ঢাকা, শুক্রবার   ১৬ মে ২০২৫

বিভিন্ন মহলের দাবি

এশার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:৪০, ১২ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ২১:৫৩, ১২ এপ্রিল ২০১৮

ইসরাত জাহান এশা (ফাইল ফটো)

ইসরাত জাহান এশা (ফাইল ফটো)

Ekushey Television Ltd.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হলের বহিস্কৃত ছাত্রলীগের সভাপতি ইসরাত জাহান এশার প্রতি অবিচার করা হয়েছে বলে মনে করছেন তার পরিবার, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও আওয়ামী লীগ নেতারা। কোনো ধরনের তদন্ত বা যাচাই বাচাই না করে একতরফা তাকে শাস্তি প্রদানসহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা করা হয়েছে। বহিষ্কার করার আগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যাচাই-বাছাই করা উচিৎ ছিল বলেও অনেকেই মনে করেন।

এশার বাবা ঝিনাইদহ জজ আদালতের পিপি ও জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ইসমাইল হোসেন তার মেয়েকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমার মেয়ের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত না করে তাকে অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এখন সে অসুস্থ হয়ে কোমায় রয়েছে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে দাবি করেছেন যে এশার শাস্তিটা বেশি হয়ে গেছে। তার প্রতি অন্যায় করা হয়েছে বলেও মত দিয়েছেন বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট সাংবাদিক। এছাড়াও ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাও তাদের ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে একই অভিযোগ তুলেছেন।

এশার বিরুদ্ধে এরকম শাস্তির ঘটনায় ঝিনাইদহবাসীও হতবাক হয়েছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া এমন শাস্তির প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।

এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। তিনি তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে জানান, “গুজবের নির্মম বলি আমাদের বোন ইফফাত জাহান এশা। সুচতুর মতলববাজদের অপপ্রচার এ অপরাধীর কাঠগড়ায় এই জনপদের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। দায় কার? কোটা বাতিল আনন্দ মিছিলের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া এশার কান্না আমাকে অপরাধী করে। আমরা কি তার হারানো সম্মান ফিরিয়ে দিতে পারবো? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একপেশে-বেআইনি সিদ্ধান্ত তদন্ত করে বাতিল করা উচিত।”

এদিকে এশার শাস্তি নিয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিক অঞ্জন রায় তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে বলেন, এশার গলায় জুতোর মালা পড়ানো, সেই ভিডিও তোলা, ছড়িয়ে দেওয়া- পরিস্কারভাবে নারীর প্রতি সহিংসতা। অপরাধ। পুরোটাই করা হয়েছে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে- এদেশের নারী অধিকার কর্মী, নারীবাদীরা কি এই সহিংতার প্রতিবাদ করবেন না?

তিনি আরও প্রশ্ন রেখেন বলেন, “না কি মেয়েটা ছাত্রলীগ করতো সেই কারণেই নীরব থাকবেন? অনুরোধ করছি- কর্মসূচি দিন। প্রতিটি নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে যেভাবে অতীতে ছিলাম, সেভাবেই হাজির থাকব।”

এশার পিতা ইসমাইল হোসেন বলেন, “আমার মেয়ের প্রতি চরম অন্যায় করা হয়েছে। সে নির্দোষ। তদন্ত করে দেখা উচিত ছিল ঘটনাটি।` তিনি  আরও বলেন, এশা ছোট বেলা থেকে মেধাবী শিক্ষার্থী। প্রতিটি ক্লাসেই সে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্রী। কবি সুফিয়া কামাল হলে সে ছাত্রলীগের সভাপতি দায়িত্বে ছিল। সে কোন দিন কারো গায়ে হাত তুলেছে এমন নজির নেই। পরিকল্পিতভাতে গুজব রটিয়ে তাকে লাঞ্চিত করা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি ।”

ঝিনাইদহ জেলা যুব লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম শিমূল বলেন, “এশার গলায় জুতার মালা দেওয়া উচিত হয়নি। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ  জানাচ্ছি। তদন্ত না করেই এতো বড় সাজা মেনে নেওয়া যায় না।”

তিনি আরও বলেন, “একদল শিক্ষার্থী গুজব রটিয়ে যখন এশার রুমের দরজা লাথি দিয়ে ভাঙছিল, ঠিক তখন মোর্শেদার পা কেটেছে। ভিডিও ফুটেজে তার স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রীদের মারধরের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইফফাত জাহান এশাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

মঙ্গলবার গভীর রাতে হলে মারধরের অভিযোগ ওঠার পরপরই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। এর পর হল থেকে এবং সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও তাকে বহিস্কার করা হয়।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী এশাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে নিশ্চিত করেন।

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি