তুরস্কে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা ব্যর্থ
প্রকাশিত : ১৬:০৩, ১৬ জুলাই ২০১৬ | আপডেট: ১৬:০৩, ১৬ জুলাই ২০১৬
তুরস্কে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে সেনাবাহিনীর একাংশের। ডানপন্থী সরকারকে হটিয়ে কারফিউ জারি করে রাতেই ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দেয় তারা। তবে, প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান এই চেষ্টাকে ব্যর্থ জানিয়ে বিপথগামী সৈন্যদের অভু্যুত্থানের দাবি নাকচ করে দেন। অভ্যুত্থান ঠেকাতে গিয়ে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে মারা গেছে ৬০ জন। ৭৫৪ সৈন্য আত্মসমর্পনের পর, গোটা দেশের পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসে।
শুক্রবার সন্ধ্যার আগে থেকেই ইস্তাম্বুলে গুঞ্জণ রটে যায়, রাস্তাঘাটে বেরিয়ে পড়েছে সৈন্যদল। ভয়ঙ্কর কথা হলো সবাই সশস্ত্র। কোথাও কোথাও ট্যাংকও নেমেছে। গোলাগুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বুঝতে বাকি থাকে না অভ্যুত্থানের চেষ্টা সেনাবাহিনীর। কয়েক ঘন্টার মধ্যে পরিস্কার হয়ে যায়, কিছু বিপথগামী সৈন্য এই অভ্যুত্থান চালাতে চাইছে। মধ্যরাতে আকাশে খুব কাছ দিয়ে উড়তে থাকে যুদ্ধবিমান। ক্ষমতা নেয়ার দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সামরিক আইন ও কারফিউ জারি করে সেনারা। সরকারি বিভিন্ন ভবনের নিয়ন্ত্রণে নেন তারা।
খবর পেয়ে অবকাশ থেকে দ্রুত ইস্তানবুলে ফেরেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। অভ্যুত্থানকারীদের দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে সাধারণ জনতাকে রাস্তায় নেমে প্রতিরোধের আহ্বান জানান তিনি।
প্রেসিডেন্টের ডাকে সাড়া দিয়ে হাজারো সমর্থক ইস্তাম্বুল, আঙ্কারাসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ শুরু করে। সেনাদের ট্যাঙ্ক আটকে রেখে স্লোগান দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়। তাকসিম স্কয়ার ও পার্লামেন্টের বাইরে বিস্ফোরণ হয়। প্রেসিডেন্ট ভবনের সামনে সামরিক বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপ করা হয়। বাড়তে থাকে হতাহতের সংখ্যা। বার্তা সংস্থা সিএনএন ও আল হুরিয়াতের ভবনে ঢুকে কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রাখে সেনা সদস্যরা। পরিস্থিতি সামলাতে আঙ্কারায় নো ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হয়। বন্ধ করে রাখা হয় ইস্তানবুল বিমানবন্দর।
জনতার বিক্ষোভের মুখে আত্মসমপর্ণ করতে বাধ্য হয় সেনা সদস্যরা। পুলিশি অভিযানে অভ্যুত্থানের অংশ নেয়া শত শত সেনা সদস্যকে আটক করা হয়।
সকালের আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট এরদোগান। ভারপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় উমিত দানদারকে। পরে অবশ্য আঙ্কারা বিমান ঘাঁটি থেকে উদ্ধার করা হয় সেনাপ্রধান জেনারেল হুলুসি আকারকে।
এদিকে সেনাদের অভ্যুত্থানের চেষ্টাকে অগণতান্ত্রিক জানিয়ে এরদোগানকে সমর্থন জানান বিশ্বনেতারা।
আরও পড়ুন