ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫৭, ২৬ মার্চ ২০২৪

ইসলামে বছরের শ্রেষ্ঠতম বরকতময় রাত শবে কদর। পবিত্র কুরআন এই রাতেই প্রথম অবতীর্ণ হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আমি কুরআন নাজিল করেছি মহিমাপূর্ণ রাত্রিতে। আপনি কি জানেন, মহিমাপূর্ণ রাত্রি কী? মহিমান্বিত রাত্রি সহস্র মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাত্রিতে ফেরেশতারা ও রুহুল কুদুস অবতরণ করেন; তাদের প্রভুর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে, সব বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এই শান্তির ধারা চলতে থাকে ঊষা উদয় পর্যন্ত।’ (সুরা কদর : ১-৫)

আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে কদর তালাশ করতে বলেছেন। হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের সন্ধান কর।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস, ২০১৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস, ১১৬৯)

এ রাতগুলো হলো ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯। আরবিতে দিনের আগে রাত গণনা করা হয়। অর্থাৎ ২০, ২২, ২৪, ২৬ ও ২৮ রমজান দিবাগত রাতসমূহ। সে হিসেবে সামনে চারটি রাত রয়েছে শবে কদর হওয়ার সম্ভাব্য রাত।

এ রাতের গুরুত্ব ও মর্যাদা অপরিসীম। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে কদরের রাতে ইবাদত করবে; তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে’ (বুখারি : ৩৪)। 

শবে কদরে যেসব আমল করা যায়- নফল নামাজ- তাহিয়্যাতুল অজু, দুখুলিল মাসজিদ, আউওয়াবিন, তাহাজ্জুত, সালাতুত তাসবিহ, তাওবার নামাজ, সালাতুল হাজাত, সালাতুশ শোকর ও অন্যান্য নফল ইত্যাদি পড়া। নামাজে কিরাত ও রুকু-সিজদা দীর্ঘ করা। কুরআন শরিফ; সুরা কদর, সুরা দুখান, সুরা মুজাম্মিল, সুরা মুদ্দাসসির, ইয়াসিন, সুরা তহা, সুরা আর-রহমান ও অন্যান্য ফজিলতের সুরা তেলাওয়াত করা। দরুদ শরিফ বেশি বেশি পড়া। তওবা-ইস্তিগফার অধিক পরিমাণে করা। দোয়া কালাম, তাসবিহ তাহলিল, জিকির-আজকার ইত্যাদি করা। নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও সব মুমিন-মুসলমানের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এবং বিশ্ববাসীর মুক্তি কামনা করে দোয়া করা। 

এই রাতে সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তায়ালা প্রথম আসমানে অবতরণ করে বান্দাদের ডেকে ডেকে বলেন, ‘কে আছ অসুস্থ আমার কাছে চাও আমি শেফা দান করব, কে আছ অভাবগ্রস্ত আমার কাছে চাও আমি প্রাচুর্য দান করব, কে আছ বিপদগ্রস্ত আমার কাছে চাও আমি বিপদমুক্ত করে দেব।’ (মুসলিম)

তবে মর্যাদাপূর্ণ এ রাতকে কেন্দ্র করে সমাজে মনগড়া কিছু আমলের প্রচলন দেখা যায়। যা শরিয়ত সম্মত নয়। অবশ্যই তা বর্জন করতে হবে। লাইলাতুল কদরের নামে নির্দিষ্ট কোনো নামাজ পড়া, দলবদ্ধভাবে মসজিদে মসজিদে ঘুরে ইবাদত করা, কবর জিয়ারত করা, আতশবাজি করা ইত্যাদি। এসব পরিহার করা চাই। তা ছাড়া এ রাত যাপন উপলক্ষে অহেতুক কোনো অনুষ্ঠান বা মসজিদে কোনো ভোজের আয়োজন করা ইসলাম সম্মত নয়। বরং বেশি বেশি নফল ইবাদত, কুরআন তেলাওয়াত ও তওবা ইস্তিগফারের মধ্যে রাত কাটানোই উত্তম। 

রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর পেল কিন্তু ইবাদত-বন্দেগিতে সময় কাটাতে পারল না, তার মতো হতভাগা দুনিয়াতে আর কেউ নেই। সুতরাং লাইলাতুল কদর তালাশ করে সঠিক ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে রাত যাপনে আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন করা উচিত।

এমএম//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি