ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৭ মে ২০২৪

রোহিঙ্গাদের জন্য আরও অনেক কাজ বাকি: বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৪৪, ১ জুলাই ২০১৮

বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেছেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট উত্তরণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও অনেক কাজ বাকি আছে, আর সেজন্যই তিনি ও জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশে এসেছেন।  

বিশ্ব ব্যাংক জানিয়েছে, রোববার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক করার পর এক যৌথ ব্রিফিংয়ে জিম ইয়ং কিম এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমরা জানি, আমাদের আরও অনেক কিছু করতে হবে, আরও অনেক কাজ বাকি, তাদের জন্য আরও অনেক কিছু করা দরকার। আর সেই কারণেই আমরা এখানে এসেছি।”

রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম দুই দিনের সফরে শনিবার ঢাকায় পৌঁছান।

বাংলাদেশের জন্য ‘কঠিন এক সময়ে’ এই সফরে আসায় জিম ইয়ং কিমকে ধন্যবাদ জানান মুহিত।

তিনি বলেন, পরিস্থিতিতি এখন কঠিন কারণ বাংলাদেশকে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার ভার বহন করতে হচ্ছে।

“তবে শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে পরিস্থিতি জটিল হয়েছে সেটা আমরা বলতে চাই না। বাংলাদেশের মানুষকেও অন্য দেশে শরণার্থী হতে হয়েছিল। সেটা কখনও ভোলার নয়। আর এ কারণেই আমরা শরণার্থীদের সাদরে গ্রহণ করেছি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, কিন্তু আমরা অবশ্যই চাই, এই শরণার্থীরা নিরাপদে ও আত্মমর্যাদার সঙ্গে তাদের দেশে ফিরে যাক। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও আমাদের এই চাওয়ার প্রতি বিপুলভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে আসা চার লাখের মতো রোহিঙ্গা গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। গতবছর ২৫ অগাস্ট রাখাইনে নতুন করে দমন অভিযান শুরুর পর রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে আরও প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা।

জাতিসংঘ ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বলে আসছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ রোহিঙ্গা সঙ্কটকে এশিয়ার এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কিম বলেন, তিনি এবং জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস রোহিঙ্গাদের পরিস্থিত নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। সোমবার তারা কক্সবাজারে গিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন।

“মহাসচিব ও আমি এখানে এসেছি বাংলাদেশের মানুষ ও সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে, কারণ তারা এত বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছেন। আর তারা এটা করেছেন খুবই মানবিক এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে।”

বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসায় কিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী মুহিতের নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেদিকে অগ্রসর হচ্ছে, তার প্রতি বিশ্ব ব্যাংকের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।

“এ বছর আমরা বাংলাদেশকে রেকর্ড ৩ বিলিয়ন ডলার দিচ্ছি, যা বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম। আর এটা হচ্ছে আমাদের আস্থার স্পষ্ট ইংগিত।”

গুতেরেস যখন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ছিলেন, তখন তার প্রেরণাতেই বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপ শরণার্থীদের জন্য কাজ করতে শুরু করে বলে জানান কিম।

তিনি বলেন, “বছর পাঁচেক আগে তিনি আমাকে বলেন, বিশ্ব ব্যাংকেরও এ কাজে সম্পৃক্ত হতে হবে, কেননা এসব সমস্যা এত দীর্ঘস্থায়ী হয় যে তখন আর তা শরণার্থী সঙ্কট থাকে না, উন্নয়নের সঙ্কটে পরিণত হয়। তার এই দৃষ্টিভিঙ্গিই পাঁচ বছর আগে আমাদের এ কাজে সম্পৃক্ত করেছে।”

রোহিঙ্গাদের জন্য বিশ্ব ব্যাংক সম্প্রতি ৪৮ কোটি ডলার সহায়তার যে ঘোষণা দিয়েছে, সে কথাও ব্রিফিংয়ে বলেন আন্তর্জাতিক এ ঋণদাতা সংস্থার প্রেসিডেন্ট।

“আমরা মনে করি, যেসব দেশ মানবিক কারণে শরণার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে, সেজন্য তাদের ভোগান্তির মুখে ফেলা উচিৎ নয়। বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী, দেশের মানুষ এবং প্রধানমন্ত্রী যে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন, সেজন্য আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যাতে সহায়তার টাকাটা অনুদানের আকারেই আসে।”

এসি  

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি