ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

করোনার দ্বিতীয় দফা আঘাতে ধুকছে ইউরোপ 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১০, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

কিছুটা বিরতি দিয়ে আবারও করোনা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ইউরোপের দেশগুলোতে। স্পেন, ফ্রান্স, ব্রিটেনসহ প্রত্যেকটি দেশে দ্বিতীয় দফা আঘাত হেনেছে ভাইরাসটি। যেখানে প্রতিদিনই কয়েক হাজার আক্রান্ত হচ্ছেন। 

গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে চীনের উহানে শুরু হওয়া ভাইরাসটি পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে এ বছরের শুরুতে। যা বেইজিংয়ের পরই ইউরোপে চরম আঘাত হানে। ইতালিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর তা একে একে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও স্পেনে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। 

তবে ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হলেও স্বাভাবিক চিকিৎসায় গত জুনের দিকে এসব দেশে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছিল ভাইরাসটি। কিন্তু, লকডাউন উঠিয়ে নেয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ার পরই করোনা দ্বিতীয় বিস্তার লাভ করে। 

এর মধ্যে ফ্রান্সে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা দেখা দিয়েছে। দেশটিতে গড়ে দশ হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে। গত একদিনেও প্রায় ১০ হাজার মানুষের শরীরে ভাইরাসটি চিহ্নিত হয়েছে। এতে করে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ প্রায় ৫ হাজার। মৃত্যু হয়েছে আরও ৪৬ জনের। এ নিয়ে প্রাণহানি বেড়ে ৩১ হাজার ৪৫ জনে ঠেকেছে।

এমতাবস্থায় দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বোর্ডক্স ইউনিভার্সিটি হসপিটালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) প্রধান ডা. অলিভার জোনস-বোইয়া বলেছেন, ‘মহামারির প্রথম ঢেউ মোকাবিলা করাটা ছিল স্প্রিন্টের মতো, দ্বিতীয়টি হবে ম্যারাথনের মতো।’ ফ্রান্সে করোনার পুনরুত্থানের ব্যাপারে ধারণা দিতে গিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি। 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, লকডাউন প্রত্যাহার করে নেয়ার সুবিধা নিয়ে ফ্রান্সের তরুণরা অবাধ সামাজিক চলাফেরা করায় প্যারিস, বোর্ডক্স ও ভূ-মধ্যসাগরীয় উপকূলীয় মার্সেলের মতো বড় বড় শহরগুলোর হাসপাতালে করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় ফরাসি হাসপাতালগুলো এখন দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। এমনকি নতুন করে আইসিইউ সংকটাবস্থায় পড়তে যাচ্ছে বলেও বলা হচ্ছে।

গোটা ফ্রান্সজুড়েই হাসপাতালের কর্মীরা এখন প্রথম ধাপের চেয়ে বেশি করোনা রোগীর মুখোমুখি হচ্ছেন। করোনা রোগীদের উপসর্গ কমিয়ে আনতে বোর্ডক্স ইউনিভার্সিটি হসপিটাল কর্তৃপক্ষ স্টেরয়েড ওষুধ মজুত ও ভেন্টিলেটর সেবা উন্নত করছে। এ দুই ব্যবস্থা করোনা রোগীদের লাইফ সাপোর্টে যাওয়ার হার কমিয়ে আনতে সহায়তা করে।

অবস্থা আরও সংকটাপন্ন স্পেনে। সবকিছু খুলে দেওয়ায় নতুন করে ভাইরাসটি তাণ্ডব চালাতে শুরু করেছে। সরকারের কঠোর পদক্ষেপ সহজ করার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। 

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডমিটারের নিয়মিত পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ১১ হাজার ১৯৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এতে করে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ১৪ হাজার ৩৬০ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণহানি ঘটেছে ২৩৯ জনের। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার ২৪৩ জনে ঠেকেছে। 

রাশিয়ায় করোনা হানা দিয়েছে এখন পর্যন্ত ১০ লাখ ৭৯ হাজারের বেশি মানুষের দেহে। এর মধ্যে গত একদিনেই আক্রান্ত সাড়ে ৫ হাজারের বেশি। প্রাণহানি ঘটেছে আরও ১৩২ জনের। এতে করে মৃতের সংখ্যা ১৮ হাজার ৯১৭ জনে দাঁড়িয়েছে। 

একইপথে যুক্তরাজ্য। যেখানে গত একদিনে প্রায় ৪ হাজার মানুষের দেহে করোনা হানা দিয়েছে। এতে করে সংক্রমিতের সংখ্যা ৩ লাখ ৭৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। বাড়ছে প্রাণহানিও। নতুন ২০ জনসজ প্রাণ ঝরেছে ৪১ হাজার ৬৮৪ জনের। 

এছাড়া, জার্মানি, ইতালি, ইউক্রেইন, রোমানিয়া, বেলজিয়াম নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলো নতুন করে আঘাত হেনেছে করোনা। যা শিগগিরই ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।   

এআই//এমবি


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি