ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

ব্রেইল পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষিত হতে চায় দৃষ্টিহীন শিশুরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২২, ১৫ অক্টোবর ২০২১ | আপডেট: ১২:২২, ১৫ অক্টোবর ২০২১

পরিবার কিংবা সমাজের বোঝা নয়; ব্রেইল পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষিত হতে চায় দৃষ্টিহীন শিশুরা। সাবলম্বী হয়ে অবদান রাখতে চায় সমাজ ও রাষ্ট্রে। স্বনির্ভর মানুষ হওয়ার স্বপ্ন তাদের। 

চোখের আলো নেই, তাই বলে কি থেমে থাকবে পথ চলা? স্পর্শানুভূতির সাহায্য নিয়েই লেখাপড়া করে অন্ধত্বকে জয় করার চেষ্টা দৃষ্টিহীন শিশুদের। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এসব শিশুর বেশিরভাগই পুরোপুরি অন্ধ। কেউ হয়তবা খুবই অল্প দেখতে পায়। ব্রেইল পদ্ধতি সহজ করেছে তাদের বড় হয়ে ওঠার প্রচেষ্টাকে। 

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এমনই এক শিশু জানালো, সে বড় হয়ে চাকরি করবো। মা-বাবাকে খাওয়াবো। নিজেই নিজের সব করবো।

আত্মবিশ্বাসী আরেক শিশু জানায়, আমি বড় হয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়র হতে চাই। মা-বাবার মুখ উজ্জল করবো। 

ব্রেইল এমন এক পদ্ধতি, যেখানে কাগজের ওপর ছয়টি বিন্দু ফুটিয়ে তুলে লেখার এক বিশেষ কৌশল। বিন্দুগুলোর ওপর আঙ্গুলের স্পর্শ অনুভব করলে অক্ষর বুঝতে পারেন দৃষ্টিহীনরা।

স্লেট ও স্টাইলাসের মাধ্যমে হাতের সাহায্যে ব্রেইল লেখা যায়; প্রথমে কঠিন মনে হলেও পদ্ধতিটি রপ্ত করেছে এই শিশুরা।

তারা জানায়, প্রথমে মনে হয়েছে যে পারবো না। কিন্তু এখন মনে হয় সব কিছুই সোজা। 

তারা আরও জানায়, নিজে যদি ভালো কিছু শিখতে পারি, অন্যকে শিখাতে পারি তাতেই আমার খুব ভালো লাগে।

ফরাসি শিক্ষাবিদ লুইস ব্রেইল ১৮২৯ সালে ব্রেইল পদ্ধতি আবিস্কার করেন।

রাজধানীর মিরপুরে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়। যেখানে আবাসিক ও অনাবাসিক ব্যবস্থাপনায় দৃষ্টিহীন শিশুদের পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়ার ব্যবস্থা আছে। শতভাগ শিক্ষার্থীর ফলাফল খুবই ভালো। 

সরকারি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বলেন, “সরকারি ও বেসরকারিভাবে অনেক জায়গাতেই সুবিধা আছে। শুধু আপনাদেরকে সঠিক তথ্যটা দিতে হবে যে- কোথায় গেলে আমার এই প্রতিবন্ধী বাচ্চাটা সঠিক সেবাটা পাবে, সঠিক শিক্ষাটা পাবে। সেখানে গেলে এই বাচ্চাই একদিন সম্পদে পরিণত হবে। আপনার জন্য আশির্বাদ হবে।”

প্রযুক্তি ব্যবহারেও পিছিয়ে থাকছে না তারা। বিশেষ পদ্ধতিতে কম্পিউটার শেখানো হয় এখানকার শিক্ষার্থীদের।  

গান, ছড়া কিংবা কবিতা পাঠ; মেধার বিকাশে অন্য শিশুদের চেয়ে কোন দিক থেকেই পিছিয়ে নেই তারা। 

লায়নস ইন্টারন্যাশনালের জরিপ বলছে, বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ পুরোপুরি ও আংশিকভাবে চোখে দেখেন না; বাংলাদেশে এ সংখ্যা ১৪ লাখের বেশি।

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা এখন আর বোঝা নয়, নিজেদের অক্ষমতাকে জয় করে তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। সমাজের মূল ধারায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে শুধু সরকার নয়, সামাজিকভাবেও প্রত্যেকের আন্তরিক হতে হবে। এমনটাই জানালেন বিশেষজ্ঞরা। 
দেখুন ভিডিও :


এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি