ঢাকা, সোমবার   ০২ জুন ২০২৫

সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৩৮, ৩১ মে ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আগামীকাল ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসের জন্য পর্যটক ও বনজীবীরা এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকবেন। শনিবার (৩১ মে) দুপুরে সুন্দরবনের ডিএফও এজেডএম হাছানুর রহমান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

গত ২-৩ দিন ধরে খুলনা রেঞ্জের সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে মাইকিং করে স্থানীয় বনজীবীদের এ কথা জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে সুন্দরবনের ভেতরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। 

বন বিভাগ জানায়, আগামী ৩ মাস কোনো বনজীবী এবং পর্যটককে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতিপত্র দেওয়া হবে না। বর্ষাকালে সুন্দরবনের ২৫১ প্রজাতির মাছ ডিম ছাড়ে। এ সময় মাছ ধরা বন্ধ রাখলে প্রাকৃতিক মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। 

আরও পড়ুন: মেঘনায় ট্রলারডুবি, ২ জনের মরদেহ উদ্ধার, নিখোঁজ ১৭

এদিকে নিষেধাজ্ঞার কারণে উপকূলীয় অঞ্চলের বনজীবী হিসেবে পরিচিত জেলে, বাওয়ালি ও মৌয়ালরা কিভাবে সংসার চালাবেন এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। 

এ বিষয়ে কয়রার অনেক বনজীবীরা জানিয়েছেন, বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় তিন মাস তাদের কষ্টের মধ্যে দিন পার করতে হবে। 

শনিবার সকালে সুন্দরবনসংলগ্ন কয়রা উপজেলার শাকবাড়িয়া নদীর তীরে গিয়ে দেখা যায়, সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরে আসা শতাধিক মাছ ধরা নৌকা নদীর তীরে বেঁধে রাখা হয়েছে। কেউ কেউ আবার নৌকা মেরামত করার জন্য বেড়িবাঁধের রাস্তার ওপর উঠিয়ে রেখেছেন। 

সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম সাহিদ বলেন, ১ জুন থেকে সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ ধরা বন্ধের পাশাপাশি পর্যটক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে সুন্দরবনে প্রবেশের সব ধরনের পাশ-পারমিটও। এ সময় বন্য প্রাণী শিকার ও মাছ ধরা বন্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে বন বিভাগ। 

কয়রা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কয়রায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন ১৩ হাজার ৫২৬ জন। 

অবশ্য স্থানীয় বনজীবীরা বলছেন, কয়রায় জেলেদের সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি। ভৌগোলিক কারণে কয়রার ৫টি ইউনিয়ন মানুষ সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। কয়রায় অন্তত ৫০ হাজার জেলে পরিবারের বসবাস, যারা বংশপরম্পরায় বনজীবী। তারা সুন্দরবনে মাছ-কাঁকড়া আহরণ করে। 

উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা সমীর কুমার সরকার বলেন, অনেকে প্রকৃত জেলে কিন্তু তাদের কার্ড না থাকায় আমরা উপকারভোগীর আওতায় আনতে পারছি না। যারা প্রকৃত জেলে না অথচ জেলে কার্ড আছে আমরা তাদের যাচাই-বাছাই করে কার্ড বাতিল করে প্রকৃত জেলেদের উপকারভোগীর অন্তর্ভুক্ত করবো। এ ব্যাপারে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন। 

খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এসিএফ মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে সব স্টেশনে পাশ-পারমিট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খুলনা রেঞ্জের অধীনস্থ এলাকায় টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এজেডএম হাছানুর রহমান বলেন, সুন্দরবনে ১ জুন থেকে ৯২ দিনের জন্য সব ধরনের পর্যটক ও বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি বন বিভাগের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, জেলে বাওয়ালিদের বিকল্প খাদ্য সহায়তার জন্য সাগরের জেলেদের জন্য মাসে কিছু সহায়তা করা হচ্ছে। আমরা বনজীবীদের মাসে ৪০ কেজি চাল দেওয়ার প্রস্তাব করে একটা তালিকাও মৎস দফতরে পাঠিয়েছি।

এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি