ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা

খালেদা জিয়ার সাজা বেড়ে ১০ বছর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৫, ৩০ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ১৪:২১, ৩০ অক্টোবর ২০১৮

পুরোনো ছবি

পুরোনো ছবি

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে দুদকের সাজা বৃদ্ধির আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার এ রায় দেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সকাল সাড়ে ১০টা এ রায় দেন।

এর আগে নিম্ন আদালত খালেদা জিয়াকে ৫ বছর কারাদণ্ড দিয়েছিল। সাজা কমাতে খালেদা জিয়া ও অন্য আসামিদের আপিল এবং সাজা বাড়াতে দুদকের পক্ষ থেকে করা আপিলের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার সাজা ১০ বছর করেন।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৩১ মিনিটে এজলাসে বসেন বিচারকরা। এরপর মাত্র তিন মিনিটেই রায়ের মূল অংশটি পড়ে আদালতের কার্যক্রম শেষ করেন তারা। আদালত বলেন, আমরা রায়ের অপারেটিভ অংশ ঘোষণা করব।

রায় ঘোষণায় প্রথমেই খালেদা জিয়ার পক্ষে খালাস চেয়ে করা আবেদন এবং অন্য আসামিদের সাজা কমানোর দুই আবেদন খারিজ করে দেন আদালত। পরে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে দুদকের করা রিভিউ আবেদন গ্রহণ করে আদালত খালেদা জিয়ার সাজা ৫ বছর বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করেন।

এসময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খানসহ বিপুলসংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। তবে খালেদা জিয়ার পক্ষে সিনিয়র কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।

রায়ের পর দুদুকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, বেগম জিয়া ছিলেন এই মামলার মুখ্য আসামি। সেই গ্রাউন্ডে তার সাজা বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছিল। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে খালেদা জিয়ার সাজা ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেছেন। ফলে মামলায় সব আসামির সাজাই ১০ বছর হল। আসামি পক্ষের যারা জামিনে ছিলেন তা বাতিল হয়ে গেল।

এর আগে গতকাল সোমবার বিশেষ জজ আদালত জিয়া  চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের সাজা দেন। দুই মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হলো ১৭ বছর।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। ওই দিনই তাঁকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।

এ মামলায় ছয় আসামির মধ্যে খালেদা জিয়াসহ তিনজন কারাবন্দি। বাকি তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। খালেদা জিয়া ছাড়া বাকি দুজন হলেন মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।

পলাতক তিনজন হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি তাঁরা এ আবেদন করেন।

২২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেন। এরপর ৭ মার্চ অপর আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট।

পরে ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল দেন হাইকোর্ট। ১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত। এখন তিন আসামির আপিল ও দুদকের আবেদনের ওপর রায় ঘোষণা হবে আজ।

মামলার অভিযোগে যা বলা হয়েছে

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলার এজাহারে জানা যায়, ১৯৯১-৯৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন রমনা শাখার সোনালী ব্যাংকে প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন, যার নম্বর ৫৪১৬। ওই হিসাবে ইউনাইটেড সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ডি ডি নম্বর ১৫৩৩৬৭৯৭০-তে ১৯৯১ সালের ৯ জুন ১২ লাখ ৫৫ হাজার মার্কিন ডলার, যা তৎকালীন বাংলাদেশি মুদ্রায় চার কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ২১৬ টাকা জমা হয়। পরে খালেদা জিয়া বিভিন্ন সময়ে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে বিভিন্ন আসামির নামে ‘এফডিআর’ করে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে উত্তোলন করেন, যা দণ্ডবিধির ৪০৯ এবং ১০৯ ধারা ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ ২ নম্বর আইনের ৫(২) ধারায় অপরাধ করেছেন। এজাহারে ঘটনার সময়কাল হিসেবে ১৩ নভেম্বর ১৯৯৩ থেকে ২৮ মার্চ ২০০৭ সালকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

/ এআর /

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি