হলাম আর কোথায় যাচ্ছি। গেল কয়দিন রাজপথে বাধাহীন চলা আমার ড্রাইভার মশাই চটপট বুক ফুলিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যকে উত্তর দিল, ‘এইডা ব্যাংকের গাড়ি, দেহেন ভালো কইরা, সামনে পিছে স্টিকার আছে।’ এক পুলিশ কর্মকর্তা এগিয়ে বললেন, ‘এত্তো সব দেখার টাইম নাই, গাড়ির কাগজ পত্র দাও।’ আমি গ্লাস নামিয়ে বললাম, ‘আপনি কি জানেন? ব্যাংক খোলা, আর আমি অফিসে যাচ্ছি।’ তিনি বললেন, ‘সব অফিস বন্ধ, আপনার অফিস খোলা কেন?’ অনেকভাবে বুঝিয়ে ব্যাগে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার, আমার পরিচয়পত্র দেখিয়ে ছাড়া পেলাম।

আজ রাস্তায় গাড়ি অনেক কম, তাই সময় করে কাগজপত্র দেখেছেন ঐ কর্মকর্তা। সাধারণ দিনে হলে ড্রাইভারকে নিশ্চিত চড় থাপ্পড় খেতে হতো। আমাকেও আরও হয়রানি করতো আর নিশ্চিত কেস খেতে হতো। এ নিয়ে এতো কথা বলার মানে হলো, যশোরের ঐ এসি ল্যান্ডের (সহকারী কমিশনার-ভূমি) মতো অনেকেই বুঝতে পারছেন না, এ সময় কোনটা করা যাবে আর কোনটা যাবে না।

তবে আজ রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনীর নজরদারি খুব বেশি। তাই গত দুই দিনের চেয়ে আজ রাস্তায় মানুষ ও যানবাহন অনেক কম। আইন সকলের মানা জরুরি। হয়তো আর ১০ দিন লকডাউন রাখলে আর প্রকৃতি অনুকূলে থাকলে করোনার বিষাক্ততা অনেকটা কমে যাবে। নিজেকে এবং অন্যকে ভালো রাখতে জরুরি কাজ ছাড়া নিজ নিজ অবস্থানে থাকাটা এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

আমার মনে হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক যদি ব্যাংক খোলা থাকার বিষয়টি পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে গোটা দেশে জানিয়ে দেয় তাহলে আর সমস্যা হবে না। আবার সংবাদপত্র বা অন্যান্য গণমাধ্যমের মাধ্যমেও বিষয়টি প্রচারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ‘ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন। দেশের এই সংকটকালে আমরা ব্যাংকাররা মানুষের পাশে আছি।’ সবার জন্য শুভ কামনা রইলো। 

লেখক: ব্যাংক কর্মকর্তা। 

এমএস/এসি
 


** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।
Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি