প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে
প্রকাশিত : ১২:১১, ৩ জানুয়ারি ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে দাবি পূরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। এর আগ পর্যন্ত প্রয়োজনে তাঁরা জীবন দেবেন, তবুও আন্দোলন থেকে এক পা পিছিয়ে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে আজ বুধবার চতুর্থ দিনের মতো আমরণ অনশন পালন করছেন শিক্ষকরা । গতকাল শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের আশ্বাস প্রত্যাখ্যানের পর শিক্ষকদের এখন একটাই বক্তব্য—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে দাবি পূরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তাঁদের অনশন চলবে। গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন এসব শিক্ষক-কর্মচারী।
নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ডাকে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাদের স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। তবে স্যালাইন নিয়েই অনশন পালন করতে দেখা গেছে তাদের। এসময় সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক বিনয় ভূষণ রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তরফ থেকে কোণ ধরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে শিক্ষা সচিবসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থানরত শিক্ষকদের কাছে যান শিক্ষামন্ত্রী। এসময় তিনি তাদের দাবি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষকদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। এসময় অনশনরত শিক্ষকরা ‘না’‘না’ স্লোগানে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাখান করেন।
শিক্ষকরা বলছেন, এর আগের বারও তাদের একইভাবে একাধিকবার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। নীতিমালা ও প্রক্রিয়ার কথা বলে তাদের রাজপথ ছেড়ে বাড়ি ফেরানো হয়েছে। তারা আর এসবে বিশ্বাসী নন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এবার তারা বাড়ি ফিরে যাবেন না। শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে দাবি মেনে নেওয়ার নির্দিষ্ট কোনো সময় সীমা উল্লেখ নেই দাবি করে অনশনরত শিক্ষকরা তা প্রত্যাখান করেন।
অনশনে ইতোমধ্যে ৭৭শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। শীতের রাতেও শিক্ষকরা ফুটপাতে অবস্থান করছেন। এ সময় অনেক শিক্ষককে কাঁদতে দেখা যায়। কর্মসূচি আহ্বানকারী সংগঠন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী গণমাধ্যমকে বলেন, টানা দু`দিনের অনশনে তাদের ৭৭ শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সরকার স্বীকৃত সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার দাবিতেই শিক্ষকদের এ আন্দোলন। স্বীকৃতি পেলেও নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা পান না। সারাদেশে এমন নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান আছে ৫ হাজার ২৪২টি। এগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ৭৫ থেকে ৮০ হাজার। অন্যদিকে বর্তমানে দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার। এগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী ৪ লাখের বেশি। সর্বশেষ ২০১০ সালে এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল।
এমজে/
আরও পড়ুন