ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

ফের পেছাল খালাফ হত্যার আপিল শুনানি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:০৯, ২৪ অক্টোবর ২০১৭

ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তা খালাফ আল আলী হত্যা মামলার পুনরায় শুনানির জন্য ৩১ অক্টোবর তারিখ নির্ধারণ করেছেন আপিল বিভাগআসামিপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ আগামী মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য করেন

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাইফুল ইসলামের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সিকদার মকবুল হক।

গত ২০ আগস্ট রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে ১০ অক্টোবর এ মামলার আপিল রায়ের দিন রেখেছিল সর্বোচ্চ আদালত।

কিন্তু এর মধ্যে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ছুটিতে বিদেশে যাওয়ায় এবং রায় প্রস্তুত না হওয়ায় এক আসামির আইনজীবীর আবেদনে বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারকের বেঞ্চ নতুন করে শুনানির সিদ্ধান্ত দেয়। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে।

বিশ্বজিৎ দেবনাথ পরে সাংবাদিকদের বলেন, আপিলের সংক্ষিপ্তসার জমা না দেওয়ায় আসামি সাইফুলের আইনজীবী সিকদার মকবুল হক সময়ের আবেদন করেন। আদালত তা মঞ্জুর করে ৩১ অক্টোবর শুনানির দিন রেখেছে।

২০১২ সালের ৫ মার্চ মধ্যরাতে গুলশানে নিজের বাসার কাছে গুলিবিদ্ধ হন সৌদি দূতাবাস কর্মকর্তা খালাফ আল আলী (৪৫)।  পরদিন ভোরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর পুলিশ গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করে। আর সাড়ে চার মাস পর সাইফুল ইসলাম মামুন, আল আমিন, আকবর আলী, মো. রফিকুল ইসলাম নামে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যাদের পরিচয় দেয়া হয় ‘ছিনতাইকারী’হিসাবে।

তদন্ত শেষে গোয়েন্দা পুলিশ ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। সেখানে গ্রেপ্তার চারজনের সঙ্গে সেলিম চৌধুরী নামে পলাতক আরেকজনকে আসামি করা হয়।৩১ অক্টোবর পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত।

আসামিদের মধ্যে আল আমীন হাকিম আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, সাইফুলসহ বাকি চারজন ওই রাতে খালাফকে ঘিরে ধরেন এবং তার কাছে ডলার চান।

ডলার না দেয়ায় তাদের মধ্যে ধস্তাধাস্তি হয়। পরে সাইফুল তার হাতে থাকা রিভলবার দিয়ে খালাফকে গুলি করে পালিয়ে যান বলে উল্লেখ করা হয় মামলার অভিযোগপত্রে।

ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোতাহার হোসেন ২০১২ সালের ৩০ ডিসেম্বর এ মামলার রায়ে পাঁচ আসামির সবাইকেই মৃত্যুদণ্ড দেন।

কিন্তু আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাই কোর্ট  বেঞ্চ ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর যে রায় দেয়, তাতে কেবল সাইফুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অনুমতি দেওয়া হয়।

বাকি চার আসামির মধ্যে বিচারিক আদালতে ফাঁসির আদেশ পাওয়া আল আমীন, আকবর আলী ও রফিকুল ইসলামের দণ্ড কমিয়ে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। পলাতক সেলিম চৌধুরী খালাস পান।

সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্টের রায়ে বলা হয়, অভিযুক্তরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ডাকাতি করতে ওই ঘটনা ঘটায়। হত্যাকাণ্ডের ন্য তারা সবাই দায়ী।

আল আমিন ও খোকনের স্বীকারোক্তি অনুসারে দেখা যায়, পয়েন্ট ২২ বোরের রিভলবার দিয়ে সাইফুল ফায়ার করে। এতে তিনি আহত হয়ে পড়ে মারা যান।

তবে সেলিমের বিরুদ্ধে তেমন কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ না থাকায় আদালত তাকে খালাস দেয় বলে সে সময় জানিয়েছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোরশেদুল আলম।

হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আপিল বিভাগে শুনানি শেষে তা চূড়ান্ত রায়ের পর্যায়ে এলেও আবার তা পিছিয়ে যায়।

হাই কোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া সাইফুলের বাড়ি বাগেরহাট জেলার শরণখোলার মধ্য খোন্তাকাটা গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত আব্দুল মোতালেব হাওলাদার।

ফারুক ঘরামীর ছেলে যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি আল আমিনের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার হাজিখালী গ্রামে। আকবর আলী লালুর বাড়ি শরিয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলার গোয়ালকোয়া গ্রামে। তার পিতার নাম আব্দুল জলিল।

রফিকুল ইসলাম খোকনের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালি থানার নাটকঘর বাইলেনে। তার পিতার নাম আব্দুস সালাম।

খালাসপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সেলিমের বাড়ি ভোলা জেলার শশীভূষণ থানার উত্তর চরমঙ্গলে। তার বাবার নাম সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরী।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি