ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

লিবিয়ায় নিয়ে জিম্মি করে টাকা আদায়, আটক ৪

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:০২, ৭ অক্টোবর ২০১৭ | আপডেট: ২০:১০, ৯ অক্টোবর ২০১৭

চাকুরির লোভে লিবিয়ায় নিয়ে বিক্রির পর জিম্মি করে টাকা আদায় করছে একটি চক্র। বাংলাদেশ ছাড়াও লিবিয়াসহ কয়েকটি দেশের নাগরিকরা এ চক্রের সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি লিবিয়ায় জিম্মিদশা থেকে নেত্রকোনার বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেনকে (২৩) উদ্ধার ও চার প্রতারককে গ্রেফতারের বিষয়ে শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে  পিবিআই।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই’র বিশেষ পুলিশ সুপার আহসান হাবীব পলাশ বলেন, ভালো বেতন এবং উন্নত পরিবেশে চাকরির কথা বলে সাদ্দামকে লিবিয়ায় নিয়ে যায় একটি চক্র। তারপর পাসপোর্টসহ সকল বৈধ কাগজপত্র হাতিয়ে নিয়ে একটি ক্যাম্পে তাকে আটকে রাখে সে দেশে অবস্থানরত চক্রের সদস্যরা।

তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ দেওয়ার পরিবর্তে চলতে থাকে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন। আর সেই নির্যাতনের ছবি, ভিডিও দেশে অবস্থানরত স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে অর্থ আদায় করতে থাকে চক্রটি। এভাবে কয়েক দফায় সাড়ে নয় লাখ টাকার বিনিময়ে সেই চক্রের হাত থেকে ছাড়া পান সাদ্দাম।

লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সাদ্দামকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

এরপর সাদ্দামের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পিবিআই। শুক্রবার রাজধানী ঢাকা ও কিশোরগঞ্জ থেকে দেশে ওই চক্রের চার সদস্যকে আটক করে তারা।

আটককৃতরা হলেন- তাসলিম উদ্দিন (৫০), মোফাজ্জল হোসেন (৪৮), আইয়ূব আলী (৫২) ও আরমান সরকার (৪২)।

পিবিআই বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, ‘লিবিয়া এবং ইরাকে মানবপাচারে এই চক্রটি সক্রিয় রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। লিবিয়ায় এই চক্রের সঙ্গে দেশটির নাগরিক এবং সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিও রয়েছে। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চক্রটি দেশের যুবকদের সে দেশে নিয়ে জিম্মি করে নির্যাতন চালাতে থাকে। তখন স্বজনদেরও অর্থ দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।

আহসান হাবীব বলেন, ‘আরো ৭-৮ বাংলাদেশি লিবিয়ায় জিম্মি আছেন বলে আমাদের কাছে অভিযোগ করেছে তাদের পরিবারের সদস্যরা। তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এদের প্রত্যেকে ৪-৫ লাখ টাকা খরচ করে লিবিয়ায় যাওয়ার পর তাদের পরিবারের কাছ থেকে আরো ৩-৯ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে আহসান হাবীব বলেন, ‘ঠিক কতটি চক্র সক্রিয় রয়েছে তা আমাদের জানা নেই। আমরা এখনো চক্রের সে দেশের কোনো সদস্যকে গ্রেফতার করতে পারিনি, তবে চেষ্টা চলছে।’

জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়া সাদ্দাম বলেন, ‘গত বছরের ডিসেম্বরে লিবিয়া যাওয়ার পরই সেখানকার বিমানবন্দর থেকে কয়েকজন আমাকে একটি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। তারপরই টানা তিন মাস একই স্থানে রেখে মারধর করে অর্থ আদায় করে। পরে তারা আবার এক পাকিস্তানির কাছে আমাকে বিক্রি করে দেয়। সেখানেও আবার নির্যাতন করে অর্থ দাবি করতে থাকে।’

সাদ্দাম বলেন, ‘এভাবে আমাকে ৩-৪ বার বিক্রি করা হয়। ৫০০ দিনারে একজন আরেকজনের কাছে আমাকে বিক্রি করে দেয়। পরে সেই লোক আবার আমার কাছে ১০ হাজার দিনার দাবি করে। সেখানে বাংলাদেশি, লিবিয়ান ও পাকিস্তানি মিলে একটি চক্র এই অপকর্ম চালাচ্ছে। সেখানে আমার মতো আরো ১৩-১৪ জন বাংলাদেশিকে জিম্মি অবস্থায় দেখেছি।’

ডব্লিউএন


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি