নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের আলোচিত ‘সুন্দরীরা নেত্রী’রা আবারও মাঠে নেমেছে
প্রকাশিত : ০০:০৬, ২৪ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ০০:০৯, ২৪ আগস্ট ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন কলেজসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একসময় দাপট দেখানো নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেত্রীদের হদিস মিলছে না কোথাও। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে আলোচিত এসব নেত্রী কার্যত আত্মগোপনে চলে গেছেন। অথচ একসময় তারা ছিলেন ক্যাম্পাস রাজনীতির পরিচিত নাম, যাদের বলা হতো ছাত্রলীগের ‘অপরাজেয় সুন্দরী’। এখন নতুন করে আলোচনায় এসেছেন সেই নেত্রীরা। জানা গেছে, তারা নাকি সরকারবিরোধী সাইবার প্রোপাগাণ্ডায় ব্যস্ত।
বিভিন্ন থানা ও পুলিশের বরাতে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র ছাত্রলীগের আলোচিত নেত্রী গ্রেপ্তার হয়েছেন। গত বছরের ২৭ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি খাদিজা আক্তার ঊর্মি। একই দিনে আটক হন রাজশাহী মহিলা কলেজের ছাত্রী ও নেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক আলফি শাহরিন আরিয়ানা। ১৬ ডিসেম্বর আটক হন বহুল সমালোচিত ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা। তবে তিলোত্তমা সিকদার, আতিকা বিনতে হোসেন, রাজিয়া সুলতানা, নুজহাত ফারিয়া রোকসানা—এমন বহু আলোচিত নেত্রীর খোঁজ মেলেনি।
অভ্যুত্থানের আগে-পরে তারা ছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন, চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, এমনকি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর গরম পানি নিক্ষেপের মতো নানান ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। শেখ হাসিনার পতন ও তার ভারত পালানোর পর তারা যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছেন।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই অনলাইনে নতুনভাবে সক্রিয় হতে শুরু করেন এই নেত্রীরা। বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ গত কয়েক বছরে এক লাখের মতো “সাইবার যোদ্ধা” তৈরি করেছিল, যার মধ্যে প্রায় ৪৫ হাজারকে তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এসব প্রশিক্ষণ হয়েছিল সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধানে এবং আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই-এর সহযোগিতায়।
সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক মেটার এক রিপোর্টে প্রকাশ পায়, ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে বাংলাদেশ-সংক্রান্ত ১৪৮টি ভুয়া অ্যাকাউন্ট ও পেজ সরানো হয়েছে। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে বিএনপি, তারেক রহমান এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছিল, আর আওয়ামী লীগের পক্ষে চালানো হচ্ছিল প্রচার।
এএফপির ফ্যাক্ট চেকার কদরুদ্দিন শিশির জানিয়েছেন, অন্তত ৯৮টি অ্যাকাউন্ট ও পেজ বন্ধ করা হলেও পরবর্তীতে আবার নতুন পেজ খোলা হয়েছে। ডলার খরচ করে বুস্ট করা পোস্টের মাধ্যমে একই ধরনের অপতথ্য এখনো ছড়ানো হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠছে—আত্মগোপনে থাকা এই আলোচিত নেত্রীরা কোথায়? দেশের ভেতরেই আছেন, নাকি সীমান্ত পেরিয়ে চলে গেছেন? তবে ডিজিটাল জগতে তাদের উপস্থিতি ধরা পড়ছে প্রতিনিয়ত। যে ‘সুন্দরী’ নেত্রীরা একসময় ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তার করতেন, তারাই এখন সাইবার যুদ্ধে নেমে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে প্রোপাগাণ্ডা চালাচ্ছেন।
এসএস//
আরও পড়ুন