ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ট্রাম্পের কাছে প্রত্যাশা নেই : প্রধানমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:৫৮, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৯:৩৫, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাহায্য করবেন বলে আশা করেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ, শরণার্থী নিয়ে নিজের ভাবনা ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন। স্থানীয় সময় সোমবার রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার পর রয়টার্সকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।


রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে, তারা কোনো শরণার্থীকে সে দেশে ঢুকতে দেবে না। আমি তাদের কাছ থেকে কী আশা করতে পারি, বিশেষ করে সেদেশের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে? তিনি (ট্রাম্প) এর মধ্যেই তাঁর মনোভাব প্রকাশ করেছেন...তাহলে আর কেন সাহায্য চাইব?’


শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশ ধনী দেশ নয়...কিন্তু যদি আমরা ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারি, তাহলে আরও সাত লাখ মানুষকেও খাওয়াতে পারব।


নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে ট্রাম্পের আয়োজনে জাতিসংঘের সংস্কার বিষয়ে উচ্চপর্যায়ের সভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রয়টার্সের সাংবাদিক মিশেল নিকোলসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা জানান, সভাস্থল ছাড়ার পর ট্রাম্পকে তিনি কয়েক মিনিটের জন্য থামান। এ সময় ট্রাম্প বাংলাদেশ কেমন চলছে তা জানতে চান। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বলি, বাংলাদেশ খুব ভালো অবস্থায় আছে। তবে আমাদের একমাত্র সমস্যা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা। কিন্তু ট্রাম্প শরণার্থীদের নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।’


পুলিশের কয়েকটি তল্লাশিচৌকিতে হামলার পর গত ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযান শুরু হয়। সহিংসতা থেকে বাঁচতে এ পর্যন্ত চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর যে নিপীড়ন চলছে, তাকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ।


জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী বৃহস্পতিবার তিনি সেখানে ভাষণ দেবেন।


রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে, তারা কোনো শরণার্থীকে সে দেশে ঢুকতে দেবে না। আমি তাদের কাছ থেকে কী আশা করতে পারি, বিশেষ করে সেদেশের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে? তিনি (ট্রাম্প) এর মধ্যেই তাঁর মনোভাব প্রকাশ করেছেন...তাহলে আর কেন সাহায্য চাইব?’


শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশ ধনী দেশ নয়...কিন্তু যদি আমরা ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারি, তাহলে আরও সাত লাখ মানুষকেও খাওয়াতে পারব।


দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থীবিষয়ক কর্মসূচিতে ১২০ দিনের স্থগিতাদেশ দেওয়ার চেষ্টা করেন। মুসলিম-অধ্যুষিত ছয়টি দেশের মানুষকে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে ৯০ দিন পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞাও জারি করেন। গত শুক্রবার এক টুইটে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরও বিস্তৃত, কঠোর ও সুনির্দিষ্ট করা উচিত।


ট্রাম্প বলেছেন, সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধ করতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি প্রয়োজন। আগামী মাসে ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাবিষয়ক নির্বাহী আদেশের ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।


রয়টার্স বলছে, সাম্প্রতিক সহিংসতা পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস ছিল। তাদের বেশির ভাগেরই চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মিয়ানমারে তাদের নাগরিকত্বও দেওয়া হয়নি। স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অনেকে তাদের বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করে। শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর তিনি আরও আন্তর্জাতিক চাপ দেখতে চান।
তথ্যসূত্র : রয়টার্স।


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি