ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

‘সু চির ভাষণে সেনাবাহিনীর বক্তব্যের প্রতিধ্বনি’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৫৩, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ২২:৫১, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মিয়ানমারে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে দেশটির নেত্রী অং সান সু চি জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দিয়েছেন তা প্রত্যাখ্যান করেছেন রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, সু চি সব জেনেও না জানার ভান করেছেন। তার এই ভাষণে সেনাবাহিনীর বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি করা হয়েছে।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বলছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে প্রাণ বাঁচাতে চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা গত তিন সপ্তাহে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এখনো প্রতিদিন আরও ১০ থেকে ১৫ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ।

রোহিঙ্গারা বলছে, সু চি খুব ভালো করেই জানেন যে নির্যাতনের কারণেই আমরা আমাদের নিজের গ্রাম ও ভিটেমাটি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছি। সব কিছু জানার পরেও সু চির বক্তব্য রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে ক্ষুব্ধ করেছে।

রোহিঙ্গাদের একটি সংগঠন ‘আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন’এর চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম লন্ডনে থেকে সংগঠনটির কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। তিনি বলেছেন, রাখাইনের পরিস্থিতি নিয়ে অং সান সু চি পুরোপুরি অসত্য বক্তব্য তুলে ধরেছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘সু চি তার বক্তব্যে যা বলেছেন তা মোটেও সঠিক নয়। তার না জানার মতো কোন কারণ নেই। সময়ে সময়ে রোহিঙ্গারা তাকে সব জানিয়েছে- কি হচ্ছে আর না হচ্ছে। আর সু চি জেনেও না জানার মতো করছেন। শি ইজ অ্যা প্রিটেন্ডার। একই সময়ে তিনি মিথ্যা কথা বলেছেন। আমরা তো খালি হয়ে গেছি সেটা আপনারা দেখছেন তো। ওখানে আছে কি এখন? মানুষ তো একদমই নাই হয়ে গেছে সেখানে। আমার মন্তব্য হলো উনি ভনিতা করছেন ও মিথ্যা কথা বলছেন। জেনেও না জানার মতো আচরণ করছেন।’

বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গারা মূলত অবস্থান করছেন কক্সবাজার জেলার শরণার্থী শিবিরগুলোতে। এই দফাতে নতুন করে আসা শরণার্থীদেরও একটি বড় অংশকে এসব শিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

এমনই একটি শরণার্থী শিবির কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গাদের একজন নেতা মোহাম্মদ নূর বলেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের কারণেই লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। কিন্তু সু চি এই সত্যকে গোপন করেছেন।

তিনি বলেন ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা বলেছেন সু চি। অত্যাচার না করলে, নির্যাতন না করলে, গুলি না করলে, কাটাছেঁড়া না করলে মানুষ কেন আসবে এখানে। জীবনেও আসতো না। মিয়ানমারে মুসলিম ছিলো ১২ লাখ । এর মধ্যে সাত লাখই তো এখানে এসে পড়েছে। মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবে থাকতে পারলে কি একদেশ থেকে আরেক দেশে পালিয়ে আসে? সূ চি সামরিক বাহিনীর লোকজনকে ভয় পান। সেজন্যই এভাবে কথা বলেছেন ‘

সু চি তার ভাষণে কি বলবেন তা নিয়ে অনেক আগ্রহ ছিলো রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন সংগঠনের। কিন্তু তার ভাষণ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াই তৈরি করেছে রোহিঙ্গাদের মধ্যে।

অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক রোহিঙ্গা ইন্টেলেকচুয়াল কমিউনিটির প্রেসিডেন্ট ড. লা মিন্ট বলেছেন, অং সান সূ চি-র বক্তব্য আর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বক্তব্যকে তারা আলাদা করতে পারছেন না।

তিনি বলেন, ‘উনার বক্তব্য আর সেনাবাহিনীর বক্তব্যের সাথে কোন পার্থক্য নেই। একই কথা বলেন উনারা। এটা সেনাবাহিনীরই বক্তব্য। উনি যা বলেছেন তার বক্তব্যের ৯০ ভাগই মিথ্যা কথা। রোহিঙ্গাদের নিয়ে তিনি যা বলেছেন সবাই আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি।’

 

সূত্র: বিবিসি বাংলা।

 টিকে


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি