ঢাকা, শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪

আইসল্যান্ডে যে কারণে খৎনা নিষিদ্ধের উদ্যোগ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:৫০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

খৎনা নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে আইসল্যান্ডের পার্লামেন্টে একটি বিল আনার পর এ নিয়ে সেখানকার ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। সরকার চাইছে চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া অন্য কারণে খৎনা করা নিষিদ্ধ করতে।

পার্লামেন্টে পেশ করা খসড়া বিলে, কোন শিশুর খৎনা করলে ছয় বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে শিশুদের অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। কিন্তু মুসলিম এবং ইহুদী সংগঠনগুলো এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা বলছে, এটি তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্ব করার করছে।

আইসল্যান্ডের প্রগ্রেসিভ পার্টির একজন এমপি সিলজা ডগ গানারসডটির এই বিলটি এনেছেন। তিনি যুক্তি দিচ্ছেন যে, এটি কারও ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতার বিষয় নয়, বরং এটি শিশুদের অধিকারের বিষয়।

নরডিক ইহুদী কমিউনিটিজ এক বিবৃতি দিয়ে এই বিলটির নিন্দা করেছে। তারা বলেছে, ইহুদী ধর্মবিশ্বাসের সবচেয়ে কেন্দ্রীয় একটি রীতিকে এতে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।

আইসল্যান্ডের ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের ইমাম আহমাদ সিদ্দিক এর সমালোচনা করে বলেন, এটি আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের অংশ। এটাতো আমাদের ধর্মে হাত দেয়ার সামিল। আমি মনে করি এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন।

আইসল্যান্ডের রাজধানী রেইকাভিকের বিশপ অ্যাগনেস এম সিগুরোয়ারডটির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে এরকম বিল পাশ হলে আইসল্যান্ডের মুসলিম এবং ইহুদীদের মনে এমন ধারণা তৈরি হতে পারে এই দেশটিতে তাদের আর জায়গা হবে না।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিচারে খৎনা একেবারেই একটি মামুলি প্রক্রিয়া, কিন্তু এটি একবারে ঝুঁকিমুক্ত নয়। যদি কোন বালক বা পুরুষের লিঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া খুব বেশি আঁটেসাঁটো থাকে, যাকে মেডিক্যাল পরিভাষায় বলে `ফিমোসিস, অথবা কারও লিঙ্গে বা চামড়ায় যদি বার বার সংক্রমণ ঘটে, যার নাম `বালান্টিস, তখন চিকিৎসকরা খৎনার সুপারিশ করেন। তবে এমন প্রমান আছে যে, খৎনা করলে নারী সঙ্গীর কাছ থেকে পুরুষদের এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি কমে। তবে যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে যেসব রোগ ছাড়ায়, খৎনার কারণে সেসব রোগের ঝুঁকি কমে কিনা, সেটা পরিস্কার নয়।

উল্লেখ্য, আইসল্যান্ড হচ্ছে প্রথম ইউরোপীয় দেশ যেখানে খৎনা নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হলো। আইসল্যান্ডে প্রায় দেড় হাজার মুসলিম এবং আড়াইশো ইহুদী আছে। এর আগে ২০০৫ সালে আইসল্যান্ডে এফজিএম (ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন) বা মেয়েদের যৌনাঙ্গ ছেদ নিষিদ্ধ করা হয়।

সূত্র: বিবিসি

একে// এআর


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি