ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

বালিশে মাথা দিয়ে না ঘুমালেই কি নয়?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:১৮, ১৩ অক্টোবর ২০১৭

জন্মের পর থেকে মাথায় বালিশ দিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস অধিকাংশ মানুষের। অনেকের আবার দু’টো বালিশ মাথায় দিয়ে ঘুমানোর অভ্যাস। অনেকে আবার বালিশ বিলাসী। ঘুমানোর সময় তাদের কোল বালিশ প্রয়োজন হয়। কিন্তু ঘুমানোর সময় মাথায় বালিশ দিতে হয় কেন? এমন প্রশ্ন হয়ত অনেকের মনে এখনও জাগেনি।

ঘুমানোর সময় মাথা এবং শিরদাঁড়াকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্যই মূলত বালিশের ব্যবহার হয়ে থাকে। বিশেষত নিদ্রাকালে শিরদাঁড়া যাতে বেঁকে না থাকে তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা। তবে মজার বিষয় হল, যে মানুষের এক সময় মনে হয়েছিল ঘুমানোর সময় আরাম পেতে এবং শরীরকে চাঙ্গা রাখতে বালিশের বিকল্প হয় না। সেই মানবকূলেরই এখন মনে হচ্ছে বালিশ যতটা না উপকারে লাগে, তার থেকে অনেক বেশি অপকার করে থাকে।

বাস্তববিকই বালিশ ছাড়া শুলে একাধিক উপকার পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে শোয়ার সময় শিরদাঁড়া ঠিক অবস্থানে থাকার কারণে ঘার, পিঠ এবং কোমরের একাধিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। এখানেই শেষ নয়, বালিশ ছাড়া শুলে আরও অনেক উপকার মেলে। যেমন-

শিরদাঁড়া চাঙ্গা থাকে

আপনার কি মাঝে মধ্যেই পিঠে ব্যথা হয়? তাহলে যত শিগগিরই বালিশ ছাড়া শোয়ার অভ্যাস করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ বালিশ ছাড়া শুলে শিরদাঁড়া স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে, ফলে চোট আঘাত বা অন্য কোনো সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কমে। খেয়াল করে দেখবেন, বালিশে মাথা দিয়ে শুলে শিরদাঁড়ার একটা অংশ একেবারেই স্বাভাবিক অবস্থায় থাকতে পারে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঘরে বা পিঠে যন্ত্রণা হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

ঘারের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে

পরিসংখ্যান বলছে, দক্ষিণ এশিয়ার মোট জনসংখ্যার সিংহভাগই কাঁধ, ঘার অথবা পিঠের কোনো রোগে ভুগছেন এবং রোগীদের বেশিরভাগেরই বয়স ২৫-৪০ এর মধ্যে। এক্ষেত্রে দায়ী হলো বালিশ। তাই তো চিকিৎসকেরা কম বয়স থাকতেই বালিশ ছাড়া ঘুমানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ, এমনটা করলে শোয়ার সময় ঘার এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলে রক্ত সরবরাহ ঠিক মতো হওয়ার সুযোগ পায়। ফলে কম বয়সেই স্পন্ডেলাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।

মুখমণ্ডলের উন্নতি ঘটে

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে বালিশে মাথা দিয়ে ঘুমানোর সময় আমাদের মধ্যে অনেকেই উবু হয়ে, বলিশে মুখ গুঁজে শুতে ভালোবাসেন। এমনভাবে দীর্ঘ সময় কেউ যদি ঘুমায়, তাহলে ত্বকে বলিরেখা প্রকাশ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। সেইসঙ্গে কম বয়সেই ত্বকের সৌন্দর্য হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।

বালিশে শুলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে

বেশ কিছু কেস স্টাডি করে দেখা গেছে বালিশ ছাড়া শুলে যতটা ভালো ঘুম হয়, বালিশ ব্যবহার করলে অতটা ভালো ঘুম হয় না। কী কারণে এমনটা হয়ে থাকে, তা যদিও এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট করে জানা যায়নি, তবে গবেষণা চলছে।

বালিশ ছাড়ার অভ্যাস করবেন যেভাবে

আমরা সবাই প্রায় ছোট থেকে বালিশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে এসেছি। তাই হঠাৎ করে বালিশ ব্যবহার বন্ধ করে দিলে ঘুম নাও আসতে পারে। তাই ধীরে ধীরে বালিশের অভ্যাস ছাড়তে হবে, একেবারে নয়! এক্ষেত্রে প্রথম এক সপ্তাহ বালিশের পরিবর্তে একটা মোটা টাওয়াল ভাঁজ করে মাথায় দিন। যত দিন যেতে থাকবে, তত টাওয়ালের হাইট কমাতে থাকুন। দ্বিতীয় সপ্তাহে টাওয়ালটা একেবারে পাতলা করে দিন। এই সময় খেয়াল রাখবেন, শোয়ার সময় মাথাটা এমন পজিশনে রাখবেন, যাতে থুতনিটা নিচের দিকে থাকে, উপরের দিকে নয়। আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যখন টাওয়ালের হাইট একেবারে কমিয়ে দেবেন, তখন মাঝে মাঝে ঘার এবং পিঠের কিছু ব্যায়াম করা শুরু করতে পারেন। দেখবেন উপকার পাবেন।

সূত্র : বোল্ডস্কাই

ডব্লিউএন

 

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি