ঢাকা, শুক্রবার   ১৬ মে ২০২৫

আদালতে অধ্যক্ষ সিরাজকে মারধর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৩৩, ২৪ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ১৫:৩৬, ২৪ অক্টোবর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ রায় ঘোষণা করেন। 

রায় শোনার পর এ মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে অন্য আসামিরা মারধর করেছেন। জানা গেছে, নুসরাত হত্যা মামলায় ১৬ আসামিকে ফাঁসির আদেশের পর কারাগারে নেয়ার সময় মামলার প্রধান আসামিসহ অন্যদের প্রিজনভ্যানে তোলা হয়।

এ সময় তাদের কেউ কেউ কাঁদছিলেন। প্রিজনভ্যানে তোলার পর অন্যান্য আসামি সিরাজকে হঠাৎ করেই পেটাতে থাকেন। সে সময় তাকে বুকে-মুখে চড়-থাপ্পড় মারা শুরু করেন। অধ্যক্ষ সিরাজকে মারতে মারতে এ সময় আসামিদের কেউ কেউ বলতে থাকেন, ‘তোর কারণে আমাদের ফাঁসি হয়েছে।’

এ সময় আসামি মো. জোবায়ের, জাবেদ হোসেন, মো. শামীম, প্রভাষক আফছার উদ্দিন, হাফেজ আবদুল কাদের কান্নায় চিৎকার করতে থাকেন। তারা বলতে থাকেন, আত্মহত্যাকে হত্যা বলা হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে আসামিদের শান্ত করেন। এরপর প্রিজনভ্যান চলা শুরু করে কারাগারের দিকে।

 এদিন রায় ঘোষণার জন্য সকাল ৯টার দিকে আসামিদের আদালতে নেয়া হয়। আদালত চত্বরে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্র ও বাদীপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের এ দিন ধার্য করেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ।

গত ১০ এপ্রিল এ মামলা পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এ হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৯ জুন পিবিআই ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। ২৭ জুন হতে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মোট ৬১ কার্যদিবসে ৮৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২৪ অক্টোবর রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত।

রায়কে ঘিরে বুধবার রাত থেকে নুসরাতদের বাড়িতে পাহারা জোরদার করা হয়। প্রহরায় নিয়োজিত আগের তিনজন পুলিশ সদস্যের সঙ্গে আরও ৯ সদস্যকে যুক্ত করা হয়। আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিত লোকজনও রেজিস্ট্রার খাতায় সই না করে ওই বাড়িতে ঢোকার অনুমতি পাননি। গত ৭ এপ্রিল থেকে বাড়িটিতে পুলিশ পাহারা বসানো হয়।

এদিকে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে জেলা সদর ও সোনাগাজীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশের নিরাপত্তাচৌকি বসানো হয়। এছাড়া র‌্যাব সদস্যদের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও টহল দেয়।

উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। ২৭ মার্চ ফেনীর সোনাগাজী ইসলামীয়া ফাজেল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করে তার মা। ২৮ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেট এএসএম এমরানের আদালতে নুসরাত তার উপর যৌন নিপীড়নের জবানবন্দি প্রদান করে। একই দিন সোনাগাজী থানা পুলিশ অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে। পরে ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়। ফেনীর অন্য কোন মামলা এত দ্রুততর সময়ে রায় হয়নি বলে মন্তব্য করেন পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট হাফেজ আহম্মদ।

 টিআর/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি