ঢাকা, শনিবার   ০৭ জুন ২০২৫

দেশের কয়েকশ গ্রামে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল আজহা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২২, ৬ জুন ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপন করা হবে শনিবার (৭ জুন)। তবে দেশের বেশ কিছু জেলার বেশ কিছু গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে শুক্রবারই (৬ জুন) ঈদুল আজহা উদযাপন করা হচ্ছে। তারা আজ পশু কোরবানি দিচ্ছেন।

দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাঠানো খবর:

চাঁদপুর: বিগত ৯৭ বছর ধরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদরা দরবার শরিফের পীর মাওলানা ইসহাক (রহ.)-এর অনুসারীরা (প্রায় অর্ধশত গ্রামের বাসিন্দারা) সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করে আসছেন।

এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দরবার শরিফসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে আজ উদযাপন হচ্ছে ঈদুল আজহা।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দরবার শরিফের দুটি ঈদগাহে আসতে শুরু করেন মুসল্লিরা। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী লোকজন নতুন জামাকাপড় পরে ও সুগন্ধি মেখে ঈদের নামাজ আদায় করেন।

ঈদের নামাজের প্রথম জামায়াত সাদরা দরবার শরিফ মাঠে সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হয়। এ জামায়াতে ইমামতি করেন পীরজাদা মাওলানা মুফতি জাকারিয়া চৌধুরী।

এরপর দ্বিতীয় জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় সাদরা হামিদিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা মাঠে সকাল ৮টায়। এ জামাতে ইমামতি করেন পীরজাদা মাওলানা মুফতি আরিফ চৌধুরী।

গোপালগঞ্জ থেকে প্রথমবারের মতো চাঁদপুর দরবার শরিফে আগাম ঈদ করতে এসেছেন সাইফ। তিনি বলেন, আমি সাদরা দরবার শরিফে এবারই প্রথম আগাম ঈদের নামাজ আদায় করেছি। এখানে এসে ভালোই লাগছে। সামনের ঈদে আবার আসার চেষ্টা করব।

স্থানীয় যুবক রাসেল বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) দিনটি ছিল সারা পৃথিবীর জন্য আরাফার দিন। যা বাংলাদেশের জন্য বা অন্য কোনো দেশের জন্য আলাদা নয়। যেমন কেয়ামত সারা দুনিয়ায় একদিনেই হবে। সে হিসেবে গতকাল ছিল আরাফার দিন, আর আজ ঈদুল আজহার দিন। সেই কারণে আমরা ঈদ পালন করছি।

এদিকে পাশের উপজেলা ফরিদগঞ্জের টোর মুন্সিরহাট, সাচনমেঘ ও উভারামপুর গ্রামে একাধিক ঈদ জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়াও হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, শাহরাস্তি ও মতলব উত্তর উপজেলায় সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ঈদ জামায়াত হয়।

তবে এসব এলাকায় সরকার ঘোষিত ৭ জুন ঈদুল আজহা উদযাপন করার মতো জনতার সংখ্যাও কম নয়। তারা রীতিমতো শনিবার (৭ জুন) পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ ও কোরবানি করবেন।

স্থানীয় তথ্য বলছে, ১৯২৮ সাল থেকে সাদরা দরবার শরিফের সেই সময়ের পীর মাওলানা ইসহাক (রহ.) সৌদি আরবসহ অন্য আরব দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপনের প্রথা চালু করেন। এ রীতি তার অনুসারীরা চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় একই সঙ্গে পালন করে আসছেন। যার ফলে এখন সারা দেশেই এ পীরের অনুসারীর সংখ্যা বাড়ছে।

চাঁদপুর জেলায় যেসব গ্রামে আগাম ঈদুল আজহা উদযাপন হচ্ছে সেগুলো হলো: হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদরা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, প্রতাপপুর, বাসারা; ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভুলাছোঁ, সোনাছোঁ, উভারামপুর, উটতলি, মুন্সিরহাট, কাইতাড়া, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, পাইকপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা, গোবিন্দপুর; মতলব উপজেলার দশানী, মোহনপুর, পাঁচানি এবং কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলাসহ অর্ধশতাধিক গ্রাম।

মাদারীপুর: সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে মাদারীপুরেরও ২৫ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ আজ উদযাপন করছেন পবিত্র ঈদুল আজহা।

জেলার সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে সদর উপজেলার তাল্লুক গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। সেখানে সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদের প্রধান জামাত পড়ান তাল্লুক গ্রামের মৌলভীবাড়ি মসজিদের ইমাম মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান।

জানা যায়, সুরেশ্বর দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা হজরত জান শরিফ শাহ সুরেশ্বরী (রহ.)-এর অনুসারীরা প্রায় দেড়শ’ বছর আগে থেকে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখেন এবং ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপন করে আসছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় চাঁদ দেখা সাপেক্ষে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে মাদারীপুর সদর উপজেলার চরকালিকাপুর, মহিষেরচর, পূর্ব পাঁচখোলা, জাজিরা, কাতলা বাহেরচর, তাল্লুক, চরগোবিন্দপুর, পখিরা, খোয়াজপুর, দৌলতপুর, কালিকাপুর, হোসনাবাদ, রঘুরামপুর, আংগুলকাটা, হাজামবাড়ি, বাহেরচর, কেরানীবাট, রমজানপুর, কয়ারিয়া, রামারপুল, সাহেবরামপুর, আন্ডারচর, খাসেরহাটসহ জেলার ২৫টি গ্রামের মানুষ ঈদ উৎসব উদযাপন করছেন।

এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি