ঢাকা, রবিবার   ১৯ মে ২০২৪

এটা কোন ধরনের খেলা চলছে: হাইকোর্ট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:০৭, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮

ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে যেখানে সেখানে যে কাউকে সাজা প্রদান করা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন হাইকোর্ট। চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পুলিশ হেফাজতে থাকা ফৌজদারি মামলার এক আসামিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেওয়ার ঘটনায় আাদলত বলেন, ‘এসবের মানে কি? এটা কোন ধরনের খেলা চলছে?’  

রবিবার (২৮ জানুয়ারি) সাজা দেওয়ার ঘটনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও দুই উপ-পরিদর্শকসহ (এসআই) মোট চার জনের বিষয়ে শুনানির সময় বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

জানা যায়, গত বছরের ১৩ অক্টোবর রাতে বেলালকে গ্রেফতার করে পরদিন তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। কিন্তু এর পরদিনই গত ১৪ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালতের এক আদেশে দেখানো হয়, দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে বেলালকে তার গ্রামের বাড়ির সামনে থেকে দুই পুরিয়া গাঁজাসহ হাতেনাতে ধরা হয়েছে। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালতের জব্দ তালিকায় তারিখ বলা হয়, ১৩ অক্টোবর রাত ৯টা ৫মিনিট।’ এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সবাইকে তলব করে। 

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরশেদ। অন্যদিকে আদালতে তলব করা ব্যক্তিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফারজানা শারমিন ও আইনজীবী মোকবুল আহমেদ।

আদালত এ বিষয়ে আরো বলেন, ‘পুলিশের হেফাজতে থাকা কোনো  ব্যক্তিকে সাজা দেওয়া নিয়ে কিভাবে ম্যাজিস্ট্রেট অন্ধ থাকেন? পুলিশ না হয় অন্ধ থাকতে পারে। কিন্তু ১৩ তারিখে (গত ১৩ অক্টোবর) আটক করে তারপর জেলখানায় নিয়ে পরদিন (১৪ অক্টোবর) ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হয় কী করে?’

তলবকারীদের পক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন আইনজীবী ফারজানা শারমিন। এ সময় আদালত ফারজানা শারমিনের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা কি এ বিষয়ে কনটেস্ট করবেন?’ উত্তরে আইনজীবী হ্যাঁ বললে আদালত ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘যেখানে তাদের অপরাধ স্পষ্ট, সেখানে কী করে আপনারা কনটেস্ট করতে চান?’ এ সময় ফারজানা ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং বলেন, আমরা কনটেস্ট করতে চাইনা। 

এসময় মনজিল মোরশেদ লোহাগাড়ার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ইঙ্গিত করে আদালতকে বলেন, ‘ওনাদের মতো ব্যক্তিদের কারণে সাধারণ মানুষ ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর আস্থা হারিয়েছে। এ কারণেই বিষয়টি আদালত পর্যন্ত এসেছে। তাই ওই কর্মকর্তাকে ম্যাজিস্ট্রেসি না দেওয়ার আবেদন করছি এবং ওসি দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হয়েও এমন ঘটনা ঘটায় তাকে প্রত্যাহারের আবেদন করছি।’

আদালত আসামীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ’১৩ অক্টোবর তাকে আটক করা হয়েছে। ১৪ অক্টোবর তাকে আদালতে হাজির করতে হবে। কিন্তু কেন সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসবে? এটা কোন ধরনের খেলা চলছে? উকিলসহ জরিমানা করা দরকার। এ ধরনের মামলার  প্র্যাকটিস করবেন না। সনদ সরাসরি বার কাউন্সিলে পাঠিয়ে দেবো।’

এসি/টিকে


Ekushey Television Ltd.





© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি