ঢাকা, শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪

টিকটক হৃদয়সহ ৭ বাংলাদেশির যাবজ্জীবন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৩৪, ২১ মে ২০২২

ভারতের বেঙ্গালুরুতে এক বাংলাদেশি তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় আলোচিত হৃদয় বাবুসহ সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে বলে খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের। 

শুক্রবার দক্ষিণ ভারতের রাজ্য কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর একটি বিশেষ আদালত এ রায় দেন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- চাঁদ মিয়া, মোহাম্মদ রিফাকদুল ইসলাম (হৃদয় বাবু), মোহাম্মদ আলামিন হোসেন, রকিবুল ইসলাম, মোহাম্মদ বাবু শেখ, মোহাম্মদ ডালিম ও আজিম হোসেন।

তানিয়া খান নামের এক নারী আসামির ২০ বছর এবং মোহাম্মদ জামাল নামের একজনের পাঁচবছরের দণ্ড দিয়েছেন বিচারক। আর ফরেনার্স অ্যাক্টের অধীনে নুসরাত ও কাজল নামে দুজনের ৯ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর খালাস পেয়েছেন একজন।

গত বছরের মে মাসে বেঙ্গালুরুতে ২২ বছরের এক বাংলাদেশি তরুণীকে বিবস্ত্র করে শারীরিক নির্যাতনের পর দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। কয়েক দিন বাদে নির্যাতনের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটি দেখার পর প্রথম পদক্ষেপ নেয় আসাম পুলিশ। ওই ভিডিও থেকে পাঁচ নিপীড়কের ছবি প্রকাশ করে তাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য টুইটারে পুরস্কারের ঘোষণা দেয় তারা।

ওই ঘটনায় ঢাকার হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার ও পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেন নির্যাতনের শিকার মেয়েটির বাবা।

হাতিরঝিল থানার ওসি মো. আব্দুর রশীদ তখন বলেছিলেন, টিকটকার হৃদয় বাবুসহ কয়েকজনকে আসামি করে মামলাটি করেন মেয়েটির বাবা।

মামলার বাদী তখন গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ‘‘মেয়েটি ঢাকার মগবাজারে তার স্বামীর বন্ধু হৃদয়ের মাধ্যমে দুবাই যাওয়ার ভাবনার কথা জানালে তিনি নিষেধ করেছিলেন মেয়েকে। তারপরও মেয়ে নাছোড়বান্দা ভাবপ্রকাশ করে।’’

ঢাকা মহানগর পুলিশ জানিয়েছিল, নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী ও নির্যাতনকারীদের একজন ঢাকার মগবাজার এলাকার বাসিন্দা। সাইবার পেট্রোলের অংশ হিসেবে ভিডিওটি তাদের নজরে আসে। নির্যাতনকারী একজনের চেহারার সঙ্গে মগবাজার এলাকার এক যুবকের ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট করা ছবির মিল পাওয়া যায়।

সেখান তার পরিচয় টিকটক হৃদয় বাবু বলে শনাক্ত করা হয়। ২৬ বছর বয়সী হৃদয়কে মগবাজারের অধিবাসীদের অনেকেই চেনেন।

পরে ভারতে হৃদয় বাবুসহ দুজন পালানোর চেষ্টার সময় গুলিতে আহত হয় বলে দেশটির সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছিল।

গত বছর ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে ভারতের পুলিশ, যার মধ্যে ১১ জনই অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশকারী।

পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (পূর্ব) ভীমশঙ্কর গুলেড় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন,‘‘ডিএনএ অ্যানালাইসিস, ইলেক্ট্রনিক প্রমাণ, মোবাইল ফরেনসিক,ফিঙ্গার প্রিন্টসহ প্রয়োজনীয় দলিলাদি যথাসময়ে দাখিল করা হয়। এ কারণে দ্রুত বিচার সম্ভব হয়েছে।’’

তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, অভিযুক্তরা মানব পাচারকারীরা এবং তারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে। চাকরি দেওয়ার কথা বলে তারা মেয়েদের ভারতে এনে যৌন ব্যবসায় ব্যবসায় বাধ্য করত। নির্যাতনের শিকার মেয়েটিও তেমনই এক ভুক্তভোগী। মতপার্থক্যের কারণে ‘শিক্ষা’ দিতে ওই তরুণীর ওপর বীভৎস নির্যাতন চালানো হয়।

এমএম/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি