ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৯ এপ্রিল ২০২৫

করোনা থেকে সুস্থতার হার ৩৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৩৮, ১৫ জুন ২০২০

Ekushey Television Ltd.

দেশে এ পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩৪ হাজার ২৭ জন। শনাক্তের বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ২১ দশমিক ৪০ শতাংশ।

সোমবার (১৫ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।

অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার বেশি দেখানো হয়েছে কারণ হাসপাতালে ছাড়াও যারা বাড়িতে থেকে লক্ষণ উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন তাদের নামও আজ তালিকায় আইইডিসিআর যোগ করেছে। গতকাল পর্যন্ত সুস্থ ছিলেন ১৮ হাজার ৭৩০ জন।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৬ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। আগের দিন মারা গিয়েছিলেন ৩২ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ২০৯ জন।

শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ দশমিক ০১ শতাংশ কম।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৯৯ জনের দেহে নতুন করে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৪২ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল শনাক্ত হয়েছিল ৩ হাজার ১৪১ জন।

নমুনা পরীক্ষায় আজ শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৬১ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ০৪ শতাংশ কম। দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে। বর্তমানে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ৯০ হাজার ৬১৯ জন রোগী রয়েছেন।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ৭৩৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৪ হাজার ৬৯০টি। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৪৩টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৫৮টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৩৮টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৪ হাজার ৫০৫টি। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৫৩৩টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে মোট ৫ লাখ ১৬ হাজার ৫০৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।

তিনি জানান, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩২ জন পুরুষ এবং ৬ জন নারী। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৩ জন রয়েছেন। অঞ্চল বিবেচনায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১২ জন, সিলেট বিভাগের ৬ জন, রংপুর বিভাগের ১ জন এবং বরিশাল বিভাগের ১ জন রয়েছেন। ৩৮ জনের মধ্যে হাসপাতালে মারা গেছেন ২৫ জন, বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১১ জন এবং মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয় ২ জনকে।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৫৩৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২৯৫ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে আছেন ১৫ হাজার ৮৪৪ জন। এখন পর্যন্ত মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫ হাজার ৮১৮ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১০ হাজার ২৬ জন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারিন্টিনে রাখা হয়েছে ২ হাজার ৯২২ জনকে। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ২৩ হাজার ৩৫৮ জনকে কোয়ারিন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারিন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৭ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়পত্র পেয়েছেন ২ লাখ ৬১ হাজার ৬৮৯ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারিন্টিনে আছেন ৬১ হাজার ৬৬৯ জন। দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টিনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।

অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) এ পর্যন্ত সংগ্রহ ২৪ লাখ ৮৫ হাজার ১৪২টি। ২৪ ঘন্টায় বিতরণ হয়েছে ২ হাজারটি। এ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২৩ লাখ ৯ হাজার ৯২৫টি। বর্তমানে ১ লাখ ৭৫ হাজার ২১৭টি পিপিই মজুদ রয়েছে। তিনি জানান, ২৪ হাজার ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী যা আগে সংগৃহিত তালিকায় যুক্ত ছিল, এটাকে বাদ দেয়া হয়েছে। কারণ ক্রাইটেরিয়া ফুলফিল না করায় সার্ভে কমিটি তা গ্রহণ করেননি।

গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৬৫ হাজার ১৮৮টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ১৩ লাখ ১০ হাজার ৮২০টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৩৪৯ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ৬ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।

ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৬৮২ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ১৮ হাজার ৯২১ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৪ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ হাজার ৯১ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৫৫ হাজার ৪৩৯ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪শ’ জন এবং এ পর্যন্ত ১২ হাজার ৫২৬ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৪ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৬ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ লাখ ৯০ হাজার ৭০৮ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ২৮১ জন এবং এ পর্যন্ত ৪ লাখ ২৭ হাজার ৬৩০ জন বলে তিনি জানান। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সর্বদা মুখে মাস্ক পরে থাকা, সাবান পানি দিয়ে বারবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাইরে গেলে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়। তিনি বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।

এসি

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি