ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

লঞ্চে আগুন: দুই মাস্টার কারাগারে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৫০, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কর্তব্য অবহেলার অভিযোগে করা মামলায় লঞ্চটির দু’জন মাস্টারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

তারা হলেন- লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার মো. রিয়াজ সিকদার ও দ্বিতীয় মাস্টার মো. খলিলুর রহমান। 

মঙ্গলবার নৌ-আদালতের বিচারক স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগমের আদালতে তারা আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

রাষ্ট্রপক্ষে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রসিকিউটিং অফিসার বেল্লাল হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

রাষ্ট্রপক্ষে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রসিকিউটিং অফিসার বেল্লাল হোসাইন জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, “অভিযুক্তরা তাদের কর্তব্য কাজে চরম অবহেলা করে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক ও কলংকজনক নৌ-দূর্ঘটনা ঘটিয়েছে। আসামিরা যাত্রীদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে বিপদে জাহাজ ছেড়ে পালিয়েছেন। তারা কোনো জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম ব্যবহার করেনি। অগ্নিকান্ডের পর জাহাজ তীরে না ভিরিয়ে চালু রেখে চরম অবহেলা দেখিয়েছে। এই ঘটনায় ৪২টি তাজা প্রাণ পুড়ে ছাই হয়েছে।”

অপরদিকে আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। 

তিনি আসামিদের জামিনের আবেদন করে বলেন, “জামিন পেলে আসামিরা বিচারে অংশগ্রহণ করবে। তারা পালিয়ে যাবে না। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।”

এর আগে রোববার (২৬ ডিসেম্বর) নৌ-আদালতের বিচারক স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগমের আদালতে নৌ অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক মো. শফিকুর রহমান স্পেশাল মেরিন আইনের ৫৬/৬৬ ও ৭০ ধারায় আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। 

মামলার আসামিরা হলেন, লঞ্চের মালিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল আরাফ অ্যান্ড কোম্পানির চার মালিক মো. হামজালাল শেখ, মো. শামিম আহম্মেদ, মো. রাসেল আহাম্মেদ ও ফেরদৌস হাসান রাব্বি। এছাড়া লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার মো. রিয়াজ সিকদার, ইনচার্জ চালক মো. মাসুম বিল্লাহ, দ্বিতীয় মাস্টার মো. খলিলুর রহমান ও দ্বিতীয় চালক আবুল কালাম। 

গত ২৩ ডিসেম্বর আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টার দিকে সদরঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে এমভি অভিযান-১০ বরগুনার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। লঞ্চটি ঝালকাঠির নলছিটি থানা এলাকা অতিক্রম করার পর রাত আনুমানিক ৩টার দিকে ইঞ্জিন রুমে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর লঞ্চঘাটের কাছে জাহাজে থাকা যাত্রীদের অনেকে নদীতে লাফ দেন। আগুনে কেবিনসহ সবই পুড়ে যায়। 

ইনচার্জ মাস্টার, ইনচার্জ ড্রাইভার ও সেকেন্ড ড্রাইভার আগুন নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ না নেওয়ায় ৪২ জন যাত্রী পুড়ে মারা যান। আনুমানিক শতাধিক যাত্রী দগ্ধ হয়েছেন। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

নৌযানটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, লাইফ বয়া, বালির বাক্স ও বালতি ছিল না। ইঞ্জিন রুমের বাইরে অননুমোদিতভাবে অনেকগুলো ডিজেল বোঝাই ড্রাম ও রান্নায় ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার ছিল বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
সূত্র : বাসস
এসএ/


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি