ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

ভারতীয় গরু খামারিদের গলার কাঁটা!

মীর মো. শাহীন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৬:২২, ৫ আগস্ট ২০১৯ | আপডেট: ১৬:২৩, ৫ আগস্ট ২০১৯

পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র ৭ দিন। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন স্থানে পুরোদমে বসবে কোরবানির পশুর হাট। তাই শেষ মুহূর্তে ক্রেতাদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে গরুর প্রতি বাড়তি যত্ন নিচ্ছেন খামারিরা। 

নিয়মিত খাবার যেমন সবুজ ঘাস, খড়, খৈল ও ভুসির পাশাপাশি মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক ওষুধ খাওয়াচ্ছেন কেউ কেউ। তবে বিগত বছরের মতো এবারও খামারিদের জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় গরু। অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আসলে লোকসানের কারণে পথে বসতে হবে বলে জানিয়েছেন খামারিরা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার নয়টি উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১২ শতাধিক খামার রয়েছে। এসব খামারে এক লাখেরও বেশি গরু ও মহিষ পালন করছেন খামারিরা। দেশি জাতের পাশাপাশি বিদেশি জাতের গরু-মহিষও রয়েছে খামারগুলোতে। জেলাবাসী পশু কোরবানির জন্য খামারগুলোতে থাকা গরু-মহিষকে পর্যাপ্ত মনে করলেও ভারতীয় গরু আমদানির কারণে শঙ্কায় খামারিরা। পশুর হাটগুলোতে ভারতীয় গরু উঠলে বিগত বছরের মতো এবারও লোকসানে পড়ার কথা জানিয়েছেন খামারিরা। 

ভারত সীমান্তবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, কসবা ও বিজয়নগর উপজেলা। এ দিন উপজেলার মধ্যে কসবা উপজেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতীয় গরু আমদানি করে থাকে সংঘবদ্ধ চোরাকারবারীরা। সীমান্তে টহলরত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’র (বিজিবি) সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে আমদানি করা হচ্ছে ভারতীয় গরু। আর দেশি গরুর চেয়ে দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় ভারতীয় গরুর দিকে ক্রেতাদের ঝোঁক বেশি থাকে।  

গত বছর শেষ মুহূর্তে পশুর হাটগুলোতে ভারতীয় গরুর আধিক্যের কারণে লোকসান গুণতে হয়েছে অনেক খামারিকে। এবারও হাটে ভারতীয় গরু প্রবেশের শঙ্কায় ভুগছেন খামারিরা। আর এই শঙ্কা সত্যি হলে পথে বসতে হবে খামারিদের। 

আশুগঞ্জ উপজেলার দগিরাসা গ্রামের খামারি শামীম ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি আমার খামারে দেশী জাতের গরু পালন করছি। গরু পালনে ব্যায় আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। গত বছর ভারতীয় গরুর কারণে আমার অনেক লোকসান হয়েছে। তবে এ বছর ভারতীয় গরু না আসলে যে গরুগুলো পালন করছি সেগুলোতে ভালেই লাভ হবে।’ 

দেশের খামারগুলোতে যে পরিমাণ গরু রয়েছে তা দিয়ে কোরবানির পশুর চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মনে করেন লালপুর গ্রামের খামারি মোঃ আব্দুস সাত্তার। তবে এবারও যদি সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আমদানি করা হয় তাহলে তাদের বেশ লোকসান হবে জানিয়ে তিনি বলেন গত বছরও ভারতীয় গরুর কারণে অনেক লোকসান হয়েছে। সরকারের কাছে দাবি এবার যেন সীমান্ত দিয়ে কোনো ভারতীয় গরু ঢুকতে না দেয়া হয়। তাহলে আমরা গত বছরের লোকসান এবার পুষিয়ে নিতে পারব। শামীম ভূঁইয়া ও আবুল খায়েরের মতো একই কথা জানিয়েছেন অন্য খামারিরা। 

এদিকে পশুর হাটগুলোতে যেন কোনো অসুস্থ গরু ঢুকতে না পারে সে জন্য তৎপর প্রাণিসম্পদ সংশ্লিষ্টরা। এ বছর এক লাখ পাঁচ হাজার ৯৬০টি পশুকে কোরবানি যোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তাপস কান্তি দত্ত জানান, গত বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় প্রায় এক লাখ পশু কোরবানি করা হয়েছে। এ বছরও কোরবানির পশুর কোনো সংকট হবে না। খামারিদের মতো তারাও ভারতীয় গরু আমদানির বিপক্ষে। প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা যেন পশু বিক্রি করে লাভবান হন এমনটি চান জেলার প্রাণিসম্পদের এ শীর্ষ কর্তা।

এমএস/
 


** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।
Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


টেলিফোন: +৮৮ ০২ ৫৫০১৪৩১৬-২৫

ফ্যক্স :

ইমেল: etvonline@ekushey-tv.com

Webmail

জাহাঙ্গীর টাওয়ার, (৭ম তলা), ১০, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

এস. আলম গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি