ঢাকা, শনিবার   ১৮ মে ২০২৪

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:২৯, ২ মার্চ ২০২২ | আপডেট: ১৫:২০, ২ মার্চ ২০২২

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে পলাতক এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট মঙ্গলবার রাতে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকা থেকে মো. আজিজুল হক রানা ওরফে শাহনেওয়াজ নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে।

২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ডেপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তিনি। গ্রেফতারের সময় তার হেফাজত হতে জিহাদী বই, দুইটি মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ ও কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক উদ্ধার জব্দ করা হয়।

বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার সফরসঙ্গীদের হত্যার উদ্দেশ্যে কোটালীপাড়ার শেখ লুৎফর রহমান সরকারী আদর্শ কলেজ মাঠ সভামঞ্চের পাশে মাটির নিচে একটি ৪০ কেজি ওজনের বোমা এবং হেলিপ্যাডের পাশে মাটির নিচে একটি ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়।

মুফতি হান্নানের সঙ্গে বোমা পুঁতে রাখার দায়িত্বে ছিলেন গ্রেফতার আজিজুল। বোমা দুইটি উদ্ধারের পর আজিজুল কোটালীপাড়া থেকে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসেন।

তিনি আরো বলেন, আজিজুল ১৯৮৭ সালে গাজীপুরের শ্রীপুরে জামিয়া আনোয়ারিয়া মাদ্রাসায় নূরানী বিভাগে ভর্তি হন। মাদ্রাসায় তিনি শিক্ষক ও হরকাতুল জিহাদের সক্রিয় সদস্য মুফতি হান্নানের অনুসারী মাওলানা আমিরুল ইসলামের সংর্স্পশে আসেন। মাওলানা আমিরুল তাকে হরকাতুল জিহাদে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেন।

পুলিশ কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “মাদ্রাসায় মুফতি হান্নান, আব্দুর রউফ, আব্দুস সালামসহ হরকাতুল জিহাদের বিভিন্ন সিনিয়র সদস্যদের যাতায়াত ছিল এবং হরকাতুল জিহাদের সদস্যদের গোপন বৈঠক হতো ওই মাদ্রাসায় । গ্রেফতার আজিজুল হক সংগঠনে যোগ দেওয়ার পর অন্য ছাত্রসহ প্রশিক্ষণ ও তালিম নেওয়ার জন্য হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি ইজহারের চট্টগ্রামের লালখান মাদ্রাসায় যান এবং তালিম গ্রহণ করেন। তালিম শেষে সেখানে তিনি বোমা তৈরি, আত্মরক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন।

“মুফতি হান্নান সংগঠনের অপারেশনাল কার্যক্রমের জন্য সাহসী জিহাদী বিশ্বস্ত কয়েকজন লোক সংগ্রহ করার জন্য মাওলানা আমিরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। মাওলানা আমিরুল ইসলাম মো. আজিজুল হককে নির্বাচন করেন। আমিরুল ইসলাম তাকে একটি পত্র দিয়ে গোপালগঞ্জ বিসিক এলাকায় সোনার বাংলা সাবান ও মোমবাতি তৈরির কারখানায় পাঠান। আজিজুল মুফতি হান্নানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে মাওলানা আমিরুল ইসলামের দেওয়া পত্রটি দেন। মুফতি হান্নান তাকে সংগঠনের নিয়মকানুন সম্পর্কে বুঝিয়ে দেন এবং আজিজুল হকের নাম পরিবর্তন করে  ছদ্মনাম ‘শাহনেওয়াজ দেন।”

সিটিটিসি প্রধান বলেন, “আজিজুল হক নতুন নাম শাহনেওয়াজ পরিচয়ে আনুমানিক ১৫ দিন মোমবাতি প্যাকিংয়ের কাজ করেন। তিনি বিশ্বস্ততা অর্জন করলে কারখানার পিছনে একটি কক্ষে গোপন বৈঠকে উপস্থিত থাকার অনুমতি পান। কারখানায় মোমবাতি ও সাবান তৈরির আড়ালে বোমা তৈরির কাজ করতেন তিনি। বোমা তৈরির কাজে আজিজুল হকসহ মো. ইউসুফ ওরফে মোসহাব, মেহেদী হাসান ওরফে আ. ওয়াদুদ, ওয়াসিম আক্তার ওরফে তারেক হোসেন, মোঃ মহিবুল ওরফে মফিজুর রহমান, শেখ মো. এনামুল হক, আনিসুল ইসলাম ওরফে আনিস প্রমুখ জড়িত ছিলেন।”

তিনি বলেন, “আজিজুল হক দীর্ঘ ২১ বছর বিভিন্ন ছদ্মপেশার আড়ালে নিজেকে আত্মগোপন করে রাখেন এবং অত্যন্ত গোপনে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যান। তিনি নিজেকে লুকিয়ে রাখতে টেইলারিং, মুদি দোকানদার, বই বিক্রেতা, ড্রাইভার এবং সবশেষ প্রিন্টিং ও স্ট্যাম্পপ্যাড বানানোর কাজ করতেন।”

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্যুমকর্গ্মতারা উপস্থিত ছিলেন।

এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি