সাবেক এসবি প্রধান মনিরুলের পরিবারতন্ত্রের‘বিলাসবহুল সাম্রাজ্য’
শ্যালক শ্যালিকা স্ত্রীসহ মিলেমিশে লুটেছেন হাজার হাজার কোটি টাকা
প্রকাশিত : ১২:১৫, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম ও তার পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে বেরিয়েছে—রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার নামে তারা খুলেছেন এনজিও, আর সেই পথে হাতিয়ে নিয়েছেন এক হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ। শুধু তাই নয়, আত্মসাৎকৃত অর্থ ঘুরেছে স্ত্রীর, শ্যালকের, শ্যালিকার, এমনকি গৃহিণী ভগ্নিপতির স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবেও।
দুদক ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার হাতে থাকা নথি বলছে, মনিরুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব সায়লা ফারজানার নামে পরিচালিত একাধিক হিসাব থেকে কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। একই কৌশলে জড়িত ছিলেন শ্যালক রেজাউল আলম শাহীন, তার স্ত্রী সানজিদা খানম টুম্পা এবং টুম্পার ভাই দেলোয়ার হোসেন। তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান—এস এস এন্টারপ্রাইজ ও উপমা ইন্টারন্যাশনাল—ছিল টাকার প্রধান ‘ট্রানজিট হাব’।
কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ ও শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনাল—দুটি নামকরা এনজিও থেকে এসেছে বিপুল অনুদান। সেই অনুদান রোহিঙ্গাদের জন্য ব্যয় হওয়ার বদলে গেছে ব্যাংক হিসাবের লেয়ারে লেয়ারে। শুধু কেএসআর-এর এক হিসাবেই ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জমা হয়েছে প্রায় ৮৭০ কোটি টাকা, যার বেশিরভাগই আত্মসাৎ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ।
সানজিদা টুম্পার নামে মাত্র কয়েক বছরে জমা হয়েছে ১১.৭০ কোটি টাকা; শ্যালক শাহীনের হিসাবে মিলেছে একাধিক এফডিআর, যেখানে কোটি কোটি টাকার ঘুরপাক। মনিরুল নিজেও মিরপুর ও উত্তরায় কিনেছেন অন্তত ৫০টি ফ্ল্যাট—অধিকাংশ স্ত্রী ও আত্মীয়দের নামে।
একজন দুদক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, “প্রাথমিকভাবে যা দেখা যাচ্ছে, এটি দুর্নীতি আর মানি লন্ডারিংয়ের ক্লাসিক কেস। এনজিওর নামে রোহিঙ্গা সহায়তার টাকা থেকে শুরু করে সরকারি প্রভাব খাটিয়ে সংগৃহীত ঘুষ—সব মিলেই অর্থের অজস্র স্রোত তৈরি হয়েছে।”
অভিযোগের সত্যতা যাচাই এখনও চলমান। তবে এতো পরিবারকেন্দ্রিক ‘সিন্ডিকেট’ কেবল দুর্নীতি নয়—বাংলাদেশের মানবিক সহায়তার ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, বলছেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
এসএস//
আরও পড়ুন