হুমকির মুখে ‘হিমালয়ান ভায়াগ্রা’
প্রকাশিত : ১৪:৪৮, ২৮ অক্টোবর ২০১৮

আপনি কি হিমালয়ান ভায়াগ্রা নামে পরিচিত শুঁয়াপোকার মতো মাথা ভেদ করে বেড়ে ওঠা ফাঙ্গাস বা ছত্রাকের নাম শুণেছেন? এটি সাধারণত চীন, নেপাল ও ভুটানে পাওয়া যায়। এর দাম নেহায়েত কম নয়।
চীনের বেইজিংয়ে এর সর্বোচ্চ মূল্য মাঝেমধ্যে সোনার দামের চেয়ে প্রায় তিনগুণ ওঠে যায়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই মূলবান ভায়াগ্রার উৎপাদন কমে যাচ্ছে বলে পিএনএএস-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
এটি ‘ইয়ারসেগাম্বা` ছত্রাক নামে পরিচিত৷ চা বানাতে পানি ফোটানোর সময় এটি মেশানো হয়৷ অনেকে স্যুপের সঙ্গেও এটি মিশিয়ে খেয়ে থাকেন৷
কারণ, ইয়ারসেগাম্বা ক্যানসার থেকে শুরু করে নপুংসকতা, প্রায় সব অসুখের মহৌষধ বলে বিশ্বাস অনেকের৷ তবে এখনো এর গুণের তথ্য বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়৷
মার্কিন জার্নাল ‘প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস` বা পিএনএএস-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে ইয়ারসেগাম্বাকে বিশ্বের অন্যতম মূল্যবান বায়োলজিক্যাল পণ্য হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে৷
গবেষকরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইয়ারসেগাম্বার দাম অনেক বেড়েছে৷ বেইজিংয়ে এর দাম কখনো সোনার চেয়ে তিনগুন বেশিও হতে পারে বলে জানান তারা৷
হিমালয়ের ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় তিন হাজার মিটার উঁচুতে ইয়ারসেগাম্বা জন্মায়৷ এই ফাঙ্গাস প্রথমে শুঁয়াপোকার শরীরের ভেতরে ঢুকে ধীরে ধীরে তাকে মেরে ফেলে৷ এরপর মৃত শুঁয়াপোকার মাথা থেকে ইয়ারসেগাম্বা মাটি ভেদ করে উপরে উঠে আসে৷
ইয়ারসেগাম্বার জন্য বিশেষ পরিবেশের প্রয়োজন হয়৷ তাপমাত্রা হতে হবে হিমাংকের নীচে, তবে মাটির উপর সবসময় বরফ জমে থাকলে চলবে না৷ কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন পরিবেশ হারিয়ে যাওয়ায় ইয়ারসেগাম্বার উৎপাদনও কমে যাচ্ছে বলে পিএনএএস-এ প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে৷
১৯৭৯ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে হিমালয় রেঞ্জ এলাকায়, বিশেষ করে ভুটানে শীতকাল একটু উষ্ণ হয়ে ওঠায় ইয়ারসেগাম্বার উৎপাদন কমে গেছে৷ এই সময়ে ভুটানে তাপমাত্রা প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে৷
তথ্যসূত্র: ডয়েচে ভেলে
এমএইচ/