ঢাকা, বুধবার   ১৪ মে ২০২৫

আমার পাঠানো শুভেচ্ছা কার্ড অটিস্টিক শিশুদের আঁকা: প্রধানমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৪২, ২ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১৫:০০, ২ এপ্রিল ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

অটিস্টিক শিশুদের সহযোগিতায় সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভালোবাসা পেলে অটিস্টিক শিশুরাও দেশের সম্পদ হয়ে উঠবে। আজ সোমবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একাদশ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানের তিনি এ কথা বলেন।
বিভিন্ন উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানো কার্ডগুলো অটিস্টিক শিশুদের হাতে আঁকা ছবি থেকে তৈরি করা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন উৎসবে মানুষের কাছে আমি যেসব কার্ড পাঠাই, অটিস্টিক শিশুদের আঁকা কার্ড পাঠাই। যার কার্ড নেই তাকে এক লাখ করে টাকাও দিই, সম্মানি হিসেবে। এভাবেই আমি কয়েক বছর থেকে অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী শিশুদের হাতে আঁকা ছবি দিয়েই শুভেচ্ছা কার্ড বানিয়ে তা পাঠিয়ে আসছি।
অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধীদের অবজ্ঞা না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুযোগ পেলে তারাও দেশের জন্য ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের সুস্থ খেলোয়াররা আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে স্বর্ণ নিয়ে আসতে পারে না কিন্তু প্রতিবন্ধী খেলোয়াররা বিদেশ থেকে দেশের জন্য স্বর্ণ জিতে নিয়ে আসে। আমরা সাভারে ২৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিবন্ধী ক্রীড়া কমপ্লেক্স গড়ে তুলছি। জাতীয় সংসদ প্রাঙ্গণেও তাদের খেলার জন্য জায়গার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এসময় তিনি বলেন, অটিজম বিষয়ে একসময় আমারও ভালো ধারণা ছিল না। আমার মেয়ে পুতুল এসব বিষয় নিয়ে আমেরিকায় লেখাপড়া করেছে, পুতুল অটিজম নিয়ে কাজ করে।  একবার পুতুলের সঙ্গে গিয়ে দেখলাম- একটা বাচ্চা হাঁটতে পারে না, চলতে পারে না, ট্রলির মধ্যে শুয়ে আছে। সে মুখ দিয়ে তুলি কামড়ে ধরে ছবি আঁকছে। আমি সে ছবিটা নিলাম।
অটিজম বিষয়ে সরকারের ভূমিকার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অটিজমের ওপর একটা রেজ্যুলশনও গ্রহণ করেছে জাতিসংঘ। শুধু আমাদের দেশেই নয়, বিশ্বব্যাপী একটা সচেতনতা শুরু হয়েছে। আমাদের দেশেও অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন লোকদের জন্য প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে একটা কমপ্লেক্স তৈরি করতে চাই। মৃত্যু পর্যন্ত অটিস্টিক হয়ে জন্ম নেওয়া শিশুদের সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে এখানে। সূচনা ফাউন্ডেশন নামে একটি ফাউন্ডেশনও করে দিয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো,প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।  
প্রসঙ্গত, অটিজমে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্কদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২০০৭ সালে ২ এপ্রিলকে ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ হিসেবে পালনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর থেকে প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হচ্ছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হল- ‘নারী ও বালিকাদের ক্ষমতায়ন, হোক না তারা অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন’।
একসময় অটিজম ছিল একটি অবহেলিত জনস্বাস্থ্য ইস্যু। এ সম্পর্কে সমাজে নেতিবাচক ধারণা ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা ও স্কুল সাইকোলজিস্ট সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নিরলস প্রচেষ্টায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অটিজম বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ২০০৭ সালে এ বিষয়ে দেশে কাজ শুরু করেন।
সায়মা সম্প্রতি এ অবহেলিত জনস্বাস্থ্য ইস্যুতে তার বিরাট অবদানের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃতি পেয়েছেন।


/ এআর /


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি