ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে উন্নয়ন অর্থনীতির দর্শন

ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী

প্রকাশিত : ১৫:২৯, ২৪ এপ্রিল ২০২১

বিশ্বের দরিদ্র দেশসমূহের উন্নয়ন মূলত নির্ভর করে থাকে আন্তর্জাতিকভাবে এবং দেশের অভ্যন্তরের ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে। উন্নয়নশীল দেশসমূহকে কঠিন পথ পার হয়ে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা এবং চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ করা জরুরী। দেশে গত বারো বছরের মধ্যে ২০২০ সালের প্রথমার্ধ পর্যন্ত করোনা পূর্বকালীন অবস্থায় দারিদ্র্যের হার ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছিল। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার সূচকেও বেশ উন্নতি করেছিল। দরিদ্র দেশসমূহের নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাঠামোয় উন্নয়নকে কাজে লাগাতে পারে। তবে রফতানিলব্ধ আয় বাড়াতে পারলে দেশের উন্নয়ন কাঠামোয় ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে।

আমদানি বিকল্পায়ন শিল্পের ক্ষেত্রে জোর দিলে বৈশ্বিক মহামারীর সময় ভাল ফল বয়ে আনতে পারে। একটি সুষম আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হলে দেশের মৌলিক মানবিক সংবেদনশীলতার ওপর গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। বাইপোলার আদর্শিক অভিমুখীকরণ বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে পরিবর্তন হয়েছে; কিন্তু বিশ্বব্যাপী আশঙ্কা থেকে যায় যে, দারিদ্র্য সংঘাতকে উৎসাহিত করতে পারে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সমস্যার সৃষ্টি করেছে। আবার কোন কোন দেশে এই বৈশ্বিক মহামারীর সময় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাত না লাগায় তাদের অর্থনীতি সচল হতে শুরু করেছে। করোনা কর্তৃক সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারী সবকিছু ছাপিয়ে এখন মানবসভ্যতার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক শত্রুতে পরিণত হয়েছে, যা যে কোন দেশের উন্নয়ন কাঠামোতে মানবতাবিরোধী এবং বৈষম্য সৃষ্টিকারী। রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনায় অনেক হতাশা, দরিদ্র, বৈষম্য এবং নিষ্পত্তিহীনতা এক শ্রেণী কর্তৃক ক্ষমতা প্রদর্শনের মহড়া এবং মানুষের কর্মহীনতা ও দুর্নীতি বিভিন্ন দেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই দুঃসময়ে সবাই এক কাতারে দাঁড়াবে। তার বদলে ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহির্প্রকাশ ঘটাচ্ছে এক শ্রেণীর ধর্ম ব্যবসায়ী। এই ফ্যাসিবাদী ধর্ম ব্যবসায়ীরা স্বাধীনতার মূল চক্রভূমে আঘাত করে সামনের দিকে যাত্রাপথে বাধা সৃষ্টি করছে। যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানা বাধ্যতামূলক সেখানে দেখা যাচ্ছে কেউ কেউ স্বাস্থ্যবিধি মোটেও মানছে না। এ সমস্ত ঘটনাপ্রবাহ গভীরভাবে সংযুক্ত।

মহামারী আক্রান্ত সময়ে উন্নয়ন সহায়তার জন্য বৈশ্বিকভাবে একটি প্রেরণা প্রদান, প্রণোদনামূলক কর্মসূচীর সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করতে হলে বৈশ্বিক ভাইরাসের অজানা শত্রুর বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। হয়ত ২-৩ বছর লেগে যাবে করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে। কিন্তু তখন আবার বৈশ্বিকভাবে পরিবর্তনের ঢেউ সর্বত্র লক্ষিত হবে। যেমন করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তৃতীয় বিশ্ব শব্দটি কার্যকরভাবে হ্রাস পেয়েছে। ‘শিল্পায়িত’ বা ‘আধুনিকায়িত’ বিশ্বে পরিষেবা শিল্প এবং উচ্চ প্রযুক্তির ওপর ক্রমবর্ধমান হারে নির্ভরশীলতা দেখা দিয়েছে। এমনকি করোনাকালেও ডিজিটাল ইকোনমির সুয়োগ-সুবিধা অধিকাংশ দেশ কাজে লাগাতে পারছে। ইতোপূর্বেকার ‘আধুনিকায়ন’ তত্ত্বটিতে যে ধারণা যুক্ত ছিল তা এখন পরিবর্তন হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান বৈচিত্র্যময় বিশ্বায়নের কারণে উচ্চ প্রযুক্তিগত ধারণার আবির্ভাব, যা এখন উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় শ্রেণীর দেশে কাজে লাগছে। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের ওপর ভর করে বিভিন্ন রাষ্ট্র বৈশ্বিক পরিম-লে স্বকীয়তা বজায় রেখে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় সম্মুখ সারির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যে সমস্ত উন্নয়নশীল রাষ্ট্র পণ্য উৎপাদনের দীর্ঘ পথপরিক্রমা করছে, নানামুখী মধ্যস্বত্বভোগীরা বিভিন্ন ধরনের অসদুপায় অবলম্বন করছে, সরবরাহজনিত সমস্যা বিরাজ করছে, জীবিকা নির্বাহের জন্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষকে নিরন্তর কষ্ট করতে হয়, মজুরির পরিমাণ খুবই স্বল্প, কর্মসংস্থানের অবস্থাও খুব খারাপ এবং নিয়ন্ত্রিত হয় না- ফলে দেশে দেশে অদৃশ্য ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে একটি শ্রেণী প্রায় মরে যাচ্ছে। অন্য আরেকটি শ্রেণী যাদের সংখ্যায় আধিক্য তারা, কিন্তু জীবন্মৃত হয়ে পড়ছে। যখন বৈশ্বিক উন্নয়ন পরিক্রমায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে অদম্য গতিতে তখন করোনা যে সমস্ত সমস্যা সৃষ্টি করছে তা কাটিয়ে ওঠার জন্য, অর্থনৈতিক মঙ্গলের জন্য দেশের যে সমস্ত বরেণ্য ও দেশপ্রেমিক প্রাজ্ঞ অর্থনীতিবিদ আছেন তাদের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে মাসিক ভিত্তিতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া এবং সিদ্ধান্তগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা তদারকি ও পর্যালোচনা করা এবং পরিকল্পনায় যদি ত্রুটি থাকে তা পরিবর্তনশীলতার আওতায় আনার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। লকডাউনের মেয়াদ বাংলাদেশে বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে জীবিকারও বড্ড প্রয়োজন। চিকিৎসা সহায়তা সীমিত এবং প্রয়োজনীয় খাতের বাইরে প্রকিউরমেন্ট করতে গিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে। আসলে প্রকিউরমেন্ট এবং পারচেজিংয়ের এসব ক্ষেত্রে সততার পরিচয় দেয়া বাঞ্ছনীয় হয়ে পড়েছে।

করোনাকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবকাঠামাগত উন্নয়নে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হচ্ছে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে ধন বৈষম্য দূর করার যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল সেখানে সাধারণ মানুষের সুযোগগুলো কার্যত সীমিত হয়ে পড়ছে। করোনা আবার নতুন করে ঘাত-প্রতিঘাতের সৃষ্টি করেছে। একাকীত্বের কারণে করোনাকালে দুঃখ-সুখ, শোক-মনস্তাপ যন্ত্রণা আজ মানুষকে বিদ্ধ করছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। মহামারীর দুষ্টচক্র ভাঙ্গা-গড়ার খেলায় মানুষের জীবন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছে। কর্মসংস্থানহীনতার সৃষ্টি হচ্ছে।

এ অসহনীয় পরিবেশ মানুষের মধ্যে এক ধরনের মানসিক বৈকল্য সৃষ্টি করে চলেছে। আবার একটি শ্রেণী সুযোগ পেয়ে গুছিয়ে দুর্নীতি করতে পিছপা হচ্ছে না। এমনকি দেশে দেশে দেখা যাচ্ছে জ্ঞান ও দক্ষতার মাধ্যমে যে ক্যাপাসিটি বিল্ডআপ করার কথা তা অনেকাংশে উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে। গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তাদের আশা-আকাক্সক্ষা আজ মুখ থুবড়ে পড়ছে এবং প্রায়শই নতুন করে জীবিকার সন্ধান ব্রতীদের চেয়ে বৃহত্তর হয়ে পড়ছে। সাধারণ মানুষকে জীবনে বেঁচে থাকার পাশাপাশি জীবিকার জন্য একত্রিত করা, সৃজনশীল কর্মকা-ে স্থানীয় পর্যায়ে উপযুক্ত করা, সংগঠিতভাবে জীবিকার জন্য কর্মকা-ে সংযুক্ত করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।

করোনাভাইরাসের দুর্বিষহ আক্রমণ দেশে দেশে সামাজিক-অর্থনৈতিক সূচকসমূহে আঘাত করছে। বিকাশের পরিমাপ করা, রাষ্ট্রের গতি-প্রকৃতি বিবেচনাবোধে আনয়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই প্রত্যেক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠানসমূহের সততা, ন্যায়-নিষ্ঠা পর্যাপ্তভাবে কাজ করছে কিনা তা দেখতে হবে। তারা দুর্নীতিগ্রস্ত কিনা তা নিশ্চিত করা দরকার। পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে তা স্বায়ত্তশাসিত কিনা সেটিও দেখা দরকার। আইনের শাসন ও চিকিৎসা ব্যবস্থায় মানুষকে মানবিকতার মর্যাদা দিচ্ছে কিনা সেটিও বিবেচনায় আনা উচিত। গ্রামীণ উন্নয়ন কাঠামোয় বাংলাদেশ কোভিড পূর্বকালীন রোল মডেল হিসেবে দেশে-বিদেশে সমাদৃত হয়েছিল। গত বছর মূলত গ্রামীণ অর্থনৈতিক কাঠামো দ্বারা সরকার দক্ষভাবে করোনা সমস্যাকে সামলেছিল। এমনকি করোনাভাইরাস পূর্বকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনসংখ্যার অর্ধেক বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যে ভুগেছে, নারী ও শিশু এবং ভিন্ন মতাবলম্বীরা উন্নত বিশ্বের দেশেও নির্যাতিত হয়েছে। অথচ বাংলাদেশ কিন্তু নারীশিক্ষা প্রসারে এবং নারীর ক্ষমতায়নে ক্রমশ এগিয়ে গিয়েছিল। অথচ বিশ্বের কোন কোন দেশে নারীদের সঠিকমাত্রায় সমাজে তাদের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়নি এবং নানা বিবর্তনের কারণে উন্নয়ন বিতর্কের সঞ্চার করেছে ও কোন কোন ক্ষেত্রে হতাশাজনকভাবে পেছনে পড়ে ছিল। করোনাভাইরাস কিন্তু এই অসম উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে আরও পেছনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

উন্নয়নের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক বিকাশের বিষয়টি বিশেষত বৈষয়িক বিকাশও যদি ঘটে তবে প্রাকৃতিক সম্পদের বৃহত্তর ব্যবহার বুঝিয়ে থাকে, প্রায়শই এমন উপায়ে যদি ইচ্ছাকৃতভাবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসমূহকে অগ্রাহ্য করে থাকে যেমন- শিল্পের উৎস থেকে পানি দূষণ। কিন্তু এ সমস্ত পরিণতি সম্পর্কে লোকেরা সত্যিই অসচেতন- যেমন, মানুষ ইচ্ছেমতো বন উজাড় করে থাকে। অথচ একটি দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য বনায়ন করা দরকার। সম্পদ বিতরণের ক্ষেত্রে অবশ্যই সমতা বিধান করা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে উন্নয়নের জন্য জরুরী। জনবহুল দেশসমূহের ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে পরিবেশের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা দরকার। এদিকে পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতার জন্য আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশ মোটেও দায়ী নয়। আশার কথা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন যে, এ সপ্তাহের শেষের দিকে অনুষ্ঠিতব্য ‘জলবায়ু সম্পর্কিত শীর্ষ সম্মেলনে’ মূলত বাংলাদেশের বিষয়সমূহকে আয়োজকরা এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করবে। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলায় অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন যে, জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরামের নেতৃত্বের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছে এবং জলবায়ু সম্মেলনের সময় তিনি বিশেষত জলবায়ু প্রভাবের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে ‘বাংলাদেশের নেতৃত্বের জন্য স্বীকৃত’ হবেন, যা এদেশের ভাবমূর্তিকে বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল করবে। জাতীয় নির্ধারিত আবেদনের ক্ষেত্রে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরামের পক্ষে সমস্ত দেশকে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করা প্রয়োজন। এ বিশ্ব ব্রহ্মা- আমাদের সবার নীড় এবং এখানে যথাযথভাবে মর্যাদা নিয়ে বিশ্বের সব মানুষ ও পরবর্তী প্রজন্মও যেন বেঁচে থাকতে পারে। একটি সামাজিক পদ্ধতি যা বিশে^র মধ্যে সব মানুষকে এক সূত্রে গাঁথা প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু প্রদর্শিত এবং অপ্রদর্শিত উপায়ে অসমভাবে যে অসম বণ্টন ব্যবস্থা উন্নয়নের ক্ষেত্রে বারবার ঘটে চলেছে তা অগ্রযাত্রাকে অবরুদ্ধ করে দিচ্ছে। বৈশ্বিক মানব হিসেবে নৈতিক দায়িত্ব, আলোকিত স্বার্থ, আদর্শিক পছন্দ- এটি করোনাকালীন যে কোন সময়ের চেয়েও বেশি করে অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ। মানব উন্নয়ন সূচক, যা আয়ু একত্রিত করে জীবনে বেঁচে থাকার পরিমাপ, যা সুস্বাস্থ্যের অধিকার, মাথাপিছু আয় এবং শিক্ষাগত ব্যবস্থার মিশ্রণ এ হিসাবে মোট দেশজ উৎপাদনের বিকল্প হিসেবে জীবনকে বাঁচাতে ক্ষমতা পরিমাপের প্রচেষ্টা উন্নয়ন মূল্যায়নে একটি মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এই মানব উন্নয়ন সূচক নব্বইয়ের দিকে ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করে। এক্ষেত্রে মানব মর্যাদার অতিরিক্ত বিকাশের মানদ- দ্বারা চ্যালেঞ্জপ্রাপ্ত। ধর্মীয় স্বাধীনতা, সাংস্কৃতিক রক্ষণাবেক্ষণ, রাজনৈতিক মত প্রকাশ, অংশগ্রহণ এবং ক্ষমতায়ন ও নাগরিক উন্নয়ন জোরালোভাবে উন্নয়ন অর্থনীতিতে উচ্চারিত হয়েছে। এগুলো বিশ্বের প্রত্যেক দেশের ‘শাসন ব্যবস্থার’ বিষয়সমূহে সর্বজনীন হয়ে উঠেছে। করোনাকালেও বণ্টন ব্যবস্থায় ন্যায্যতা, সততা, ন্যায়পরায়ণতা বিশ্বব্যাপী শাসন ব্যবস্থায় উচ্চারিত হচ্ছে, যাতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়। পাশাপাশি ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশ ক্রমশ সংঘটিত হচ্ছে, যাতে একটি দেশ দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করা যায়।

ডিজিটালাইজেশনে তথ্য ও উপাত্ত ভাগ করে নেয়, প্রয়োজনে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে সুযোগ করে দেয়, ক্ষতি ছাড়াই প্রচার করতে এবং প্রয়োজনে নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে সাহায্য করে থাকে। বৈশ্বিক পরিম-লে মানুষ, স্বীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দক্ষতার সঙ্গে বেঁচে থাকতে হলে, জীবনের অস্তিত্বকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে কঠিন সংগ্রামমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং নেতৃত্বহীনতার অযোগ্যতা বিশ্বের নানা দেশে নানামুখী সমস্যার সৃষ্টি করেছে। মিয়ানমারে যেভাবে আউং সান সুচির নেতৃত্বে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন করে বাংলাদেশে প্রেরণ করেছিল এটি তার অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং নিম্নমুখী নেতৃত্বের পরিচায়ক। আজ অদৃষ্টের পরিহাসে তাকেই ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে। অন্যদিকে ভিন্ন দেশের উদ্বাস্তুদের বাংলাদেশই আশ্রয় দিয়ে মানবতার বিজয় নিশ্চিত করেছে। করোনাকালে দেশে-বিদেশে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে উন্নয়নের সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দরকার।

লেখক : ম্যাক্রো ও ফিন্যান্সিয়াল ইকোনমিস্ট ও আইটি এক্সপার্ট
pipulbd@gmail.com

আরকে//


** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।
Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


টেলিফোন: +৮৮ ০২ ৫৫০১৪৩১৬-২৫

ফ্যক্স :

ইমেল: etvonline@ekushey-tv.com

Webmail

জাহাঙ্গীর টাওয়ার, (৭ম তলা), ১০, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

এস. আলম গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি