ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

তিন দফা দাবিতে নার্স-টেকনোলজিস্টদের প্রতিবাদ সমাবেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৫৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

“ওয়ান আমব্রেলা কনসেপ্ট বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা, উচ্চ আদালতের রায় ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে নার্সিং কাউন্সিলের নার্সদের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যা-বানোয়াট তথ্য পরিবেশন, অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক দাবির প্রতি তীব্র প্রতিবাদ, নিন্দা ও ঘৃণা জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ” অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাব সম্মুখে সোনার বাংলা নার্সেস এসোসিয়েশনের আয়োজনে ও বাংলাদেশ আওয়ামী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পরিষদের সার্বিক নির্দেশনায় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় সোনার বাংলা নার্সেস এসোসিয়েশন এর সভাপতি আলমগীর রানা বলেন, নার্সিং কাউন্সিলের নার্সদের অভিযোগ- কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নার্সিং কোর্স ৬ মাসের, যা সস্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে ডিপ্লোমা নার্সিং কোর্স ৪ বছরের। যা বাংলা, ইংরেজি, পদার্থ, রসায়ন ও জীব বিজ্ঞানসহ নার্সিং কাউন্সিল-এর ডিপ্লোমা সিলেবাসের সাথে সম্পূর্ণ মিল রয়েছে। তারা বলছেন, এইচএসসি পড়ে তারপর ডিপ্লোমা করে, আর আমরা এসএসসি পড়ে চার বছরের ডিপ্লোমা করি, যেখানে এইচএসসি বিজ্ঞান এর সকল বিষয় পড়ানো হয়। তারা বলে, আমরা মেডিকেল ও নার্সিং বিষয় বাংলা মিডিয়ামে পড়ি, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। মূলত এখানে এইচএসসি বিজ্ঞানের পাঁচটি মৌলিক বিষয় বাংলা, পদার্থ, রসায়ন ও জীব বিজ্ঞান বাংলায় এবং ইংরেজি, মেডিকেল ও নার্সিং বিষয় ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানো হয় ও পরীক্ষা নেয়া হয়। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের সিলেবাস অন্তর্জাতিক মানের, সিজিপিএ সিস্টেমে ফলাফল হয়। আমরা ৪ বছরে ৪৪টি বিষয়ে ৭২০০ নম্বরে মোট ১৪৪ ক্রেডিট অর্জন করি এবং এক বছর বাধ্যতামূলক সরকারি হাসপাতালে প্রশিক্ষণ করি। আর কাউন্সিলের ৩ বছরে ডিপ্লোমা নার্সিং কোর্সে ৩৫টি বিষয় ৫৭৫০ নম্বরে ১১০ ক্রেডিট পড়ানো হয়। কিন্তু ওদের প্রশিক্ষণ বিষয়ক কোনও সনদ নেই, আমাদের রয়েছে।

মেডিকেল টেকনোলজি ও নার্সিং জটিলতা নিরসন আন্দোলনের মুখপাত্র এবং স্বাধীনতা ডিপ্লোমা ফিজিওথেরাপিস্ট পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এমকে পারভেজ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে গত ১৭ জানুয়ারী ২০২১ তারিখে উক্ত বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সভাপতিত্বে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নার্সিং ছাত্র ছাত্রীরা কাউন্সিলে রেজিষ্ট্রেশন পরীক্ষার সুযোগ পাবে। মেডিকেল টেকনোলজি কোর্স রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদ এর সমতুল্য হবে মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই মতে, গত ২৫ জানুয়ারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী স্বাক্ষরিত রেজুলেশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের মেডিকেল টেকনোলজি ও নার্সিং ছাত্র-ছাত্রীদের সংশ্লিষ্ট সকল মামলা তুলে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ছাত্র ছাত্রীরা সংশ্লিষ্ট সকল মামলা তুলে গত ১২/০১/২০২১ তারিখে সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ বরাবর মামলা উত্তোলনের কাগজ পত্রসহ দ্রুত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার তাগিদ দেয়। কিন্তু নার্সিং কাউন্সিল কর্তৃক ১৪/০২/২০২১ তারিখে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের নার্সিং ডিপ্লোমাদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে ফরম পূরণের জন্য ২২ মার্চ ২০২১ সময় বেধে দেওয়া হলেও প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে উক্ত বিজ্ঞপ্তি ১৬/০২/২০২১ তারিখ বাতিল করে।

এসময় উপস্থিত বক্তাগণ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে তিনটি দাবি তুলে ধরেন-
১- ডিপ্লোমা নার্সিং ছাত্রছাত্রীদের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে কমপ্রিহেনসিভ লাইসেন্স পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে, আমাদের সম্পৃক্ত না করে কোনওভাবেই কাউন্সিল পরীক্ষা নেওয়া যাবে না।

২- ডিপ্লোমা ইন্টিগ্রেটেড মেডিসিন পাশকৃতদের বিএসসি ফিজিওথেরাপি কোর্সে ভর্তির সুযোগ প্রদানসহ উচ্চশিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা ফিজিওথেরাপিস্ট সমমান প্রদান করতে হবে।

৩- ফার্মেসি পাশকৃতদের ফার্মেসী কাউন্সিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিতে হবে।

উক্ত দাবি বাস্তবায়নে দুই সপ্তাহ সময় বেধে দিয়ে হুশিয়ারী দিয়ে বক্তারা এসময় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ছাত্র-ছাত্রীদের সকল জটিলতা অতিদ্রুত নিরসন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

এসময় কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পরিষদের সদস্য সচিব শামীম শাহ, সোনার বাংলা নার্সেস এসোসিয়েসন এর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনসহ প্রায় ১ হাজার ছাত্র ছাত্রী। 

এনএস/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি