ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪

স্মরণে আনিসুজ্জামান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৪৫, ১৪ মে ২০২২

অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের দ্বিতীয় প্রয়াণদিবস ১৪ মে। ২০২১ সালের এই দিনে তিনি তার জীবনের বৃত্ত সম্পূর্ণ করে চলে গেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এমিরেটাস অধ্যাপক ছিলেন তিনি। ছিলেন দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, লেখক ও গবেষক, ভাষা সংগ্রামী, মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী, সংবিধানের অনুবাদক ও দেশের সব প্রগতিশীল আন্দোলনের অগ্রবর্তী মানুষ।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় আনিসুজ্জামান উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র। তরুণ সেই বয়সেই তিনি জড়িয়ে পড়েন সে আন্দোলনে। ভাষার দাবির প্রবল বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে পূর্ববঙ্গের বাঙালি তাঁদের নতুন ইতিহাস রচনার স্বপ্নের সূচনা করে। ইতিহাসের প্রবল টানে সেই যে বাঁধা পড়লেন আনিসুজ্জামান, তার থেকে আর মুক্ত হননি। মুক্তি তিনি চানওনি। ভাষার আন্দোলন তার মধ্যে যে কর্মিসত্তার উদ্বোধন ঘটাল, সেটি সচল রইল আজীবন। এর পর থেকে মুক্তিযুদ্ধের আগ পর্যন্ত নানা সাংস্কৃতিক আন্দোলনে জড়িয়ে পড়লেন মুহুর্মুহু।

আনিসুজ্জামান ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা এ টি এম মোয়াজ্জেম ছিলেন বিখ্যাত হোমিও চিকিৎসক। ১৯৫৬ ও ১৯৫৭ সালে স্নাতক সম্মান এবং এমএ-তে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। অনার্সে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার কৃতিত্বস্বরূপ ‘নীলকান্ত সরকার স্বর্ণপদক’ বৃত্তি লাভ করেন।

১৯৬৫ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। ভাষা আন্দোলন, রবীন্দ্র উচ্ছেদবিরোধী আন্দোলন, রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী আন্দোলন এবং ঐতিহাসিক অসহযোগ আন্দোলনে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন।

১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। এছাড়া শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত গণআদালতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন।

আনিসুজ্জামানের উল্লেখযোগ্য রচনাবলির মধ্যে ‘স্মৃতিপটে সিরাজুদ্দীন হোসেন’, ‘শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ স্মারকগ্রন্থ’, ‘নারীর কথা’, ‘মধুদা, ফতোয়া’, ‘ওগুস্তে ওসাঁর বাংলা-ফারসি শব্দসংগ্রহ’ ও আইন-শব্দকোষ অন্যতম।

বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, অলক্ত পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রিতে ভূষিত হয়েছেন। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘পদ্মভূষণ’ পেয়েছেন। সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তাকে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করা হয়। ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়।

দ্বিতীয় প্রয়াণদিবসে চন্দ্রাবতী একাডেমি প্রকাশ করেছে কবি মারুফুল ইসলাম সম্পাদিত আলোকচিত্রগ্রন্থ ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। শনিবার বিকাল চারটায় ফরেনসার্ভিস একাডেমিতে স্মরণ সভা ও আলোকচিত্রগ্রন্থটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি