ঢাকা, শনিবার   ১৪ জুন ২০২৫

মায়ের অপেক্ষার অবসান, ৭ বছর পর আপন ঠিকানায় মাছুম

দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:২৬, ১৮ অক্টোবর ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

দীর্ঘ ৭ বছর পর নিখোঁজ মাছুমকে ফিরে পেয়েছে তার পরিবার।  সাতবছর পর মা পেয়েছেন প্রিয় সন্তানকে, খুশিতে পুরো পরিবারে।

মঙ্গলবার গাজীপুর থেকে তাকে উদ্ধার করে ঢাকার দোহারের বাসায় নিয়ে আসে তার মা ও পরিবারের সদস্যরা।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, সাতবছর আগে ঢাকার দোহারের দোহারপুরী এলাকা থেকে নিখোঁজ হন মাছুম। পরিবারের লোকজন খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান পায়নি। সোমবার গাজীপুরের হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী ফয়েজ আহমেদ দোহারে আসেন। রনি নামে এক যুবকের পরিবারের খোঁজে। দোহারের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেও ফয়েজ আহমেদ যখন রনির পরিবারের সন্ধান পাচ্ছিলেন না তখন ছুটে আসেন প্রিয়বাংলা নিউজ-২৪ এর কার্যালয়ে। 

তার দেওয়া তথ্য ও বর্তমান একটি ছবি দিয়ে পোস্ট দেন প্রিয় বাংলা নিউজ-২৪ এর সম্পাদক অমিতাভ অপু। এছাড়া ছেলেটির পরিবারের খোঁজ চেয়ে একটি পোস্ট করা হয়। পোস্ট দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রবাস থেকে এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে যুবকের পরিচয় নিশ্চিত করেন, তবে তার নাম মাসুম বলে জানান তিনি। 

এরপরে মাসুমের পরিবারের লোকজন লটাখোলা প্রিয়বাংলা নিউজ২৪ কার্যালয়ে ছুটে আসেন। মঙ্গলবার সকালে ব্যবসায়ী ফয়েজ আহমেদের সহায়তায় গাজীপুরের রাস্তার ফুটপাত থেকে অসুস্থ্য মাছুমকে উদ্ধার করে দোহারের চরকোসাই তার মামা বাড়িতে আনা হয়। 

ব্যবসায়ী ফয়েজ আহমেদ জানান, দেড় বছর ধরে মাসুমকে গাজিপুর চৌরাস্তায় দেখা যায়। তবে মাসুম শুধু তার নাম বলেছিল রনি, বাসা দোহারের জয়পাড়া বলতে পারলেও বাবা বা অন্য কারো নাম বলতে পারেনি। সারাদিন নানা জায়গায় থাকলেও রাতে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ঘুমাতো সে। দুইদিন ধরে জ্বর ছিল রনির। আমার দীর্ঘদিন ইচ্ছা ছিল মাসুম (রনি) কে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। সোমবার দোহারে এসে অনেক চেষ্টা করেও যখন মাসুমের পরিবারকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না, তখন প্রিয়বাংলা নিউজ২৪ এর অফিসে যোগাযোগ করি আমি। 

তাদের সহায়তায় দ্রুত রনির পরিবারের সন্ধান পেয়ে যাই। তবে তার নাম মাসুম বলেও জানতে পারি। মঙ্গলবার সকালে ওর পরিবারের কাছে মাসুমকে বুঝিয়ে দিয়েছি। সন্তান হারা মায়ের কাছে সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে পেয়ে আনন্দিত ব্যবসায়ী ফয়েজ আহমেদ।

মাসুম তার পরিবারের কাছে ফিরে এসেছে এমন সংবাদে খুশি নেটিজেনরা। যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছে ব্যবসায়ী ফয়েজ আহমেদ। 

নিজের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন মাছুমের মা মনোয়ারা বেগম। তিনি জানান, তার তিন মেয়ে আর এক ছেলের মধ্যে মাছুমই বড়। তার স্বামী রশিদ মোল্লা, মাছুম এবং বড় মেয়ে রুম্পা তিনজনই মানসিক রোগী। এক সময়ে প্রবাসে থাকলেও বর্তমানে অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোন রকম সংসার চালাচ্ছেন মাছুমের মা। তবে ছেলেকে কাছে পেয়ে খুশি তিনি।

মাসুম বাড়িতে ফিরলে পরিবারের সদস্যরা আনন্দে আপ্লুত হয়ে পড়েন। আশপাশের লোকজন খবর পেয়ে ভিড় করেন তার বাড়িতে। মাসুম ফিরে আশায় খুশি প্রতিবেশিরাও।

সামাজিক ও প্রশাসনিক সহযোগিতা পেলে মনোয়ারা বেগমের সংসারের অচল চাকা সচল হবে এমনই মনে করেন এলাকাবাসি।  

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি