ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৩ মে ২০২৫

জরিমানা করার সুযোগ রাখছে না স্বপ্ন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:০১, ২৫ মে ২০১৮ | আপডেট: ২২:২৩, ২৫ মে ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

চলছে পবিত্র রমজান মাস। এই সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন সময় পরিচালনা করা অভিযানে জরিমানা করা হয় এসিআই গ্রুপের সুপার শপ স্বপ্ন’কে। তবে বিভিন্ন সংস্থার বিভিন্ন অভিযোগ পর্যালোচনা করে নিজেদের ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনে স্বপ্ন। এসব পরিবর্তনের ফলে ভ্রাম্যমান আদালতের জন্য জরিমানা করার আর সুযোগ রাখছে না এই প্রতিষ্ঠানটি।  

রমজান মাস শুরু হওয়ার পর থেকেই স্বপ্নের বিভিন্ন আউটলেটে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে থাকে র‍্যাব, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট (বিএসটিআই), জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। এগুলোর মধ্যে গত রবিবার বনানীর একটি আউটলেটে অভিযান শেষে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয় প্রতিষ্ঠানটিকে।

মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি, ওজনে কম দেয়া, নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রিসহ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য মজুতের অভিযোগে র‍্যাবের নির্বাহী পরিচালক সারোয়ার আলম স্বপ্ন’কে ঐ জরিমানা করেন। বিষয়টি এতটা গুরুতর ছিল যে, আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এর প্রতিবাদ জানান এসিআই গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক (স্বপ্ন) সাব্বির হাসান নাসির। এমনকি এমন অভিযানের পেছনে কোন কুচক্রী মহলের ‘হাত’ আছে উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটিকে হয়রানি বন্ধ করা না হলে ব্যবসা বন্ধ করারও ঘোষণা দেন তিনি।

তবে যেসব অভিযোগে জরিমানা করা হয় বিষয়টিকে সেগুলোকে কাটিয়ে উঠেছে প্রতিষ্ঠানটি। স্বপ্ন দাবি করছে, পরিস্থিতি না বুঝেই স্বপ্নকে জরিমানা করা হয়েছে। অনেকটা ‘অবিবেচক’ এর মতো এ জরিমানা করা হয়। সংস্থাগুলো কী চাচ্ছিল তা একরকম অজানা ছিল তাদের কাছে। তবে জরিমানার বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে নিজেদের ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর দাবি করে স্বপ্ন।

প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির ইটিভি অনলাইনকে বলেন, “কিছু কিছু বিষয় আছে যা আমরা বলতে গেলে জানতামই না। যেমন ধরুন কোন একটি পণ্যের বিএসটিআই সার্টিফিকেট থাকার পরেও ‘টেস্টিং রিপোর্ট’ থাকা লাগবে এটা আমরা জানতাম না। এখন অভিযানে এসে সংস্থাগুলো আমাদের কাছে এই দলিলটি চায়”।

“আরও একটি উদাহরণ দেই। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে আমাদেরকে জরিমানা করা হয়। কিন্তু যে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য তারা পেয়েছেন তা আমাদের ‘ব্যাকস্টোর’ -এ পেয়েছেন। সেখানে আমরা পণ্য বিক্রির জন্য রাখিনি। রেখিছিলাম পণ্যগুলো সরিয়ে অন্যত্র নেওয়ার জন্য। বিক্রির জন্য হলে তো মূল স্টোরের মধ্যে রাখতাম। তাহলে এটা আমাদের বিক্রির চেষ্টা কীভাবে হল?”

অভিযান পরিচালনার ধরণ ও প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সাব্বির হাসান। তিনি বলেন, “এক এক সংস্থা একেক ধরনের বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাদের কোন ‘স্ট্যান্ডার্ড মেথড’ নেই। যে কারণে আমাদের বুঝতে সমস্যা হয় যে, তারা আমাদের কাছে ঠিক কী চায়। আর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন,২০০৯ এর যে ৫১ ও ৫২ ধারায় আমাদের বনানীর আউটলেটে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয় সেই ধারায় সর্বোচ্চ জরিমানা করার পরিমাণ উল্লেখ আছে যথাক্রমে ৫০  হাজার ও দুই লক্ষ টাকা। তাহলে এই ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা কীভাবে করা হলো? ”

তবে এসব অভিযান পর্যালোচনা করে এসব বিষয় মোকাবেলা করার জন্য নিজেদের ব্যবস্থায় আনা পরিবর্তনের কথা জানায় প্রতিষ্ঠানটির এই উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। স্বপ্নের নিজেদের এসব পরিবর্তনের ইতিবাচক ফলাফলও পাওয়া গেছে। সর্বশেষ স্বপ্নের চারটি আউটলেটে করা অভিযানে কোন জরিমানা করতে পারেনি বিভিন্ন সংস্থা। গত বুধবার ধানমন্ডি ২৭ এর আউটলেটে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে র‍্যাব-৫। অভিযান শেষে স্বপ্নের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি র‍্যাব। গতকাল বুধবার শাহজাহান রোডের আউটলেটে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অভিযান এবং সর্বশেষ আজ শুক্রবার মিরপুর ১১ এবং ১২ নম্বর সেকশনে আদালত পরিচালনা করে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এসব অভিযানের কোনটিতেই জরিমানা করার মতো কোন আলামত পায়নি সংস্থাগুলো।   

সাব্বির হাসান বলেন, “কিছু কিছু বিষয় আমরা এখন বুঝতে পারছি। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ব্যাকস্টোরে থাকলেও তাদের আপত্তি। আমরা এখন আর তা ব্যাকস্টোরেও রাখি না। আমরা আলাদা একটি ওয়্যারহাউজ করেছি। সকল আউটলেটের মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য সরাসরি সেখানে পাঠিয়ে দেই। এতে আমাদের খরচ ও বিনিয়োগ বাড়ছে। কিন্তু কী করব? সরকার যদি এমন চায় তাহলে এমনই। আমরা শুধু চাই আমাদের গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা ও সর্বোচ্চ মানের পণ্য সরবরাহ করতে। পাঁচ লাখেরও বেশি গ্রাহক আমাদের ওপর আস্থা রাখেন। আমরা তার মূল্য আগেও রাখার চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতেও রাখব”।

 

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি