ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

জেসমিনের মৃত্যু: কমিটির তদন্ত সম্পন্ন, ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:৪২, ১ জুন ২০২৩

র‌্যাব হেফাজতে নওগাঁর সদর উপজেলার চুন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক সুলতানা জেসমিনের (৪০) মৃত্যুর  ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত রির্পোট দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান।

বুধবার (৩১ মে) দুপুরে নওগাঁ সাকিট হাউসে গণমাধ্যম কর্মীদের এ তথ্য জানান তদন্ত কমিটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সসম্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খান।

এর আগে গত সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে নওগাঁর সার্কিট হাউজে এই তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। গত তিনদিনে তদন্ত কমিটি নিহত সুলতানা জেসমিনের ছেলে, ভাই, মামা, বাড়িওয়ালা, র‌্যাব সদস্য, অন্যান্য কর্মকর্তা, চিকিৎসক, পুলিশ সদস্য, প্রত্যক্ষদর্শীসহ ২০-২৫ জনের সঙ্গে কথা বলেছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দল।

তদন্তের শেষদিন বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত তদন্ত দল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজপাড়া থানা, নওগাঁ সদর জেনারেল হাসপাতাল, সদর থানাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমৃহ পরিদর্শন করেন। একইদিন সন্ধ্যার দিকে তদন্তকারী দল ঢাকার উদ্দেশে নওগাঁ ত্যাগ করেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কমিটির প্রধান মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এই বিষয়টির তদন্ত করছি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত রির্পোট দাখিলের চেষ্টা করবো। সুলতানা জেসমিনের (৪০) মৃত্যুর  ঘটনায় তার ছেলে, ভাই ও মামা, বাড়িওয়ালা, র‌্যাব সদস্যসহ ২০-২৫ জনের সঙ্গে কথা বলেছি।  গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমৃহ পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্তের খসড়া তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কমিটির সদস্যরা আবারো বসবো। কোন ল্যাপস থাকলে সেটি ফের তদন্ত করে দেখা হবে।

হাইকোর্টের এক আদেশের প্রেক্ষিতে গত ২২ মে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটির প্রধান করা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খানকে। কমিটি সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, নওগাঁর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং নওগাঁর পুলিশ সুপারের মনোনীত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

উল্লেখ্য, গত ২২ মার্চ সকালে অফিসে যাবার সময় জেসমিনকে আটক করে র‌্যাব-৫-এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল। স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে নিয়েই র‌্যাব এ অভিযান চালায়। এনামুল হকের অভিযোগ, জেসমিন ও আল আমিন নামের এক ব্যক্তি তার (এনামুল) ফেসবুক আইডি হ্যাক করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন বিভিন্নজনকে। এভাবে তারা প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন।

আটকের পরের দিন ২৩ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেসমিন মারা যান। 

এদিকে, জেসমিনের মামা নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক মুন্টু বলেন, গত ২২ মার্চ নওগাঁর মুক্তির মোড় থেকে জেসমিনকে র‌্যাব সদস্যরা আটকের পর নওগাঁ হাসপাতাল থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং দাফন কার্য সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত কখন কি কি ঘটেছে তার বর্ণনা শুনেছেন তদন্ত কমিটি। 

এছাড়া জেসমিনের বাসা থেকে জেসমিন ও  জেসমিনের বিরুদ্ধে মামলার বাদী রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার অফিসের যুগ্ম সচিব এনামুল হকের মধ্যকার বিভিন্ন অংকের টাকা লেনদেনের কাগজপত্র আমরা পেয়েছি। সেগুলো তদন্ত কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশে যে তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে আশা করছি, তারা নিরপেক্ষ তদন্ত করবেন এবং বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে ন্যায়বিচার পাব বলে আমরা আশাবাদী।’

এএইচ


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি