ঢাকা, শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪

শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলা

৯ জনের ফাঁসি ২৫ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত : ১২:৪৫, ৩ জুলাই ২০১৯ | আপডেট: ১৬:১৬, ৩ জুলাই ২০১৯

পাবনা ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশনে ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ট্রেন বহরে হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় আদালত ৯ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন। এছাড়াও ২৫ জনকে যাবজ্জীবন সাজা ও ১৩ জনকে ১০ বছর করে সশ্রম সাজা প্রদান করেছেন।

বুধবার সকাল ১১টা ৫২ মিনিট থেকে বিচারক পাবনার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক রোস্তম আলী এই রায় পড়া শুরু করেন এবং ১২টা ৫৬ মিনিটে রায়পড়া শেষ করেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ড আসামীদের ৫ লাখ জরিমানা অনাদায়ে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, যাবজ্জীবন প্রাপ্তদের ৩ লাখ জরিমানা অনাদায়ে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং দশ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড প্রাপ্তদের ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।

ফাঁসির আসামীরা হলেন, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপি সাবকে সভাপতি ও সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু, পাবনা জেলা বিএনপি’র মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক এ কে এম আকতারুজ্জামান, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু, ঈশ্বরদী পৌর যুবদলের সভাপতি মোস্তফা নূরে আলম শ্যামল, বিএনপি নেতা মাহবুবুল রহমান পলাশ, শামছুল আলম, আজিজুর রহমান, অটল, রেজাউল করিম শাহিন।

এদিকে মামলার রায় ঘোষনার পর পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ মিষ্টি বিতরন করে। এবং এই রায়ে তারা খুশি ও সন্তশ বলে জানান। অপরদিকে বিএনপি নেতাকর্মিরা রায় প্রত্যাক্ষাণ করে আদালত প্রঙ্গনে তাৎক্ষনিক বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মিরা ধাওয়া দিলে তারা মিছিল বাদ দিয়ে সটকে পরেন।

এ বিষয়ে পাবনা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তোতা বলেন, এটা একটা রাজনৈতিক মামলা। আমরা আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উচ্চ আদালতে মোকাবেলা করবো।

মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবি পিপি আকতারুজ্জামান মুক্তা বলেন, ‘১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দলীয় কর্মসূচীতে অংশ নিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাবার পথিমথ্যে ঈশ্বরদী স্টেশনে যাত্রাবিরতি কালে বিএনপি’র নেতাকর্মিরা ট্রেনে ও তার কামরায় গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় ওই সময়ে জিআরপি পুলিশের ওসি নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ৭ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর পুলিশ মামলাটি পুনঃতদন্ত করে তদন্ত শেষে নতুন করে ঈশ্বরদীর শীর্ষ স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মিসহ ৫২ জনকে এই মামলায় আসামী করা হয়। মামলাটি দায়ের হওয়ার পরের বছরে এই মামলায় পুলিশ কোন সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। কিন্তু আদাল ওই রিপোর্ট গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তর করেন। পরে সিআইডি তদন্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। মামলা নং এসটি ৪২/৯৭।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই মামলার চার্জশীট ভূক্ত আসামীদের মধ্যে চলতি বছরের ৩০ জুন আদালতে বিএনপি, ছাত্রদল ও যুবদলের ৩০ জন নেতাকর্মী আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। মঙ্গলবার (২ জুলাই) এই মামলার আরও দুই আসামী ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান ওরফে বাবলু এবং বিএনপি নেতা আব্দুল হাকিম টেনু আদালতে আত্মসমর্পন করে।

অন্যদিকে পুলিশ ওইদিন রাতেই এই মামলার আরেকজনকে গ্রেপ্তার করে। জানা যায়, এই মামলায় এ পর্যন্ত ৩৩ জন আসামী জেল হাজতে রয়েছে। পলাতক রয়েছে ১৪ জন এবং মারা গেছে ৫ জন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, আমিনুল ইসলাম, আজাদ হোসেন খোকন, ইসমাইল হোসেন জুয়েল, আলাউদ্দিন বিশ্বাস, সামসুর রহমান সিমু, আনিসুর রহমান সেকম, আক্কেল আলী, রবি, এনাম, কাশেম, কালা বাবু, মামুন-১, মামুন-২, সেলিম, কল্লোল, তুহিন, লিটন, মামুন, লাইজু, আবদুল জব্বার, পলাশ, টেনু, আলমগীর, আবুল কালাম ও ফিরোজুল ইসলাম পায়েল। ১০ বছর সশ্রম কারাদ- আসামীরা হলেন রাজু, ডাব্লু, জনি, রনো, বরকত, চাঁদ আলী, এনামুল কবির মুক্তার, মুকুল, দুলাল, জামরুল, তুহিন বিন সিদ্দিক ও ফজলুর রহমান।

আইনজীবি আখতারুজ্জামান মুক্তা বলেন, ‘চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত এই মামলায় যারা ফাঁসিসহ বিভিন্ন সাজায় দন্ডি হয়েছেন, পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি হাতে না পাওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত বলা সম্ভব হচ্ছে না।’

এসএ/

 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি