ঢাকা, রবিবার   ১২ মে ২০২৪

‘সব পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে’

প্রকাশিত : ২০:২০, ২৯ মার্চ ২০১৯

আমরা শেষ হয়ে গেছি, আমাদের অফিসের কোনো কিছুই নেই। সব আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। টাওয়ারের ৮, ৯, ১০ ও ১১ তলায় শুধু ছাই আর ছাই। ২১ তলায় রক্তের স্পষ্ট দাগ।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় এফআর ভবনে পুলিশ টিমের সঙ্গে নিজ নিজ অফিসের পরিস্থিতি দেখার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊধ্বতন কর্মকর্তারা। এ কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা।

কান্নায় ভেঙ্গে পড়া ডার্ড গ্রুপের কর্মকর্তা শামীম আহমেদ নিজ অফিস পরিদর্শনের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, পুলিশের সঙ্গে যতই উপরে উঠতে থাকি, ততই গা শিউরে উঠছিল। ভবনের প্রথম ফ্লোর থেকেই ধোঁয়ার গন্ধ। যতই উপরে উঠছিলাম ততই ধোঁয়ার গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসছিল। নাকে রুমাল চেপে কোনোমতে কষ্ট করে উপরে উঠতে থাকি।

৮, ৯, ১০ ও ১১ তলায় গিয়ে দেখি আগুনে পুড়ে সব ছাই হয়ে গেছে। অবশিষ্ট বলতে কিছুই নেই। পরে আমাদের অফিস ১২, ১৩, ১৬ ও ১৯ তলায় যাই। সেখানে দেখতে পাই আমাদের অফিসের সব আসবাবপত্র পুড়ে গেছে, তবে লকার ও ড্রয়ারে টাকা-পয়সা অক্ষত অবস্থায় পেয়েছি।

শামীম আহমেদ বলেন, ২১ তলায় যেতেই মাথা ঘুরে পড়ে যাবার দশা। ওই ফ্লোরের চারদিকে শুধু রক্তের দাগ। চারদিকে মানুষের জুতা ও আসবাবপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। দেখলেই বোঝা যায় এখানে মানুষ বাঁচার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছিল, শেষ পর্যন্ত তাদের অনেকেই বাঁচতে পারেননি।

তিনি বলেন, আমি ২১ তলায় ভাতের চামচ ও খাবারের বক্স ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখেছি। অনেকে হয়ত ওই সময় দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। আগুন লাগার পর পর জীবন বাঁচাতে এসব রেখে পালিয়েছেন।

শুধু শামীম নন, ভবন পরিদর্শন শেষে নেমে আসা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের অনেকেই সর্বহারার মতো কান্নায় ভেঙে পড়েন। ফোনে অন্যদের বলছেন, ‘আমরা শেষ হয়ে গেছি, আমাদের অফিসের কোনো কিছুই নেই। সব আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে’।

এদিকে এফআর ভবনে পুলিশ টিমের সঙ্গে নিজ অফিসের অবস্থা পরিদর্শন শেষে আসিফ ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা জিলানী বলেন, আমাদের অফিসের কোনো কিছুই অবশিষ্ট নেই, সব পুড়ে গেছে। কম্পিউটার, টেবিল, চেয়ার, সোফা কোনো কিছুই অক্ষত নেই। সব পুড়ে ফ্লোরে মিশে গেছে। টাকা-পয়সা কোনো কিছুরই সন্ধান মেলেনি।

এর আগে বনানীর অগ্নিদগ্ধ এফআর টাওয়ারে অবস্থিত বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় ভেতরে ঢোকে পুলিশের ২২টি টিম। প্রায় দেড় ঘণ্টার এই পরিদর্শন শেষে তারা বের হয়ে আসেন। তার আগে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স আরএফ টাওয়ারের সার্বিক দায়িত্ব পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি