যে কারণে ইসির সভা বর্জন করলেন মাহবুব তালুকদার

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সভা আবারও বর্জন করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। আজ সোমবার সকাল সোয়া ১১ টায় রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৩৬তম প্রস্তুতি সভা শুরু হয়। সভা শুরুর ৭ মিনিটের মাথায় নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে বেরিয়ে যান মাহবুব তালুকদার।

তবে বাকি তিন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে নিয়ে বৈঠক চালিয়ে যান সিইসি নূরুল হুদা। সভা বর্জনের কারণ স্পষ্ট করতে না চাইলেও মাহবুব তালুকদার যে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছেন তাতে বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।   

ইসি সূত্রে জানা গেছে, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে’ ৫ দফা প্রস্তাব নিয়ে সভায় বক্তব্য দিতে চেয়েছিলেন মাহবুব তালুকদার। কিন্তু সেই সুযোগ তাকে দেওয়া হয় নি। না পেয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়ে তিনি বেরিয়ে যান।

বেরিয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে মাহবুব তালকুদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু বলব না। নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছি। সভা বর্জন করেছি।’

মাহবুব তালুকদার নোট অব ডিসেন্টে লিখেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন কোনোভাবেই আমার অধিকার খর্ব করতে পারে না, বাক স্বাধীনতা ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা আমার সংবিধানপ্রদত্ত মৌলিক অধিকার। এমতাবস্থায় অনন্যোপায় হয়ে আমি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নোট অব ডিসেন্ট প্রদান করছি এবং প্রতিবাদ স্বরূপ কমিশন সভা বর্জন করছি।’

কমিশন সভায় তাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি অভিযোগ করে মাহবুব তালুকদার লিখেছেন, ‘কমিশন সভায় তাকে বক্তব্য উপস্থাপন করতে না দেওয়ার বিষয়ে কমিশনারদের ‘অভিন্ন অবস্থান’ তাকে ‘বিস্মিত ও মর্মাহত’ করেছে।’

প্রসঙ্গত, গত ৮ অক্টোবর কমিশনে দেওয়া এক আনঅফিশিয়াল নোটে ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে’ পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছিলেন মাহবুব তালুকদার।

ওই ৫ দফায় নির্বাচনী দায়িত্বে সেনাবাহিনীর কার্যপরিধি নির্ধারণ, সবার জন্য সমান ‍সুযোগ রেখে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আয়োজন, ভোটে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা, ইসির সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সরকারের সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে নিজের মতামত সেখানে তিনি তুলে ধরেন।

সোমবারের কমিশন সভায় ওই বিষয়গুলো নিয়েই বক্তব্য দিতে চেয়েছিলেন মাহবুব তালুকদার।ওই পাঁচ দফা প্রস্তাব কমিশন সভার কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করারও অনুরোধ করেছেন এই নির্বাচন কমিশনার। 

নির্বাচন প্রস্তুতির নিয়ে আজকের গুরুত্বপূর্ণ সভায় দু’টি এজেন্ডার মধ্যে ছিল- আগামী জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে সবশেষ প্রস্তুতি নিয়ে ইসি সচিব থেকে কমিশনারদের অবহিতকরণ ও হিজড়া জনগোষ্ঠীর ভোটার তালিকা।

এছাড়া নির্বাচনের তফসিল  কবে ঘোষণা হবে সে বিষয়েও এই সভায় সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল।

সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে  এম নুরুল হুদাসহ চার কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ৩০ আগস্ট একাদশ নির্বাচনে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ইসি সভা বর্জন করেন মাহবুব তালুকদার। তখনও নোট অব ডিসেন্ট দেন তিনি। নোট অব ডিসেন্টে উল্লেখ করেন, তিনি ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে নন। কিন্তু এখনই ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে নন তিনি। তার মতে ইভিএম খরুচে এবং দেশের অধিকাংশ মানুষ এর ব্যবহার জানেন না।

আরও পড়ুন 

নোট অব ডিসেন্টে যা লিখেছেন মাহবুব তালুকদার

নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে ইসির সভা বর্জন মাহবুব তালুকদারের

/ এআর /