ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪

উদ্ভিদ বিজ্ঞানী কাজী আবদুল ফাত্তাহ আর নেই

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:২০, ১৪ জুলাই ২০২০

দেশের প্রখ্যাত উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক কাজী আবদুল ফাত্তাহ আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার ঢাকার ধানমণ্ডিতে নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলে রেখে গেছেন।

বার্ধক্যজনিত জটিলতাই তার মৃত্যুর কারণ বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক রাখহরি সরকার।

আবদুল ফাত্তাহকে সন্ধ্যায় রায়ের বাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

তার মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন।

কাজী আবদুল ফাত্তাহ উদ্ভিদবৃক্ষবিজ্ঞান, উদ্ভিদ প্রাণরসায়ন এবং ফলন বৃদ্ধিতে উদ্ভিদের শারীরবৃত্তীয় ও জৈব রাসায়নিক উদ্ভিদবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণকারী পদার্থগুলো কীভাবে কাজ করে, তা নিয়ে গবেষণার জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ একাডেমি ফর সায়েন্সেস’র সদ্যবিদায়ী সভাপতি। ১৯৯১ সাল থেকে তিনি বিজ্ঞান একাডেমি নির্বাচিত ফেলো। ২০০৬ সালে উদ্ভিদবিদ্যায় শিক্ষকতা ও গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দিয়েছিল। এছাড়া বাংলাদেশ উদ্ভিদবিজ্ঞান সমিতি স্বর্ণপদক ও ফেলোশিপ ও রোটারি ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক পল হ্যারিস ফেলোফিপ লাভ করেন তিনি।

বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির আজীবন সদস্য অধ্যাপক ফাত্তাহ বাংলাদেশ বোটানিক্যাল সোসাইটির সভাপতি ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদ বিজ্ঞান অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তিনি।

কাজী আবদুল ফাত্তাহ ১৯৫২ সালে উদ্ভিদবিদ্যার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম এবং ১৯৫৩ সালে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৯ সালে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি নেন।

কাজী আবদুল ফাত্তাহ ১৯৫৪ সালের সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে জীববিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজে শিক্ষকতা করেন তিনি।

১৯৬২ সালের ২৩ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের জ্যেষ্ঠ লেকচারার হিসেবে যোগ দেন আবদুল ফাত্তাহ। ১৯৭৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৮১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।

আবদুল ফাত্তাহ ১৯৮১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৮৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নাইজেরিয়ার মাইদুগুড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের অধীন শস্য বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৫ সালের অক্টোবরে পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।

১৯৬২ সালে তিনি ‘সরল জীববিজ্ঞান’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন, যা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত হয়। এ গ্রন্থের জন্য তিনি ইউনেস্কো পুরস্কারও (১৯৬২) পান।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি