ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪

যেসব ভুলের কারণে হারাম হয় গোশত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:১৬, ১ জুন ২০২০ | আপডেট: ১৬:২৪, ২ জুন ২০২০

মহান আল্লাহ তায়ালার অনেক বড় নেয়ামত গোশত। যে সকল পশু-পাখির গোশত খাওয়া বৈধ, সেগুলো যেন-তেনভাবে মেরে খাওয়া যাবে না। ইসলামী বিধান মতে জবাই করে খেতে হবে। এই বিধান অনুসারে জবাই করতে গিয়ে অনেকে ভুল করে ফেলেন। তখন সেই পশু-পাখির গোশত খাওয়া হারাম হয়ে যায়।

মহান আল্লাহ তায়ালা কিছু প্রাণীকে মানুষের জন্য হালাল করে দিয়েছেন। এটা মানুষের ওপর আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে বিশেষ অনুগ্রহ। এ জন্য করণীয় হচ্ছে, জবাহের সময় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা। শুকরিয়া আদায়ের পদ্ধতি হচ্ছে, জবাই করার সময় ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে জবাই করা। কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ ছেড়ে দিলে, ওই পশুর গোশত খাওয়া হারাম হবে। 

কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে জবাই করার শুরুতে বিসমিল্লাহ বলার কথা এসেছে। যেমন সূরা হজ্জ-৩৪,৩৬, সূরা আনআম-১১৯,১৩৮, সূরা নাহল-১১৫, বাকারা-১৭৩।

আমরা অনেকেই বাজার থেকে হাঁস, মুরগি জবাই করে এনে থাকি। এখানেই সমস্যা বেশি। ব্যস্ততার জন্য দোকানদার ঠিকভাবে জবাই করে না, কেউ কেউ বিসমিল্লাহ পর্যন্ত বলে না। তাহলে আপনি যে গোশস্ত পেলেন, তা কিন্তু খাওয়া হারাম।

এছাড়া হাঁস-মুরগির পালক ছাড়ানোর জন্য ফুটন্ত পানিতে অনেকক্ষণ রাখলে পেটের নাপাকী গোশতের মধ্যে ভেদ করার কারণে তা খাওয়া হারাম হয়ে যায়। এই সমস্যাটিও বাজারে প্রচুর। অর্থ খরচ করে হারাম কিনে খাওয়ার চেয়ে না খাওয়া অনেক ভালো।

তবে শুধু গরম পানিতে অল্প কিছুক্ষণ চুবিয়ে রাখলে অসুবিধা নেই। কিংবা ফুটন্ত পানিতে চুবিয়ে সঙ্গে সঙ্গে উঠিয়ে ফেললেও অসুবিধা নেই। বাজার থেকে হাঁস-মুরগি জবাই এবং ড্রেসিং করে আনার সময় এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিন।

জবাইর ক্ষেত্রে ইসলামের অন্যান্য বিধানগুলোর মধ্যে কোন পশুর চারটা রগ কাটতে হবে। তিনটা রগ কাটলেও হবে। তবে তিনটার কম কাটলে সে জন্তু মৃত বলে গণ্য
হবে এবং খাওয়া হারাম হয়ে যাবে। রগ চারটি হল- শ্বাসনালী, খাদ্যনালী ও দুইটা শাহী রগ। এগুলো দিয়ে পশুর নাপাক রক্ত বের হয়ে যায় এবং সহজে পশুর জান বের হয়।

ধারালো ছুরি দ্বারা জবাই করা উত্তম। ভোঁতা বা কম ধারাল ছুরি দ্বারা জবাই করা মাকরূহ। পাথরের আঘাতে, বন্দুকের গুলিতে মারা যাওয়া পশু-পাখির গোশস্ত খাওয়া ঠিক নয়। তবে বন্ধুকের গুলি বা পাথরের আঘাত লাগার পর মরে যাওয়ার পূর্বে জবাই করতে পারলে তা খাওয়া জায়েজ।

জবাই করার সময় পশু-পাখির মাথা সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে গেলেও তা খাওয়া জায়েয। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে এরূপ কেটে আলাদা করে দেওয়া মাকরূহ। 

জবাই করার পর পশু ঠাণ্ডা হওয়ার পূর্বে চামড়া খসানো, হাত-পা কাটা, ভাঙ্গা বা গলা কেটে দেয়া মাকরূহ। 

বিক্রেতা যদি হিন্দু বা অন্য কোন ধর্মের হয়, তার কাছ থেকে গোশত কিনে খাওয়া জায়েজ নয়। অবশ্য যদি কোনো মুসলমান নিয়ম মাফিক জবাই করেন, তবে সেই গোশত খাওয়া জায়েজ হবে। 

জবাইয়ের সময় পশুর যাতে কষ্ট কম হয় সেই চেষ্টা করা উচিত। এক হাদীসে এসেছে, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা প্রতিটি বস্তুর সঙ্গে ভালো আচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। অতএব, আইন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কাউকে হত্যা করতে হলে, তাকে সুন্দরভাবে হত্যা কর। কোনো পশুকে জবাই করতে হলে সুন্দরভাবে কর। যেমন জবাইর আগে ছুরি ভালোভাবে ধার দিয়ে নাও।’ (সহীহ মুসলিম)

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি