ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিকের একাদশ পর্ব

গুজব ঠেকাতে ভূমিকা রাখতে পারে মূলধারার গণমাধ্যম

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৪, ১৬ জুলাই ২০২০ | আপডেট: ১০:৪৫, ১৬ জুলাই ২০২০

বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিকের একাদশ পর্বে অতিথিরা

বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিকের একাদশ পর্বে অতিথিরা

Ekushey Television Ltd.

গুজব মোকাবেলায় দেশের মুলধারার গণমাধ্যম জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে, এমনটা বলেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত ওয়েবিনারের বক্তারা।

মঙ্গলবার (১৪ জুলাই ) রাতে করোনাকালীন সংকট নিয়ে বিশেষ ওয়েবিনার ‘বিয়ন্ড দ্যা প্যানডেমিক’ এর একাদশ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এবারের পর্বের আলোচনার বিষয় ছিলো ‘করোনা সংকট মোকাবেলায় সঠিক তথ্যপ্রবাহ’। এই সঙ্কটে গণমাধ্যমে সঠিক তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত, করোনা বিষয়ে সঠিক তথ্য প্রচার ও সরবরাহ, দুর্যোগ মোকাবিলায় সঠিক তথ্য প্রচারে গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়। আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ অ ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি প্রচারিত হয় পর্বটি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি'র বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মাননীয় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্‌মুদ, এমপি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, এমপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ. আরাফাত, একাত্তর টিভির কারেন্ট এ্যাফেয়ার্স এডিটর মিথিলা ফারজানা ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-এর সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও তথ্য মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ এমপি বলেন, করোনা সংকট শুরুর পর থেকেই যখনই প্রবাসীরা দেশে আসছিলো তখন তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টানে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিলো। মানুষের ঘনত্ব বিবেচনায় বাংলাদেশ অন্য দেশের তুলনায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম। সব কিছু বন্ধ করে দেয়ার পর খেটে খাওয়া মানুষের কথা বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরকারের পক্ষ থেকে ব্যপক ত্রান কার্যক্রম শুরু করেছিলেন যা এখনও চলমান আছে। প্রায় ৭ কোটি মানুষকে এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। একই সাথে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ পরিবারের কাছে ত্রান সহায়তা পৌছে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমার সুরক্ষা আমার হাতে এই স্লোগানকে সামনে রেখে আমাদের প্রচেষ্টা ছিলো মানুষের কাছে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করা। সংবাদপত্র ও টেলিভিশনের মাধ্যমে জনগন যাতে নিজেকে সুরক্ষা রাখতে পারে, সচেতন রাখতে পারে, সেই তথ্যটা পৌছানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সচেতনতামূলক প্রচারনা এবং গুজবের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য প্রচার করা হয়েছে। সেই সাথে সংকট কালে বিরোধী দলের মানুষের পাশে না থেকে উলটো চলার রাজনীতিরও সমালোচনা করেন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক এমপি বলেন, বিশ্বের সকলকে এই সময়ে দুইটি মহামারির মোকাবেলা করতে হচ্ছে, একটি করোনা ভাইরাস মহামারি অপরটি মিথ্যা অপপ্রচারের মহামারি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার এইদুটি সংকটের সাথে সাথে আম্পান নামের একটি ঘুর্নিঝড়ের সাথেও মোকাবেলা করতে হয়েছে। আমরা সংকটের শুরুতেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছিলাম যেখানে করোনা সংকট মোকাবেলায় জনগনকে সচেতন করতে এবং কোন এলাকা ঝুকিপূর্ন, পাবলিক প্রেসক্রিপশন, কোন এলাকায় হাপাতালের সংখ্যা কত ও সেলফ টেস্ট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ছিলো।

তিনি আরো বলেন, সারাদেশে মানুষের দোরগোড়ায় ইনটারনেট পৌছে যাওয়ার ফলে অবাধ তথ্য প্রবাহের মাধ্যমে করোনা সংকট মোকাবেলা সহজ হয়েছে। অনিবন্ধিত কোন ওয়েবসাইট বা নিউজ সাইটের কোন তথ্য জেনো মানুষ বিশ্বাস না করে সে ব্যাপারে সকলকে সচেতন থাকতে আহবান জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সঠিক তথ্য সমাজে আলোর ভূমিকা পালন করে। এই করোনা সংকটের সময় সঠিক তথ্যই আমাদের পথ দেখাচ্ছে, তথ্যভ্রান্তির এই যুগে বস্তুনির্ভর তথ্যই আমাদের আলোর পথে নিয়ে যেতে পারে। সাধারন মানুষ সঠিক তথ্য পেতে গনমাধ্যমের উপর নির্ভর করে থাকে, এখানে তথ্যের উৎস থেকে যদি সরাসরি তথ্যটা গনমাধ্যমে প্রদান করা হয় তাহলে ভথ্যবিভ্রান্তটা কমে যায়।

তিনি আরো বলেন, করোনা সংকটের সময়ে আমরা দেখেছি কোন কোন অনিবন্ধিত সংবাদপত্র থেকে বা রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সরাসরি অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এই অপতথ্য যাতে মানুষের দোরগোরায় না পৌছায় সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ ও গনমাধ্যমকর্মীদের আরো গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালনের আহবান জানান তিনি।

সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ. আরাফাত বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিগুলোর জনগনের মধ্যে গুজব তৈরী এবং তা ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে সবসময় একটা উপযোগিতা আছে। এখন নতুন ভাবে তারা সোশাল মিডিয়া এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে ব্যবহার করার চেষ্টা করে। মূলধারার গণমাধ্যম গুজব ঠেকানোর জন্য এসব অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। মূলধারার গণমাধ্যমের সত্য ঘটনার আলোকে সঠিক তথ্য তুলে ধরা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ গণমাধ্যমের সঠিক তথ্য উপস্থাপনের স্বাধীনতা ছাড়া গনতন্ত্র স্থাপিত হবে না। গনতন্ত্রের জন্যই আমাদের গণমাধ্যম কে প্রয়োজন।

একাত্তর টিভির কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর মিথিলা ফারজানা বলেন, কিছু সংবেদনশীল ও স্পর্শকাতর বিষয়কে অনেক গণমাধ্যমে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে সেটা কাঙ্ক্ষিত ছিল না এবং এই ধারা বা প্রবনতা নতুন নয়। গণমাধ্যমকে সঠিক তথ্য দিয়ে একটি ঐক্যমতে রাখা বা বিভ্রান্ত হতে না দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করাটাও একধরনের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করার পূর্বে তথ্য যেন কোনভাবে পাকানো না হয় সেটির জন্যও আমাদেরকে ব্যবস্থা নিতে হবে। যে কোন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিতকরনে এবং তা একযোগে সকল গন মাধ্যম কে জানানোর জন্য একটি সুনির্দিষ্ট উৎস থাকা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, 'তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের যে সুফল আমরা ভোগ করতে পারি তার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বিশেষ করে আপনারা খেয়াল করে থাকবেন যে, স্বাধীনতার পরাশক্তি এবং বাংলাদেশ সরকারের বিরোধী যারা আছেন তারা সবসময় চিন্তা করে থাকেন বাংলাদেশ একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা যায় কিনা। সেইসব উদ্দেশ্য নিয়ে যারা দিনযাপন এবং রাজনীতি করে থাকেন তারা এগুলো সৃষ্টি করে থাকেন এবং নির্দিষ্ট কোনো উদ্দ্যেশ্য কে বাস্তবায়ন করার জন্য গুজব সন্ত্রাসের সৃষ্টি হয়। আপনারা দেখে থাকবেন যে কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে এই গুজব মারাত্বক রুপ সৃষ্টি হয়েছিলো।

তিনি আরো বলেন, যেহেতু তথ্য প্রযুক্তির এই ব্যবহারের ফলে গুজব সন্ত্রাস কিংবা গুজবের এই সমস্যাটা চলে আসছিলো বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বৃহত্তর ছাত্র সংগঠন হিসেবে কংবা তরুণদের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে প্রথম থেকে গুজব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান করেছে এবং আমরা বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফরমে যে গুজব গুলো সৃষ্টি হচ্ছে সেগুলোর সঠিক খবর মানুষের মাঝে ছড়ানোর জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা এভাবে ফেসবুকের গ্রুপের মাধ্যমে সঠিক তথ্য ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে থাকি। এছাড়া বিভিন্ন পোস্টার বানিয়ে, মাইকিং করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সারা দেশে গুজব সন্ত্রাসকে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে।

পর্বটি আরো প্রচারিত হয় বিজয় টিভির পর্দায় ও ফেসবুক পেইজে। পাশাপাশি বিডিনিউজ২৪, সমকাল, ইত্তেফাক, ভোরের কাগজ, যুগান্তর, বাংলা নিউজ২৪, জাগো নিউজ২৪, বার্তা২৪, সারা বাংলা, অপরাজেয় বাংলা, বাংলাদেশ জার্নাল এবং চ্যানেল আই'র ফেসবুক পেইজেও প্রচারিত হয়।

এমবি//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি