ঢাকা, শনিবার   ০৪ মে ২০২৪

‘শেখ কামালকে নিয়ে অপপ্রচার করেছে বিরোধীরা’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:০৪, ৫ আগস্ট ২০২২ | আপডেট: ১৫:০৮, ৫ আগস্ট ২০২২

পদ-পদবি নিয়ে শেখ কামালের কখনই কোনো চিন্তা ছিল না, তিনি শুধু ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। তিনি ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি সময়ই মিছিল-মিটিংয়ে কর্মী থেকে সংগঠক হিসেবে দেশের জন্যে কাজ করে গিয়েছিলেন। শেখ কামালের জন্মবার্ষিকীতে তাকে এভাবেই স্মরণ করেছেন ইউজিসি সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, একই সঙ্গে নাট্যকার ও ক্রীড়া সংগঠকও ছিলেন শেখ কামাল। সত্তর দশকে আবাহনী ক্রীড়াচক্র প্রতিষ্ঠা করে প্রথম বিদেশি কোচ এনে ক্রীড়াঙ্গনে আলোড়ন তুলেছিলেন তিনি। 

শুক্রবার (৫ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘শেখ কামাল: ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, "শেখ কামাল প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ছিলেন কিন্তু তিনি আদর্শবান মানুষ ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের সদস্য হয়েছেন, চাইলে সভাপতি হতে পারতেন কিন্তু তা হলেন না।"

সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর আহবায়ক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় এর সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে শহীদ শেখ কমালের সংক্ষিপ্ত ও বর্নাঢ্য জীবনের নানান দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। 

২০১৭ সালে সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে ১ম বারেরমত আবাহনী ক্লাবের বাইরে শেখ কামালের জন্মদিন পালনের স্মৃতিচারণ করেন পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি বর্তমান সময়ে অনেক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান শেখ কামালের জন্মদিন পালন করায় সন্তুষ্টিও প্রকাশ করেন তিনি। একই সাথে তরুন প্রজন্মকে শেখ কামালকে আদর্শ হিসেবে নেয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।

এ সময় একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, শেখ কামালের সঙ্গে সেদিন যারা ছিলেন তারা কেন সেদিনের ঘটনা বলেন না। তারা আজও তো আওয়ামী লীগের সঙ্গে রয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক আজ। কঠিন সময় পার করেছে আওয়ামী লীগ। শেখ কামালকে নিয়ে কুৎসা রটিয়েছে স্বাধীনতা বিরোধীরা। শেখ কামালকে নিয়ে আমরা স্কুল পর্যায়ে কুইজ প্রতিযোগিতা করতে পারি। তাকে কেবল জন্মদিনে বা মৃত্যু দিনে কেন স্মরণ করতে হবে। তাকে সারাবছরই স্মরণ করতে পারি নানা আয়োজনের মাধ্যমে।"

স্মৃতিচারণ করে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, "শেখ কামাল ব্যতিক্রমী ছিলেন। আবহানী সংগঠিত করেছেন তিনি। কিন্তু তার সভাপতি হননি। বিভিন্ন সংগঠন করেছেন কিন্তু সংগঠনের প্রধান পদে আসেননি। তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে আমাদের বিরোধীরা। আমরা ২১ বছর সংগ্রাম করেছি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের জন্য। শেখ কামাল বেঁচে থাকলে হয়তো বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার এতোদিন লাগতো না।"

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান বলেন, "২৫ মার্চের রাতের পরে বাড়ি ত্যাগ করে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে যান যুদ্ধে যোগ দিতে। শেখ কামাল অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব।" যুবসমাজ, নতুন প্রজন্ম যেন তার মতো সুনাগরিক হয়ে উঠতে পারে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

শেখ কামালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু নুরুল আলম বলেন, "শেখ কামাল সিনিয়রদের অনেক সম্মান করতেন। আমার বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে সম্মান করে কথা বলতেন। শেখ কামাল মেধাবী ছাত্র ছিল, ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন ছিলেন, বাস্কেটবল খেলতেন। শেখ কামাল ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী।"

শেখ কামালের ঘনিষ্ঠ বন্ধু তাওহীদ হোসেন বাদল বলেন, শেখ কামাল ১৫ আগস্টের প্রথম শহীদ। জাতির পিতা ও পরিবারকে বাঁচাতে প্রথম নীচে নেমে এসেছিলেন তিনি, বোঝাতে চেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতির পরিবারকে হামলা না করতে কিন্তু ঘাতকচক্র না শুনে হত্যা করলো।"

তিনি বলেন, "কামাল যুদ্ধের পরে নাট্য আন্দোলন শুরু করলেন। শেখ কামাল অনেক নাটক করেছেন। বিদেশে নাটক নিয়ে গেছেন, প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তারপর স্পন্দন শিল্পগোষ্ঠী করেছেন শেখ কামাল। কামাল খুব ভাল লোক সংগীত গাইতে পারতেন।"

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, "তরুণ প্রজন্ম হিসেবে আমরা শেখ কামাল সম্পর্কে জানতে পারছি। তিনি চাইলে পারতেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি হতে। কিন্তু তা করেননি। তিনি কোনো অন্যায় কাজ করতেন না। কিন্তু তাকে নিয়ে নানা প্রোপাগান্ডা চালানো হয়েছে এখনো তা রয়েছে।"

সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় এসময় সংগঠনটির সদস্যসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তবে অসুস্থ থাকায় উপস্থিত হতে পারেন নি তিনি। 

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি