ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

খাবার চিবিয়ে না খেলে যে বিপদ হতে পারে

প্রকাশিত : ০৮:৫৩, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

রোজ সকালে অফিসে যাওয়ার তাড়ায় যত কম্প্রোমাইজ খাওয়ার সঙ্গে। কোনও রকমে নাকেমুখে গুঁজে খাওয়াতেই অভ্যস্থ অধিকাংশই। ট্রেন মিস, অফিসে পৌঁছাতে দেরি হলে বসের বকুনি সবেতেই অজুহাত ‘খেতে গিয়েই দেরি’। অফিস যাত্রীরাই শুধু নয়, স্কুল পড়ুয়ারাও কোনওরকমে চটপট খেয়ে ছুট। এই অভ্যাসে সময় বাঁচলেও শরীরের ক্ষতি হয়।

তাড়াতাড়িতে খাবারটা প্রায় না চিবিয়ে গিলে খান অধিকাংশই। ফলে খাবার হজম ঠিক মতো হয় না। বলা ভাল, গিলে খেলে সেই খাবার এমন জটিলরূপে থাকে যে তা শরীর হজম করতে পারে না। সেই খাদ্যকে আবার চিবিয়ে নিলে সেটা থুতুর সঙ্গে মিশে একটা সহজ রূপ ধারণ করে। ফলে শরীর তা স্বচ্ছন্দে হজম করতে পারে। এই হড়বড় করে খাওয়ার দীর্ঘ অভ্যাস থেকে সবচেয়ে চিন্তাজনক যে রোগ শরীরে বাসা বাঁধে তা হল মেটাবলিক সিনড্রম। মেটাবলিক সিনড্রম একটা শারীরিক অবস্থা যার মধ্যে পড়ে- উচ্চরক্তচাপ, স্থূলতা, উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড এবং এইচডিএল (ভাল কোলেস্টেরল)- এর খামতি। এই সবকিছু মিলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।

২০১৭ সালে আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের বিজ্ঞান সমাবেশে স্পষ্ট জানানো হয় ৫ বছর ধরে একটি গবেষণা এটা প্রমাণ করেছে যে, খাবার যদি না চিবিয়ে তাড়াতাড়ি খাওয়া হয় তাহলে মেটাবলিক সিনড্রোম এবং স্থূলতার মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এই গবেষণায় দেখা গেছে, এই মেটাবলিক সিনড্রোমের প্রবণতা যারা তাড়াতাড়ি খায় তাদের ক্ষেত্রে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ। আর যারা স্বাভাবিকভাবে চিবিয়ে খান, তাদের ক্ষেত্রে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, থুতুতে একটি এনজাইম থাকে যাকে বলে সালিভারি অ্যামায়লেস। যেটা খাবারে স্টার্চ এবং মালটোডেক্সট্রিন্স নামক একটি কার্বোহাইড্রেট হজম করতে সাহায্য করে। যদি খাবার এই থুতুর সঙ্গে মেশার সময় না পায় তবে হজমের সমস্যা হবেই। খাবার না চিবিয়ে তাড়াহুড়ো করে খেলে, শরীরে অপ্রয়োজনীয় বায়ু প্রবেশ করে। ফলে গ্যাস-অম্বল-ঠেঁকর ওঠার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। পেট ফেঁপে ওঠা ও বুক জ্বালার আর একটা কারণ হল যে, সহজরূপে খাদ্য শরীরে প্রবেশ করার কথা তার বদলে না চিবিয়ে সেটা জটিলরূপে শরীরে প্রবেশ করে তাই। তখন  অন্ত্রে যে হরমোনগুলো আছে সেগুলো ভাগাস স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে বার্তা পাঠায় যে পেট ভরে গেছে, কিন্তু সেই বার্তা পৌঁছাতে ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে। তাড়াতাড়িতে এই বার্তায় মস্তিষ্কে পৌঁছাতে পারে না। ফলে অল্প সময়ে অনেকটা খাওয়া হয়ে যায়। এ ছাড়া খাবার শ্বাসনালীতে আটকে হঠাৎ শ্বাসরোধ হয়ে মারাত্মক বিপদ ঘটতে পারে। তাই যতই তাড়া থাকুন খান ধীরে সুস্থে।

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

একে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি