সরকারি হাসপাতালের প্রায় ৮০ শতাংশ ওষুধ সরবরাহ করছে এসেনশিয়াল ড্রাগস
প্রকাশিত : ১৬:৫৩, ১১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৮:৪৮, ১১ অক্টোবর ২০২৫

বর্তমানে সরকারি হাসপাতালের প্রায় ৮০ শতাংশ ওষুধ সরবরাহ করছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগসে কোম্পানি লিমিটেড।
শুক্রবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান ইডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সামাদ মৃধা।
তিনি জানান, ‘বর্তমানে ইডিসিএল সরকারি হাসপাতালের প্রায় ৮০ শতাংশ ওষুধ সরবরাহ করছে। তবে সময়োপযোগী প্রযুক্তি ও সুশাসনের মাধ্যমে ইডিসিএল এখন একটি স্থিতিশীল ও লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ঢাকা, খুলনা ও বগুড়া প্রকল্পের আধুনিকায়ন শেষ হলে আগামী তিন বছরের মধ্যে সরকারি হাসপাতালের পুরো চাহিদা দেশেই পূরণের চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠানটি।’
ইডিসিএল সূত্র জানায়, সুশাসনের ধারায় ফিরছে ইডিসিএল। কর্মঘণ্টা বৃদ্ধি, ওভারটাইম ব্যয় হ্রাস, অদক্ষ জনবল কমানো ও উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন ৩০ মিনিট অতিরিক্ত উৎপাদন সময় যুক্ত করায় বছরে ৩ লাখ ১০ হাজার কর্মঘণ্টা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে প্রায় ৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা সাশ্রয় সম্ভব হয়েছে। সময় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা আসায় ওভারটাইম ব্যয় কমেছে ৪ কোটি টাকারও বেশি। ফলে কর্মীরা এখন নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ করতে পারছেন। অন্যদিকে, অতিরিক্ত ও অদক্ষ কর্মী কমিয়ে আনার পরও উৎপাদন বেড়েছে ৫৯ কোটি টাকার বেশি। বেতন বাবদ ২৪ কোটি টাকা সাশ্রয় হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক সংকট কাটিয়ে স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরেছে। এখন মাত্র ১২টি পণ্য বাইরের প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত হওয়ায় সামান্য সময়েই ৩০ কোটি টাকার বেশি সাশ্রয় হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্রয় প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা আনতে সিন্ডিকেটমুক্ত টেন্ডার পদ্ধতি চালুর পর কাঁচামাল ক্রয়ে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। ফলে চলতি অর্থবছরে ২৬ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় সাশ্রয় হয়েছে। আগে কয়েকজন সরবরাহকারী মিলে দাম বাড়ালেও এখন বাজারদর অনুযায়ী উপকরণ সংগ্রহ সম্ভব হচ্ছে।
গোপালগঞ্জ প্রকল্পে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ও স্যালাইন উৎপাদনের ট্রায়েল চলছে। পাশাপাশি আইভি ফ্লুইড (৫০০ ও ১০০০ মি.লি.) উৎপাদনের পরীক্ষামূলক চালানও সফলভাবে সম্পন্নের পথে। প্রকল্পটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে দেশে স্যালাইন সরবরাহে বড় পরিবর্তন আসবে। অন্যদিকে, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে ভ্যাক্সিন প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। তিন বছরের মধ্যে এটি চালু হলে দেশের চাহিদা পূরণ করেও বিদেশে রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে। একই এলাকায় এফডিএ মানসম্পন্ন আধুনিক ফার্মাসিউটিক্যাল ইউনিটও নির্মাণাধীন।
অবকাঠামো ও প্রযুক্তি উন্নয়নে ঢাকা ফ্যাক্টরির পাশে নতুন বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলছে। এটি চালু হলে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি বছরে প্রায় ১৩ কোটি টাকার গুদাম ভাড়া সাশ্রয় হবে। একই সঙ্গে ইআরপি সফটওয়্যার, সি-জিএমপি মানোন্নয়ন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আধুনিকীকরণের কাজও বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মানবসম্পদ উন্নয়ন ও সামাজিক উদ্যোগ হিসেবে কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও মোটিভেশনের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বেড়েছে বহুগুণে। ‘ইডিসিএল ফাউন্ডেশন’র মাধ্যমে কর্মচারীদের মেধাবী সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ‘ইডিসিএল মেডিক্যাল ফাউন্ডেশন’ জটিল রোগের চিকিৎসা ব্যয়ে সহায়তা করছে।
এএইচ