ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪

মিশরে ৪৫০০ বছরের প্রাচীন পোকার মমির সন্ধান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:২১, ১২ নভেম্বর ২০১৮

প্রায় ২৫০০-২৩৫০ খ্রিস্টপূর্ব আমলের স্ক্যারাব বিটলস ও গুবরে পোকার বেশ কয়েকটি মমি পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা।

চলতি সপ্তাহে সমাধি খননের সময় সাতটি সমাধিতে এই মমিগুলো পাওয়া যায়।

এদিকে কায়রোর দক্ষিণে সাকারায় গত ছয় মাস ধরে কিং উসেরকাফ ফারাওয়ের পিরামিড চত্বরে আরো বেশ কয়েকটি পোকা-মাকড় ও প্রাণীর মমি পাওয়া যায়।

গিজার পিরামিড তৈরির পরবর্তী সময়ে প্রাচীন মিশর শাসন করতেন উসেরকাফ। মিশরের সুপ্রিম কাউন্সিল অব অ্যান্টিকুইটির তরফে মোস্তাফা ওয়াজ়ারি জানিয়েছে, সমাধির প্রবেশ দ্বার ছিল একেবারে অক্ষত অবস্থায়, সিল করা।

২০১৩ সালে এখানে খননকার্য শুরু হয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এর পর খনন শুরু হয় চলতি বছর এপ্রিল মাসে। মাস কয়েক খোঁড়ার পর আয়তাকার চুনাপাথরের ভাস্কর্যে অলঙ্কৃত পাথরের শবাধারে দু’টি মমি পাওয়া যায়, তাতে তিনটি গুবরে-পোকা মেলে।

লিনেনে মোড়া দু’টি গুবরে পোকা একটি কারুকাজ করা পাত্রের মধ্যেই ছিল। ছোট্ট একটি কফিনে আরও বেশ কয়েকটি পোকার মমি মিলেছে।

সাকারা ছিল মেমফিসের নেক্রোপলিস, মিশরের প্রাচীন রাজধানী। সেখানে ধর্মীয় কারণেই মৃত্যুর পর মানবদেহের মমির সঙ্গে দেওয়া হত জীবন্ত গুবরে পোকা।

গুবরে পোকার উল্লেখ পাওয়া যায় প্রাচীন মিশরের প্রায় প্রতিটি হায়ারোগ্লিফস লিপি, পুরাকীর্তি আর ভাস্কর্যে। অলঙ্কার, সিলমোহর ইত্যাদিতে পাওয়া যায় স্ক্যারাবের প্রতিকৃতি।

স্ক্যারাবের অলঙ্করণ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছিল বিভিন্ন ধরনের রক্ষাকবচ আর পবিত্র নিদর্শনে। মিশরের আদিম অধিবাসীরা স্ক্যারাবকে ঊষার দেবতা খেপরির পবিত্র প্রতীক হিসেবে সম্মান করত।

স্ক্যারাবের রক্ষাকবজ মিশরীয়দের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে তা পরকালের জন্য। ফারাওদের মমির সঙ্গে দেওয়া স্ক্যারাব আকৃতির পোশাক, মাদুলি কিংবা সমাধির গায়ে খোদাই করে রাখা ছবিই তার প্রমাণ বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

অনেক মমির বুকের ওপরে পাওয়া গিয়েছে একটি বিশেষ স্ক্যারাবের কবজ যা মানুষের হৃদপিণ্ডের আকৃতির। যা নাকি পূণ্যের প্রতীক। জীবনকে এগিয়ে নিয়ে চলার প্রতীক।

সাড়ে চার বছর আগের ২১টা বিড়ালের মমির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে এই খননের সময়েই।

প্রাচীন মিশরে বিড়ালকে অত্যন্ত পবিত্র মনে করা হত। সবাই সম্মান করত ছোট্ট প্রাণীটিকে। যে কারণে বিড়ালকে তারা শিল্পে স্থান দিয়েছিল। মর্যাদা দিয়েছিল দেবতার। মৃত্যুর পর বিড়ালের মমিও করা হত।

বিড়াল ছাড়াও মিলেছে কুমিরের সমাধি। অ্যামিউলেট, ফ্যালকন, প্রাচীন আমলের পাত্র, লেখার সামগ্রী ইত্যাদিও মিলেছে খননের সময়ে। একটি ছোট প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে সমাধি ক্ষেত্র ঘিরে।

সুবেক সেকট আর মাফি নামে দুই প্রাচীন মিশরীয় মহিলার নাম মিলেছে সমাধিতে। তবে তারা কারা, তা জানা যায়নি। নাম খোদাই করা ছিল সমাধির গায়ে।

বিড়াল দেবতা বাস্তেতের মমি পাওয়ার পর স্থানীয়দের অনেকেই মনে করছেন, মিশরীয়দের জীবনে কোনও ভাল ঘটনা ঘটতে চলেছে।

খননের সময়েই ৪৫০০ বছরের প্রাচীন একটি সমাধি পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। এটি একেবারেই অবিকৃত।

কারুকাজ করা সাপের মূর্তিও মিলেছে সমাধিস্থল থেকে, যেগুলি প্রাচীন আমলের কাঠের তৈরি।

তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার

এমএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি