ঢাকা, বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪

সাফল্যের সরল পথ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:৪২, ১৬ মার্চ ২০২১

সফলতার মূলমন্ত্র হচ্ছে ইতিবাচক দৃষ্টি ভঙ্গি। প্রশান্তি ও সুসাস্থ্যের পরিপূরক শক্তি হচ্ছে ‘সাফল্য’। সাফল্য কোনো গন্তব্য নয়। সাফল্য হচ্ছে ক্রমাগত এগিয়ে চলা। প্রতিটি অর্জনই হচ্ছে নতুন শুরু, নতুন যাত্রার প্রস্তুতি। প্রশান্তি, সুস্বাস্থ্য ও সাফল্যের পথে প্রথম বাধা বা দেয়াল হচ্ছে সন্দেহ সংশয় বা অবিশ্বাস। পারব কি-না, হবে কি-না, যদি না-হয় তাহলে কী হবে—নানারকম নেতিবাচক প্রশ্ন, ভয় ও আশঙ্কা।

আসল পঙ্গুত্ব মনের, দেহে নয়। সংশয় প্রথমেই মনকে পঙ্গু করে দেয়। নেতিবাচক চিন্তা মনের মধ্যে এসে মস্তিষ্ককে তার বিশাল শক্তিভাণ্ডার নিয়ে লাগাতার কাজ করার পথে বাধা সৃষ্টি করে। সাফল্যের লক্ষ্যে মনোদৈহিক প্রক্রিয়া তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়। বাস্তবে ব্যর্থতা ও হতাশা গ্রাস করে জীবন। 

এরপর আজন্ম লালিত পরিবেশ বা পরিবারের প্রভাবে ক্ষতিকর তথ্য, ধারণা, সংস্কার দ্বারা সৃষ্ট অভ্যাসচক্রেই সাধারণ মানুষ ঘুরপাক খায়। বাবা-দাদার ভ্রান্ত জীবনাচরণকেই সে মনে করে জীবন। জীবন যে এর চেয়ে অনেক বড় কিছু তা তার ভাবনাতেই আসে না। লালিত অভ্যাসচক্র তার মধ্যে এক ভ্রান্ত নিরাপত্তা বোধ সৃষ্টি করে। ফলে নতুন কাজ নতুন পদক্ষেপ নিতে ভয় পায়; পাছে যা আছে তা-ও যদি চলে যায়।

সুযোগকে এভাবে হাতছাড়া করার জন্যে দায়ী ভাগ্য নয় বা কোনোকিছুর অভাব নয়, দায়ী তাদের স্বভাব। আমি এমনই, আমাকে এভাবেই চলতে হবে, আমার ভাগ্যে এই লেখা আছে—এ ধরনের ভ্রান্ত ভাবনা, ভ্রান্ত অভ্যাসচক্রের বন্দিত্ব জীবনে দুর্দশা ও ব্যর্থতার দ্বিতীয় কারণ। 

কী হলে কী হতো, এমন যদি হতো, যদি আমার এটা থাকত—এ অলীক কল্পনাগুলোই দুর্দশাগ্রস্ত জীবনের প্রধান কারণ। অলীক কল্পনা মানুষকে নিয়ে যায় বর্তমান থেকে অনেক দূরে। নষ্ট করে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা। ডুবিয়ে রাখে আফসোস, আলস্য বা অন্যের সাহায্যের অপেক্ষায়। 

অলীক কল্পনার ধরন বিভিন্ন হলেও এর মূলে রয়েছে সবকিছু বিনা পরিশ্রমে ও রাতারাতি পাওয়ার ভাবনা, কাজে ফাঁকি দেয়া, সাফল্যের জন্যে অন্যের সাহায্যের আশা কিংবা ব্যর্থতায় অন্যকে দোষারোপ করার মানসিকতা। আলাদিনের চেরাগ বা অন্যের সাহায্যের অপেক্ষা করতে করতে সে ব্যর্থতা আর হতাশায় হারিয়ে যায়।

প্রয়োজনীয় কাজ সময়মতো না করে ফেলে রাখার নাম আলস্য। আকাশ কুসুম কল্পনা, আড্ডা, টিভি, ইন্টারনেটে চ্যাটিং, ফেসবুক, এসএমএস—সবকিছুর জন্যে অলসরা সময় পায়, শুধু সময় পায় না বা আগ্রহী হয় না প্রয়োজনীয় কাজ করার। শারীরিক দুর্বলতা, মানসিক অস্থিরতা কিংবা পারিপার্শ্বিক প্রতিকূলতার হাজারটি কারণ অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে থাকে। 

প্রায়ই নিজেকে দুঃখী ও অবহেলিত মনে করাও আলস্যের আরেকটি রূপ। আলস্যের মূল কারণ লক্ষ্যহীনতা-কাজটি কেন করতে হবে তা নিজের কাছে পরিষ্কার না থাকা। অবচেতন মনে পরিবর্তনের অনীহা অর্থাৎ করব করব করে কাজ ফেলে রাখাও আরেকটি কারণ। কারণ যা-ই হোক, আলস্য ও দীর্ঘসূত্রিতা জীবনের সকল সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দেয়। 

এসি

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি