ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

রাশিয়ার ভ্যাকসিন নিয়ে ধোঁয়াশা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:২৬, ১২ আগস্ট ২০২০

রাশিয়া ‘প্রথম’ হওয়ার তাড়নায় করোনার যে ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়েছে, তা নিয়ে সতর্ক করে প্রশ্ন তুলেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা। তাদের প্রশ্ন- ভ্যাকসিনটি কীভাবে তৈরি হলো, সুরক্ষা সম্পর্কিত তথ্য, রোগ প্রতিরোধে কতটা সক্ষম এবং আদৌ এই ভ্যাকসিন কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ঠেকাতে পারে কিনা— এসব নিয়ে রাশিয়া বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি। যার কারণে বিজ্ঞানী, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণ মানুষ ধোঁয়াশার মধ্যে পড়েছেন।

মানবদেহে প্রয়োগের দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে রাশিয়া করোনার যে ভ্যাকসিনটি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে, তা নিয়ে তারা সতর্ক করে এসব প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলছেন, ট্রায়ালের সম্পূর্ণ তথ্য ছাড়াই ভ্যাকসিনটির সুরক্ষা ও কার্যকারিতার ব্যাপারটি বিশ্বাস করা কঠিন।

মহামারি করোনা প্রতিরোধে বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিন তৈরির প্রতিযোগিতায় প্রথম হতে চেয়েছিল রাশিয়া। তাই বৃহৎ পরিসরে পরীক্ষা চালিয়ে নিরাপদ ও কার্যকরিতা ভালোভাবে যাচাই না করেই ভ্যাকসিন ব্যবহারে মস্কোর অনুমোদনকে বিশেষজ্ঞরা ‘বেপরোয়া পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। 

ব্রিটেন ওয়ারউইক বিজনেস স্কুলের বিশেষজ্ঞ ওষুধ গবেষক আয়ফার আলি রয়টার্সকে বলেন, ‘এত দ্রুত ভ্যাকসিন ব্যবহারের এমন অনুমোদনের অর্থ হচ্ছে এর দ্বারা বিরুপ প্রভাবের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এটা বিরল। এ কারণে এই ভ্যাকসিন মারাত্মক ও নেতিবাচক ফল বয়ে আনতে পারে।’

এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভ্যাকসিনটির অনুমোদন দিয়ে বলেন, আমরাই প্রথম করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করেছি। আমাদের তৈরি ভ্যাকসিনটি স্থায়ী বা টেকসই প্রতিরোধী সক্ষমতা দেখাতে সক্ষম। প্রয়োজনীয় সব ধাপ অতিক্রম করেই তা কার্যকর হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

প্রথম দেশ হিসেবে সাফল্যের ঘোষণা দেওয়া রাশিয়া তাদের ভ্যাকসিনটির নাম রেখেছে ‘স্পুটনিক-৫’। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সর্বপ্রথম মহাশূন্যে তারা যে স্যাটেলাইট প্রেরণ করে তার নামও ছিল স্পুটনিক।

ইম্পেরিয়াল কলেজ অব লন্ডনের ইমিউনোলোজির অধ্যাপক ড্যানি আল্টম্যান বলেন, ‘নিরাপদ ও কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়নি, এমন কোনো ভ্যাকসিন মানুষের ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেওয়ায় ভ্যাকসিনের কল্যাণে মানুষ যতটা উপকৃত হওয়ার কথা ছিল সমান্তরালভাবে ঠিক ততটাই ক্ষতি হবে।’

নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ ও মহামারি বিশেষজ্ঞ কেইথ নিল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘রাশিয়ার তৈরি করোনার ভ্যাকসিন কার্যকর ও নিরাপদ কিনা এটা তো আমরা জানতে পারছি না। কারণ এর বৈজ্ঞানিক ফলাফল তারা কোথাও প্রকাশ করেনি। ফলে এটি নিয়ে সংশয় থাকাটাই তো স্বাভাবিক।’

শুধু বিজ্ঞানী আর বিশেষজ্ঞ নয় স্বাস্থ্য বিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থা ডব্লিউএইচও রাশিয়ার তৈরি ও অনুমোদন পাওয়া ভ্যাকসিন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। তারা যে ভ্যাকসিন মানুষের ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওই ভ্যাকসিন নিয়ে মূল্যায়ন করার মতো পর্যাপ্ত তথ্য পায়নি।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি