ঢাকা, শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪

যে দেশের ২৪ হাজার মানুষের ২ হাজারই বাংলাদেশি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:১১, ১৪ জুলাই ২০২০

অপরূপ সৌন্দর্যের দেশ পালাউ। যদিও এটি প্রশান্ত মহসাগরের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র। ছোট বড় ২৫০টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত এটি। এই দেশটিতে মাত্র ২৪ হাজার মানুষ বাস করে। এর মধ্যে দুই হাজারই বাংলাদেশি। এই পালাউ রাষ্ট্রটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

গতকাল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সভায় যুক্ত হন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবগণ। এই বৈঠকে পালাউ-এর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত একটি চুক্তির খসড়া অনুসমর্থনের প্রস্তাব রাখেন মন্ত্রিপরিষদের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

এ সময়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় একটি ছোট্ট দ্বীপ পালাউ, যার আয়তন ৪৬৬ বর্গকিলোমিটার। দেশটির জনসংখ্যা ২২ থেকে ২৪ হাজার। তার মধ্যে দুই হাজার বাংলাদেশি, যারা সেখানে কাজ করেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, জাতিসংঘের আর্থিক সহায়তায় চলে এই দেশ। জাপানের টোকিও-তে বাংলাদেশ দূতাবাস এখন পালাউয়ের বিষয়গুলো দেখভাল করছে। কিন্তু আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকার কারণে পালাউ-এ গিয়ে সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেবা দিতে টোকিও মিশন অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। 

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পালাউ-এ থাকা বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশ সুপারি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেন। সেখানে সুপারি অনেক জনপ্রিয় আইটেম, পথেঘাটে মুড়ি, চা খাওয়ার মতো ওখানকার লোকজন দোকানে কাঁচা সুপারি খায়। এই কাজে বাংলাদেশিরা বেশি ইনভল্ব। এছাড়া সার্ফিংয়ের কাজেও বাংলাদেশিরা ইনভল্ব। সার্ফিং তাদের একটা বড় আয়ের উৎস।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ভিয়েনা কনভেনশন-১৯৬১ অনুসারে বাংলাদেশ ও পালাউ গত বছরের ১৬ জুলাই কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চুক্তিটি অনুসমর্থন করা প্রয়োজন। চুক্তিটি অনুসমর্থন করা হলে এটি বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করবে। বর্তমানে ভারতসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশের সঙ্গে পালাউ-এর কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। 

মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই চুক্তিটি অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান। এর ফলে পালাউ-এ বসবাসরত দুই হাজার বাংলাদেশির স্বার্থ সংরক্ষণ করা সহজ হবে বলেও মনে করছেন তিনি।

জানা যায়, দ্বীপরাষ্ট্র পালাউ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের জাতিসংঘ ট্রাস্ট এলাকার অন্তর্ভুক্ত হয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শাসনাধীনে আসে। ১৯৯৪ সালের অক্টোবর মাসে পালাউ একটি স্বশাসিত রাষ্ট্রে পরিণত হয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এ ব্যাপারে একটি চুক্তিতে পৌঁছায়।

পালাউ দ্বীপপুঞ্জের কোরোর শহর দেশটির বৃহত্তম শহর এবং রাজধানী। তবে বাবেলথুয়াপ নামের দ্বীপে নতুন একটি রাজধানী গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশটির অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে পর্যটনশিল্প, কৃষি ও সামুদ্রিক মৎস্য শিকার। জনগণের মাথাপিছু আয় প্রায় ১৬ হাজার ৭০০ ডলার।

পালাউয়ের অন্যতম আকর্ষণ এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। পুরো দ্বীপরাষ্ট্রটিকে বেষ্টিত করে রেখেছে স্বচ্ছ নীল জলরাশি। ইচ্ছে করলে আপনি ডুবরীর পোশাক পরে নেমে যেতে পারেন সাগরের তলদেশ ভ্রমণে। সেখানে দেখা মিলবে হাজারো প্রজাতির সুন্দর সুন্দর প্রাণীর। এইসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো পর্যটক এখানে ছুটে আসেন।

পালাউয়ের আবহাওয়া নাতিশীতোষ্ণ। এখানকার গড় তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া এখানে সারাবছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। গড়ে প্রতিবছর এখানে ৩,৮০০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় জুলাই থেকে অক্টোবর মাসে।

এএইচ/এমবি


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি