ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

এখনও পানির নিচে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১৫, ৯ আগস্ট ২০২০ | আপডেট: ১২:২৯, ৯ আগস্ট ২০২০

দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই কমছে নদ-নদীর পানি। তবে, অনেক স্থানে ডুবে আছে বসতবাড়ি। কোথাও আবার স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বানভাসিদের। ফলে পানিবাহিত রোগ বাড়ার সঙ্গে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রাস্তাঘাট, আউশ-আমন ধান, ফসসের ক্ষেত, খামার ও পুকুরের মাছের। 

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, টাঙ্গাইলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও, কালিহাতী, ঘাটাইল, বাসাইল ও মির্জাপুরের অধিকাংশ ঘরবাড়ি এখনও পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। এতে করে দেখা দিয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত রোগ। এদিকে, নাগরপুরে চার শতাধিক বানভাসি পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব মুন্না।

মধুমতি নদীর ভাঙনে দিশেহারা নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের চরসুচাইল, চরপাঁচাইল, চরঘোণাপাড়া ও চরপরাণপুর গ্রামবাসী। এরইমধ্যে শতাধিক ঘরবাড়ি, গাছপালা ও কৃষি জমি নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। চরসুচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিও নদীতে বিলীন হওয়ার পথে।

জেলার ভুক্তভোগী কয়েকজন জানান, ‘একটা ঘর ছাড়া আর কিছুই নেই। নদীতে সবকিছু বিলীন হয়ে গেছে।’

বন্যার ভয়াবহতার শিকার এক নারী জানান, ‘আমার যা ছিল সব নিয়ে গেছে। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে এখন আমার যাওয়ার কোনো পথ নেই।’ 

মধ্যাঞ্চলীয় মাদারীপুরের চারটি উপজেলায় তীব্র নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। বসতবাড়ি ছেড়ে নতুন নতুন স্থানে ছুটছেন ভাঙ্গন ঝুঁকিতে থাকা অনেকেই। এদিকে, মাদারীপুর শহর রক্ষা বাধেঁর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম।

এদিকে উত্তরের গাইবান্ধায় এবার দুই দফা বন্যায় ভেসে গেছে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকার মাছ। 

ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষিরা জানান, ‘খামারে প্রচুর মাছ ছিল, সব ভেসে গেছে। এখন কি করে ঋণ পরিশোধ করবো, জীবনই বা কেমনে চলবে।’

পার্শ্ববর্তী জেলা সিরাজগঞ্জে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে চরগুলোর ঘরবাড়ি এখনও পানিবন্দী। বানভাসি মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ।

ঘরবন্দী মানুষরা জানান, ‘পানিতে বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে চলাফেরা করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে।’

ঢাকার অদূরে গাজীপুরে তুরাগ ও বংশী নদীর পানি কমা অব্যাহত থাকলেও, বন্যাকবলিত এলাকায় দুর্ভোগ কমেনি। এখনও পানিতে তলিয়ে আছে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলের ক্ষেত, মাছের খামার ও পুকুর।

এদিকে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ক্ষতি হয়েছে সড়ক, পুকুরের মাছ, আউশ ও আমনে ধানের। সাম্প্রতিক বন্যায় জেলায় ক্ষতি হয়েছে ৯০০ কিলোমিটার সড়ক, ৪০টি ব্রিজ ও কালভার্টের সংযোগস্থলের। 

হাওরপাড়ে ঢেউয়ে অন্তত ৩০টির বেশি ভিলেজ প্রটেকশন লাইনে সমস্যা দেখা দিয়েছে, কোনটি আবার পুরো ভেঙ্গে গেছে। আউশ ও আমনের ৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। সুনামগঞ্জের ১১ উপজেলায় বন্যার পানিতে ভেসে গেছে ৩ হাজার ৮১টি পুকুর দীঘি ও খামারের মাছ।

ভুক্তভোগীরা জানান, ‘বন্যায় রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। এতে করে গাড়ি চালানো যাচ্ছে না।’ 

আরেক মাছ চাষি জানান, ‘আমার ৯টি পুকুর ছিল। সব মাছ ভেসে গেছে।’


এআই/এমবি


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি