ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪

সিকিম যেভাবে অর্গানিক রাজ্য হলো

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:১৪, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

২০১৬ সালে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমকে সম্পূর্ণ অর্গানিক স্টেট বা কেমিক্যাল ফ্রি রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। প্রায় পাঁচ বছর আগে সবুজ বিপ্লবের যখন সূচনা হয়েছিল সেখানে একই সঙ্গে কীটনাশক বাদ দিয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের কথা বলা হয়েছিল। তাহলে সিকিমের অর্গানিক বিপ্লব কি পুরো ভারতের কৃষিকাজে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব?

ভারতের প্রথম রাজ্য হিসেবে সিকিমকেই রাসায়নিক মুক্ত বা অর্গানিক রাজ্য হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল আরও দু বছর আগে, ২০১৬ সালে। যদিও যখন সিকিম সরকার প্রথম তাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করে তখন বিষয়টি এতো সহজ ছিল না।

২০০৩ সালে প্রথম যখন কীটনাশক ব্যবহার নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয় তখন তার প্রতি সেখানকার কৃষকরাও খুব একটা আস্থাশীল ছিল না।

কৃষকদের একজন কারমা ভুটিয়া যেমন বলছিলেন যে অনেকে কৃষক আসলে ভীত হয়ে পড়েছিল সরকারের উদ্যোগে।

তিনি বলেন, ‘প্রথম দু তিন বছরে চাষবাসই নাটকীয়ভাবে কমে গিয়েছিল। এটা আমাদের ভেঙ্গে দিয়েছিল। আমরা তখন তরুণ কৃষক। আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম যে অর্গানিকের দিকে যাওয়া হয়তো সঠিক সিদ্ধান্ত হচ্ছে না। সে সময়ই সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হল যে তারা আমাদের লোকসানের জন্য ক্ষতিপূরণ দিয়ে দেবে। এরপর আমরা চেষ্টা শুরু করলাম এবং দু তিন বছর পর বুঝলাম যে চাষাবাদ হচ্ছে আগের মতোই। এবং তাতে আমরা অভ্যস্ত হলাম’।

এখন সিকিমে চাষবাসে কীটনাশকের ব্যবহার রীতিমত অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। কেউ জমিতে কীটনাশক ব্যবহার করলে এক হাজার চারশো ডলার বা সমপরিমাণ পর্যন্ত অর্থ জরিমানা হতে পারে। এমনকি জেল হতে পারে প্রায় তিন মাসের জন্য।

কিন্তু কেন সরকার রাসায়নিক মুক্ত চাষবাসে এতোটা আগ্রহী হল। রাজ্যের কৃষি সচিব খরলো ভুটিয়া বলছেন তাদের মূল লক্ষ্য ছিল জনস্বাস্থ্য।

‘মূলত মাটির স্বাস্থ্য ভালো রাখা এবং জনগণের কাছে মানসম্পন্ন খাবার পৌঁছে দেওয়া। এরপর মানুষের জন্য রাসায়নিক মুক্ত বাতাস ও পানি নিশ্চিত করা এবং এর সঙ্গে রাজ্যটির সমৃদ্ধ জৈববৈচিত্র রক্ষা করা’।

বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যটির দিকে নজর পড়ে কমই। যদিও হিমালয় পর্বতমালার সৌন্দর্যে সিকিম হয়ে উঠেছে অসাধারণ। কিন্তু এখন সেই সৌন্দর্যের পাশাপাশি রাজ্যটির অর্গানিক ফিল্ডগুলোও মানুষকে টানছে। আর এর ফলে রাজ্যে বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যাও। কর্তৃপক্ষের হিসেবে পর্যটক বেড়েছে সত্তর ভাগের মতো।

এখন ভারত সরকার চাইছেন দেশটির সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ুক সিকিম মডেল। কিন্তু এ জন্য আস্থায় নিতে হবে দেশটির লাখ লাখ কৃষককে, আবার কীটনাশক উৎপাদক প্রতিষ্ঠানগুলোও এতে খুব একটা খুশী হবে না সেটিও নিশ্চিত করেই বলা যায়।

তারপরেও এখন সবার দৃষ্টি সিকিমের দিকেই। কারণ এই অর্গানিক মিশন জাতিকে একটি দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য এনে দিতে পারে।

সূত্র: বিবিসি

একে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি