ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪

ওজনে কম দেওয়ার সাঁজা কি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:১৮, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৩:৩৭, ১২ মার্চ ২০১৮

আমরা প্রায়ই এমন দেখি যে, বাজার থেকে কেনা জিনিসে ওজন কম থাকে। যতটুকু ওজনের পণ্য দেওয়ার কথা বাসায় এসে বাস্তবে তার থেকে কম পাওয়া যায়। অনেকেই মনে করেন যে, এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যায় না। ধারণাটি ভুল। বাংলাদেশের প্রচলিত আইনেই এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনী প্রতিকারের জন্য আবেদন করা যায়।

ওজন কম দেওয়ার বিষয়ে কয়েকটি ঘটনা ঘটতে পারে। এগুলো হল ওজনের জন্য প্রতারণামূলক মিথ্যা যন্ত্র ব্যবহার, প্রতারণামূলকভাবে মিথ্যা মাপ বা ওজন ব্যবহার, মিথ্যা ওজন অথবা মাপ করা, মিথ্যা বাটখারা কিংবা মাপ তৈরি ও বিক্রি করা।

বাংলাদেশের আইনী ব্যবস্থায় বলবত থাকা ১৮৬০ সালের বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনে (পেনাল কোড-১৮৬০) এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। ২৬৪ থেকে ২৬৭ নম্বর ধারায় পণ্যের ওজন বা মাপ সম্পর্কিত বিধানগুলোর উল্লেখ আছে।

দণ্ডবিধির ২৬৪ ধারায় ‘ওজনের জন্য প্রতারণামূলকভাবে মিথ্যা যন্ত্র ব্যবহার’ করার বিষয়ে বলা আছে। এ ধারা অনুসারে কোনো ব্যক্তি যদি প্রতারণামূলকভাবে ওজনের জন্য এমন কোনো যন্ত্র ব্যবহার করেন, মিথ্যা বলেন- তবে সেই ব্যক্তি এক বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অর্থ দণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত হতে পারেন।

দণ্ডবিধির ২৬৫ ধারা অনুসারে ‘প্রতারণামূলকভাবে মিথ্যা ওজন কিংবা মাপ ব্যবহার’ করার বিষয়ে বলা আছে। এ ধারা অনুসারে, কোনো ব্যক্তি যদি প্রতরণামূলকভাবে কোনো মিথ্যা ওজন কিংবা দৈর্ঘ্যের বা ধারণশক্তির মাপকে তার থেকে ভিন্ন ওজন কিংবা দৈর্ঘ্য বা ধারণশক্তির মাপ হিসেবে ব্যবহার করেন, তবে সেই ব্যক্তি এক বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অর্থ দণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত হবেন।

মিথ্যা ওজন কিংবা মাপ করার শাস্তির বিষয়ে উল্লেখ আছে দণ্ডবিধির ২৬৬ ধারায়। এ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো ওজন, পরিমাপ যন্ত্র বা বাটখারা কিংবা দৈর্ঘ্য বা ধারনক্ষমতা মাপবার যন্ত্র রাখে, যা মিথ্যা বলে সে জানে এবং তা যাতে প্রতারণামূলকভাবে ব্যবহৃত হতে পারে তার জন্যই রাখে, তবে সেই ব্যক্তির এক বছরর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম অথবা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে, অথবা অর্থ দণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত হবেন।

আর মিথ্যা বাটখারা কিংবা মাপ তৈরি কিংবা বিক্রয় করার অপরাধ সম্পর্কে বলা আছে দণ্ডবিধির ২৬৭ ধারায়। এ ধারা অনুসারে, কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো ওজন বা বাটখারা কিংবা দৈর্ঘ্য বা ধারনশক্তির পরিমাপ যন্ত্র তৈরি করেন, বিক্রয় করেন বা লেনদেন করেন, যা মিথ্যা বলে তিনি জানেন এবং তা যাতে সত্য বলে ব্যবহার করা যায়, সে উদ্দেশ্যেই তা করেন অথবা তা সত্য বলে ব্যবহৃত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তাহলে এক বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডেই দণ্ডিত হবেন।

মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া

সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি অর্থ্যাত যিনি প্রতারিত হয়েছেন বলে মনে করছেন মামলাটি তাকেই দায়ের করতে হবে। মামলা দায়ের করতে হবে সংশ্লিষ্ট এলাকার সিএমএম কোর্টে (মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালত) অথবা সিজেএম কোর্ট (মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালত)। সংশ্লিষ্ট এলাকা যদি কোন মেট্রোপলিটান এলাকার আওতাধীন হয় তাহলে মামলা দায়ের হবে সিএমএম কোর্টে। আর এলাকাটি যদি মেট্রোপলিটান এলাকার বাইরে অবস্থিত হয় তাহলে মামলা দায়ের হবে সিজেএম কোর্টে।

উপরোক্ত আইনে এসব আদালতে দায়ের করা মামলা ফৌজদারি মামলা হিসেবে গৃহিত হবে। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট আদালতে লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে মামলা দায়ের করতে হবে। আদালত লিখিত অভিযোগ আমলে নিলে তবে তা একটি ফৌজদারি মামলা হিসেবে পরিগণিত হবে।

  //এস এইচ এস// এআর


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি